নিজস্ব সংবাদদাতা: খড়গপুর তৃনমূল নেতা বাবলা সেনগুপ্তকে বাঁচিয়ে দিয়েছে তাঁর স্ত্রীই । এমনটা দাবি করলেন স্বয়ং বাবলাই। তিনি বলেছেন, অনিমা না থাকলে ওরা মেরেই ফেলত আমাকে। শুধু বাবলা নয় এই কথা জানিয়েছেন ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরাও। যেমন এক দোকানদার জানিয়েছেন, “জাস্ট অনিমা বৌদিই বাঁচিয়ে দিল বাবলাদাকে। তখন প্রায় রাত পৌনে আটটা। আমি দোকান বন্ধ করতে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ দুম করে একটা শব্দ। আমি ভয়ে ঝাঁপ বন্ধ করলাম। তারপর ঝাঁপের ভেতর থেকেই শুনলাম চিৎকার চেঁচামেচি। ফাঁক দিয়ে দেখলাম বাবলাদাকে টেনে রাস্তার ওপর নিয়ে আসছে ওরা। কেউ একটা ধাক্কা দিল বাবলাদা পড়ে গেল। সেই সময় বাবলদার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল ওরা। ঘুঁষি মারছিল ওরা। এমন সময় বৌদি এসে দাঁড়ালো ওদের মাঝখানে। প্রচন্ড চিৎকার বলল, আমাকে মার তোমরা। এরপরই লোকগুলো চলে যায় বাইক নিয়ে।” এমনটাই জানালেন খড়গপুর ১নম্বর ওয়ার্ডের ওই দোকানদার। যার দোকান বাবলা ওরফে আশিস সেনগুপ্তর অফিসের সামনেই।
সোমবার রাতে নিজেরই দলীয় কার্যালয়ে হামলার স্বীকার হয়েছেন তৃনমূলের জেলা সম্পাদক আশিস সেনগুপ্ত ওরফে বাবলা। তিনি পরিষ্কার অভিযোগ করেছেন তাঁর ওপর হামলা চালিয়েছে তারই দলের অন্যগোষ্ঠীর লোকেরা যারা কিনা খড়গপুর শহরের পরাজিত বিধায়ক প্রদীপ সরকারের অনুগামী। বাবলাও স্বীকার করলেন স্ত্রী অনিমার জন্যই বেঁচে গিয়েছেন তিনি। বাবলা বলেন, “ওরা আমাকে এসেই বলল, প্রদীপ সরকারকে হারিয়েছিস কেন? বললেই মারতে শুরু করল। অফিসে ঢোকার আগেই বোমা মেরেছিল ওরা। ফলে আমাদের যারা ছিল এদিক ওদিক ছড়িয়ে যায়।”
বাবলা বলেন, ” ওদের চিনতে পারি। তৃনমূলের যুব কর্মী এরা। যুব তৃনমূল নেতা মান্টা ওরফে হায়দার আলি ছিল সামনে। ওদের হাতে মেশিন (আগ্নেয়াস্ত্র) ছিল। সিক্সার, নাইন এম.এম। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ‘তোরা আমাকে মারছিস কেন? ওরা কোনও কথা শুনলনা। মারতে মারতে অফিসের বাইরে নিয়ে এল। রাস্তায় ফেলে দিল। ওরা খুন করতে এসেছিল। খুন করেই দিত যদি না অনিমা এসে আমাকে আড়াল করত। অনিমা যতক্ষন আমাকে আটকেছিল ততক্ষনে আশেপাশের লোক চলে আসে। না’হলে ওরা মেরেই ফেলত।”
বাবলার স্ত্রী অনিমা সেনগুপ্ত, সেনগুপ্ত, ১নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর জানিয়েছেন, ” মান্টার নেতৃত্বেই হামলা হয়েছে। হামলাকারীরা ইন্দা এলাকার নয়। ইন্দা এলাকার মানুষ আমার স্বামী বা আমাকে চেনেন। তাই বাইরে থেকে লোক আনা হয়েছিল। আমার স্বামীকে মারতেই এসেছিল ওরা। আমাদের ছেলেরা এদিক ওদিক চলে গেছিল। বোমা পড়ছিল। একসঙ্গে এতজন মানুষ। হয়ত ওরা ঘাবড়ে গেছিল। আমি তখন ওকে আড়াল করার চেষ্টা করছিলাম। লোকজন আসতে ওরা চলে গেল।”
উল্লেখ্য সোমবার রাতে খড়গপুর শহরে রক্তাক্ত হামলা হয় তৃনমূলের পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা সম্পাদক তথা খড়গপুর তৃনমূল নেতা বাবলা ওরফে আশিস সেনগুপ্তর ওপরে। মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয় তাঁর। ঘটনায় তৃনমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই প্রকাশ্যে উঠে এসেছে। সদ্য হয়ে যাওয়া বিধানসভা নির্বাচনে পরাজিত তৃণমূল প্রার্থী প্রদীপ সরকারের অনুগামীরাই এই হামলা চালায় বলে অভিযোগ আক্রান্ত তৃনমূল নেতা বাবলা সেনগুপ্ত ও তাঁর স্ত্রী অনিমার।