Homeএখন খবরঅত্রিকা আর একান্তিকার জন্মদিনে জঙ্গলমহলের অধিবাসীদের স্বনির্ভর করার উদ্যোগ দুই দম্পত্তির! পাশে...

অত্রিকা আর একান্তিকার জন্মদিনে জঙ্গলমহলের অধিবাসীদের স্বনির্ভর করার উদ্যোগ দুই দম্পত্তির! পাশে দাঁড়ালো ছাত্রসমাজ

নিজস্ব সংবাদদাতা: একটু ভিন্ন ভাবনায় নিজেদের দুই কন্যারত্নের জন্মদিন উদযাপন করলেন দুই মেদিনীপুরের দুই দম্পত্তি। লকডাউনে উপার্জন হীন কয়েকটি পরিবারকে স্বনির্ভর হয়ে ওঠার লক্ষ্যে সেলাই মেশিন, মাছ ধরার জাল প্রদান করলেন তাঁরা। এই দুই দম্পত্তি হলেন সম্প্রতি সমাজকর্মী শিক্ষক অনিমেষ ও কুহেলি প্রামানিক এবং পরেশচন্দ্র প্রধান ও সোমা মাইতি প্রধান। সম্প্রতি জন্মদিন পালিত হয়েছে মেদিনীপুরের বাসিন্দা অনিমেষ ও কুহেলির কন্যা অত্রিকা এবং হলদিয়ার বাসিন্দা, বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কর্মরত পরেশ ও সোমার কন্যা একান্তিকার। দম্পত্তি যুগল সেই জন্মদিনকে স্মরণীয় করতে মেদিনীপুর ছাত্রসমাজ ও পশ্চিমবঙ্গ লোধা শবর সমাজের সাহায্যে এই পরিকল্পনা নিয়েছিল।

লকডাউনে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন মূলতঃ দিনমজুরি ভিত্তিক পরিবারগুলি। দফায় দফায় উপার্জন বন্ধ হয়েছে তাঁদের। সেরকমই কয়েকটি পরিবারকে তাঁদের আয়ের পারদর্শীতার সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই প্রদান করা হয়েছে ওই সেলাই মেশিন ও মাছ ধরার জাল যাতে বাড়িতে বসে অথবা স্থানীয় জলাশয় থেকে মাছ ধরে তা বাজার জাত করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারেন তাঁরা। শুক্রবার ঝাড়গ্ৰামে জেলার জামবনী,লালগড় ও ঝাড়গ্ৰামের লোধা শবর দের জীবিকা নির্বাহের জন্য তিনজন কে সেলাই মেসিন ও চারজন শবর মৎস্যজীবী কে মাছধরার জাল তুলে দেওয়া হয়।

ঝাড়গ্ৰাম পুখুরিয়ার বেকার যুবক ও লোধা শবর সমাজের ঝাড়গ্ৰাম জেলা সম্পাদক তারাপদ মল্লিক,জামবনী ব্লকের লোধা শবর সমাজের সম্পাদক কার্তিক শবর,লালগড় ব্লকের লোধা শবর সমাজের সভাপতি উত্তম সর্দার কে স্বনির্ভর হতে সেলাই মেসিন তুলে দেওয়া হয়। অন্যদিকে জামবনী ব্লকের আখুয়াবাঁধা গ্ৰামের শবর মৎস্যজীবী সুরেন শবর,নারায়ন শবর,পরায়ন শবর ও ঝুমারী শবর কে মাছ ধরার জাল তুলে দেওয়া হয়। এদিন অনিমেষ প্রামাণিক স্বয়ং ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পশ্চিম বঙ্গ লোধা শবর সমাজের কার্যকরী সভাপতি ঝর্ণা আচার্য্য ও মেদিনীপুর ছাত্র সমাজ’সংগঠনের কোষাধ্যক্ষ কৌশিক কঁচ,করবী বিশ্বাস,অরিন্দম চট্টরাজ প্রমুখরা।

মেদিনীপুর ছাত্রসমাজ নামের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি এই প্রয়াসটি শুরু করেছে গত দেড়বছর ধরে। বিশেষ করে লকডাউন সময়কালে প্রান্তিক এলাকার মানুষকে স্বনির্ভর করার লক্ষ্যে স্থানীয় আয়ের উৎসভিত্তিক সরঞ্জাম মানুষকে প্রদান করেছে। যেমন পাথরের সামগ্রী তৈরি করেন এমন কিছু মানুষকে সেই উপযোগী যন্ত্রপাতি পেতে সাহায্য করা ইত্যাদি। এই কাজটি করতে তাঁরা খুঁজে বের করেন বিশেষ দিন পালন করতে চলেছেন এমন দম্পত্তি বা পরিবারকে। তারপর তাঁদের রাজি করানো যে অন্ততঃ একটা বছর চিরাচরিত অনুষ্ঠানের বাইরে গিয়ে অন্য ভাবনায় ভাবা। এই ভাবে বিয়ের প্রীতিভোজ থেকে বিবাহবার্ষিকী, অন্নপ্রাশন থেকে জন্মদিন, শ্রাদ্ধ কিংবা স্মরণানুষ্ঠানকে তাঁরা পরিণত করেছেন এইধরনের উদ্যোগে।

ছাত্রসমাজের কোষাধ্যক্ষ কৌশিক কঁচ জানিয়েছেন,”ওই সব প্রান্তিক এলাকায় নিবিড় সামাজিক উদ্যোগ নিয়ে থাকেন এমন ব্যক্তি বা সংগঠনগুলির সঙ্গে আলোচনা করেই প্রাপকের অগ্রাধিকার ভিত্তিক একটি তালিকা তৈরি করা হয় তারপর সাহায্য করতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের ক্ষমতা অনুযায়ী সেই তালিকা ধরে সাহায্য প্রদান করা হয়। সাহায্যের খোঁজ এবং প্রাপকের তালিকা সারা বছর ধরেই প্রক্রিয়া মেনে চলতে থাকে। এই তালিকা নির্বাচনে আমাদের সাহায্য করেন বিশিষ্ট সমাজসেবী ঝরনা আচার্য্য। আমরা ছাত্র সমাজের পক্ষ থেকে দুই দম্পত্তির পাশাপাশি ঝরনাদিকেও ধন্যবাদ জানাই।”

RELATED ARTICLES

Most Popular