নিজস্ব সংবাদদাতা: এবার সরাসরি হেড অফিসেই কামান দেগে দিল করোনা দস্যু। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের ভাইরোলজি ল্যাব অর্থাৎ সমগ্র পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার নমুনা পরীক্ষা যেখানে করা হত সেই গোল্ড স্ট্যান্ডার্ড আরটি/পিসিআর ল্যাবেরই চার কর্মী করোনা আক্রান্ত হয়ে পড়ায় আপাতত পরীক্ষা বন্ধ করে দেওয়া হল বলে জানিয়েছেন মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে ওই ল্যাবের একজন ল্যাবরেটরি টেকনিক্যাল আ্যসিসটেন্ট, একজন ডাটা এন্ট্রি অপারেটার ও ২জন স্বেচ্ছাসেবক আক্রান্ত হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে পুরো ল্যাবকেই জীবাণুমুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ল্যাব কর্তৃপক্ষ। ফলে অন্ততঃ ২দিনের জন্য কোনো পরীক্ষা করা হবেনা।
মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডক্টর পঞ্চানন কুন্ডু জানিয়েছেন,”এই দু’দিন আমাদের ল্যাবে পরীক্ষা না হলেও জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা নমুনা গুলি আমরা কলকাতায় পাঠিয়ে দেব সেখানকার আইসিএমআর অনুমোদিত ল্যাবগুলিতে পরীক্ষা করা হবে। আমাদের ল্যাব জীবাণুমুক্ত করার পর ফের পুরোদমে কাজ শুরু করবে।” যদিও মেদিনীপুরের পরিবর্তে কলকাতায় পরীক্ষা হলে সামান্য অসুবিধার সম্মুখীন হতে হবে জেলাকে। একটু হলেও সময় লাগবে পরীক্ষায়। কলকাতার ল্যাবগুলি নিজেদের দৈনন্দিন চলতি চাহিদা মেটানোর পরই এই জেলার পরীক্ষায় হাত দেবে। ফলে রিপোর্ট আসতে দেরি হবে এবং সেই অনুযায়ী আক্রান্তদের করোনা হাসপাতাল কিংবা সেফ হোমে স্থানান্তর প্রক্রিয়া শ্লথ হয়ে পড়বে।
উল্লেখ্য করোনা পরিস্থিতির আগাম বাড়বাড়ন্ত অনুমান করেই এপ্রিলের গোড়ায় দক্ষিণবঙ্গের মেদিনীপুর ও মুর্শিদাবাদে দুটি ল্যাব চালুর অনুমোদন দেয় আইসিএমআর। তার আগে কলকাতাতেই করোনা পরীক্ষার নমুনা পাঠানো হত। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে ল্যাব চালু হওয়ার পর পশ্চিম মেদিনীপুর সহ ৫টি জেলার নমুনা পরীক্ষা এখানেই করা হত। এরপর সব জেলাতেই নিজস্ব পরিকাঠামো তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে পশ্চিম মেদিনীপুরের পরিকাঠামো আরও বাড়িয়ে নমুনা সংগ্ৰহ কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। সারা জেলার ২১টি কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন সর্বোচ্চ ১০০০ অবধি নমুনা এসে পৌঁছায় এই কেন্দ্রে যার মধ্যে দিনে প্রায়৮০০ নমুনা পরীক্ষা করার ক্ষমতায় রয়েছে ল্যাব।
আগস্টের ৬তারিখ অবধি এই ল্যাবে ৫৪ হাজার ৬৩০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে যা কিনা বর্তমানে প্রায় ৬০হাজার স্পর্শ করেছে। এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বৃহৎ ল্যাব অনিবার্য কারনবশত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কিছুটা হলেও সমস্যায় জেলা। যদিও দুদিনের মধ্যেই ল্যাব চালু হচ্ছেই বলে জানিয়েছেন জেলা স্বাস্থ্য কর্তারা।