বিশেষ সংবাদদাতা: ভারতের ঘুম ভাঙার আগেই সমুদ্রপৃষ্টের ১১হাজার উচ্চতায় নেমে গেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কাকপক্ষীও টের পায়নি এমনি চূড়ান্ত গোপনীয়তায় গালওয়ান উপত্যকার বরফে তিনি যখন পা রেখেছেন তখন শুক্রবার সকাল ৭টা। জানা গেছে বৃহস্পতিবার সরকারের শীর্ষ স্তরের কয়েকজন হাতেগোনা ব্যক্তিকে নিয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্তের পর এই পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়। যখন সে পরিকল্পনা জনসমক্ষে আসে তখন লেহ’র হিমশীতল মাটি স্পর্শ করেছে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর পা।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রয়েছেন চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ (সিডিএস) জেনারেল বিপিন রাওয়াত এবং ভারতীয় সেনাপ্রধান এম এম নারাভানে।
শুক্রবার লেহ সফরে আসার কথা ছিল জেনারেল রাওয়াতের। তার আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শেষ মুহূর্তের খুঁটিনাটি নিয়ে জেনারেল রাওয়াতের সঙ্গে আলোচনা সারছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয়, লাদাখ সেক্টরে যাবেন মোদী। পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) আগ্রাসন মোকাবিলায় ভারতের তিন বাহিনীর প্রস্তুতি খতিয়ে দেখবেন এবং চারটি সংঘাতের পয়েন্টে উত্তেজনা প্রশমন ও সেনা সরানোর প্রস্তাবিত প্রক্রিয়ার বিশদে বুঝবেন।
সেইমতো শুক্রবার সাতসকালে লেহ পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী। আপাতত লাদাখের নিমুর সীমান্ত লাগোয়া একটি ফরোয়ার্ড পোস্টে রয়েছেন তিনি। ভূপৃষ্ঠের ১১,০০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এলাকাটি। সূত্রের খবর, কোর কমান্ডার এবং উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে দেখা করবেন মোদী। গালওয়ানে আহত জওয়ানদের সঙ্গেও দেখা করতে পারেন তিনি। তারপর সন্ধ্যায় তিনি দিল্লি ফিরে যাবেন বলে সূত্রের খবর।
গত দু’মাস ধরে পূর্ব লাদাখে চিনের সঙ্গে সীমান্তে অচলাবস্থা চলছে। ১৫ জুন গালওয়ানে সংঘর্ষে মৃত ২০ জওয়ান। এর মধ্যে সেনা বাহিনীর মনোবল বাড়াতে লেহ-তে এলেন মোদী এমনটাই মনে করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী এদিন জানিয়েছেন যে তিনি লেহ-র কাছে নিমুতে যাবেন যেখানে গালওয়ান সংঘর্ষে আহত জওয়ানরা ভর্তি আছেন। এদিন নিমুতে সেনাবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে আলাপচারিতার ছবিও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন প্রধানমন্ত্রী। ছবিতে দেখা যাচ্ছে যে চিফ অফ ডিফেন্স সার্ভিস বিপিন রাওয়াত ও সেনাপ্রধান এমএন নারভানের সঙ্গে বসে আছেন মোদী।
সমুদ্রপৃষ্ট থেকে প্রায় ১১ হাজার ফিট ওপরে অবস্থিত লেহ সংলগ্ন নিমু। সিন্ধু নদীর ধারে অবস্থিত এই অঞ্চল। পুরো জায়গাটি জানস্কার পাহাড় ঘেরা। সেখানেই ভারতীয় সেনার শীর্ষ আধিকারিক দের সঙ্গে এক প্রস্থ আলোচনাও সেরে নিয়েছেন তিনি। পাকিস্তানের পর চিনের সঙ্গেও ভারতের সম্পর্ক স্থায়ী বৈরীতার পথেই এগোয় কিনা সেটাই এখন দেখার।