নিজস্ব সংবাদদাতা: তিনমাস আগে গুলি করে খুন করা যুবকের পরিবারের ক্ষত শুকোতে না শুকোতে আবার এক মায়ের কোল খালি হয়ে গেল মেদিনীপুর শহরে। ভাইফোঁটার পরেই পুলিশের চাকরিতে যোগ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগে পিটিয়ে মারা হল মাত্র ২০বছরের ওই যুবককে। পুরো ঘটনার মধ্যে গোষ্টি দ্বন্দ্ব ও পরিকল্পিত খুনের অঙ্ক খুঁজে পাচ্ছে পুলিশ। সোমবার ভোর তিনটার ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও তিন যুবক যার মধ্যে একজন খুবই সংকটে। ঘটনায় এখনও অবধি তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
পুলিশ সুত্রে জানা গেছে ঘটনাটি ঘটেছে মেদিনীপুর শহরের কর্ণেলগোলা ও ধর্মার মাঝে। পুলিশ মৃতের নাম রাজু নিমাই। পাড়ার কালীপুজো সেরে ভোরবেলা কয়েকজন মিলে রাজু ও তার কয়েকজন বন্ধু ধর্মার দিকে একটি হোটেলে খাওয়ার জন্য যাচ্ছিল। এমন সময় কর্ণেলগোলা ও ধর্মার মাঝে আবগারি মাঠের সামনে একদল দুষ্কৃতি তাদের ঘিরে লাঠি, রড দিয়ে বেধড়ক মারধর করে অভিযোগ। তাতেই মৃত্যু হয় রাজুর।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
ঘটনায় আহত হয় আরও চারজন। তাদের মধ্যে দেবাঞ্জন দাস কে পাঠানো হয়েছে কলকাতায়। মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রাজকুমার ঠাকুর। হাসপাতাল থেকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে সুরজিৎ দাস এবং বল্টু জানাকে। ঠিক কি কারণে এই খুন তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবং কোতোয়ালি থানার আইসি। পুলিশ ঘটনাস্থলে এলাকার স্থানীয় এক বাড়ি থেকে সংগ্রহ করছে সিসিটিভির ফুটেজ। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে খুনিদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছে পুলিশ। মৃতের বাড়ি শহরেরই হর্ষনদিঘি এলাকায়।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
আগস্ট মাসে মেদিনীপুর শহররের ধর্মা এলাকায় রাজা মজুমদার নামে এক যুবককে গুলি করে। মৃত্যু হয় রাজার। দুই গোষ্ঠীর মধ্যে গোলমালে মৃত্যু হলেও, পরে বিজেপি দাবী করে রাজা তাঁদের দলের কর্মী। এই ঘটনা কি তারই রেশ? ভাবাচ্ছে পুলিশকে কারন রাজা মজুমদারের খুনিরা ছিল মৃত রাজুর এলাকা হর্ষনদিঘিরই বাসিন্দা। অন্যদিকে সোমবার রাজু যেখানে খুন হল সেটা আগষ্ট মাসে খুন হওয়া রাজার এলাকা সংলগ্ন।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
মৃতের পরিবার ও ঘটনার সময় মৃতের সঙ্গে থাকা তার বন্ধুদের অভিযোগ, ‘কালী পুজো সেরে রাত ৩টা নাগাদ শহর থেকে ধর্মার দিকে বাইক নিয়ে চার পাঁচ জন খাবার খেতে হোটেলে যাচ্ছিল। এমন সময় শহরের কর্ণেলগোলা আবগারি মাঠের কাছাকাছি প্রায় পঞ্চাশ ষাট জন তাঁদের পথ আটকে লাঠি লোহার পাইপ দিয়ে বেধড়ক মারতে থাকে। মৃতের বন্ধু প্রশান্ত দোলই বলেন, ‘কেন মারছ জিজ্ঞাসা করলে, কোন উত্তর না দিয়ে মারতে থাকে। কোন কারন ছাড়ায় আমাদের মারতে থাকে। দৌড়ে লোকের ঘরে ঢুকে গেলে, সেখান থেকে টেনে বেরকরে মারতে থাকে। যারা বাঁধা দিতে গেছে তাদেরই মেরেছে। ভয়ে সবাই দৌড়ে পালিয়েছে’।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
ঘটনায় জখম সুরজিত দাস বলেন, ‘কোন কারন ছাড়াই একটি ক্লাবের লোকজন আমাদের এভাবে মেরেছে। যারা মেরেছে তাঁদের কয়েকজনকে আমরা চিনি।’
রাজুর মা সন্ধ্যা বলেন, ”আমার স্বামী পুলিশের হোমগার্ডের কাজ করত। হঠাত তাঁর মৃত্যুর পর ছেলের চাকরির জন্য সমস্ত কাগজ জমা দিয়েছি। ভাইফোঁটার পর ছেলের চাকরি হওয়ার কথা। আমার একমাত্র ছেলেকে ওরা মেরে দিল। যারা আমার ছেলেকে মারল, তাঁদের যেন শাস্তি হয়।”
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
এদিকে শহর জুড়ে পর পর খুন, গুলি চালানোর ঘটনা ঘটতে থাকায় রীতিমত আতঙ্কিত শহরের বাসিন্দারা। যে শহরে রাত ১১টা অবধি মহিলারাই নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়াতেন সেই শহর যেন ক্রমশই অচেনা ঠেকছে বাসিন্দাদের কাছে।