নিজস্ব সংবাদাতা: পুজোর বাজার যত জমছে ততই বাড়ছে করোনার প্রকোপ। বেশ কয়েকদিন স্থিমিত থাকার পর ফের করোনার দাপট বাড়ছে শহর মেদিনীপুরে। যেন পুজোর বাজারে ধামাকা সেল দিচ্ছে করোনা! অক্টোবর মাসের শুরু থেকে মেদিনীপুর শহরে করোনার দাপট কমছিল। আরটি/পিসিআর পরীক্ষায় সর্বোচ্চ ১০ থেকে ৫ মধ্যে ছিল আক্রান্তের সংখ্যা। গত ৫ই অক্টোবর শহরে মাত্র ৩টি পজিটিভ কেস পাওয়া যায় ফলে একটু হলেও নিশ্চিন্তে ছিলেন শহরবাসী কিন্তু ১০তারিখ এবং ১১তারিখের আরটি/পিসিআর রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে ফের চড়ছে করোনার গ্রাফ।
১০তারিখ মেদিনীপুর শহরে ১৬ জন এবং ১১ তারিখে ১০ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন।
শহরের করোনা মানচিত্রের এই নতুন তালিকায় চোখ রাখলে দেখা যাবে সর্বাধিক আক্রান্ত মিলেছে অশোক নগর এলাকায়। দুদিনে ৪জন আক্রান্ত মিলেছে শুধু এই এলাকায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬৫, ৫৬, ৫৪ বছরের তিন বয়স্ক এবং ৪০ বছরের এক যুবক। অশোক নগরের পরেই রয়েছে সুকান্তপল্লী যেখানে আক্রান্তের সংখ্যা গত দুদিনে ৩জন। এখানে ৬৪ ও ৫৩ বছরের দম্পত্তি সহ আক্রান্ত ৩৯ বছরের এক যুবকও। ১১ তারিখের রিপোর্ট মোতাবেক কুইকোটাতে আক্রান্ত ৩৫ ও ৩১ বছরের যুবক যুবতী।
বাদ বাকি আক্রান্তরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন শহরের প্রায় সর্বত্রই মেদিনীপুর শহরের বাসিন্দা অথচ নির্দিষ্ট ঠিকানা উল্লেখ করা হয়নি এমন ৮ জন গত ২দিনে আক্রান্ত হয়েছেন। এরপর শহরের পশ্চিমে স্টেশন রোড ও বিধাননগর থেকে ৫৬ বছরের প্রৌঢ়া ও ৪৬ বছরের এক ব্যক্তির আক্রান্ত হওয়ার সংবাদ মিলেছে। শহরের মধ্যবর্তী অংশ হাতারমাঠ, হবিবপুর, গোলকুয়া চকে যথাক্রমে ৩৪ বছরের গৃহবধূ, ৫৭বছরের প্রৌঢ় এবং ৩৭ বছরের গৃহবধূ আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া জেলপুকুর পাড়ে ২৬ বছরের যুবতী, চিড়িমারসাই এলাকায় ৩৭ বছরের যুবক, রাজা রামমোহন নগর এবং ৫৯ বছরের দুই বৃদ্ধ আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
করোনা সংক্রান্ত ১১তারিখের বড় খবরটি অবশ্য কোতোয়ালি থানা লাগোয়া কেশপুরের। আক্রান্ত হয়েছেন কেশপুরের বিধায়ক শিউলি সাহা। প্রথম দফায় অমীমাংসিত ফলাফল আসার পর রবিবার করোনা পজিটিভ নিশ্চিত হয়েছে তাঁর। তাঁর সঙ্গে আক্রান্ত হয়েছেন তাঁর গাড়ির চালক ও দেহরক্ষী। আপাতত কলকাতাতেই হোম আইসোলেশনে রয়েছেন বিধায়ক। বিধায়ক জানিয়েছেন, কয়েকদিন ধরে সামান্য জ্বর অনুভূত হচ্ছিল তাঁর। সে কারনেই আয়ুসে নমুনা দিয়েছিলেন তিনি। প্রথমে অমীমাংসিত আসে পরে পজিটিভ এসেছে। আপাতত ভাল আছেন তিনি।
এদিকে মনে করা হচ্ছে আক্রান্ত থাকা কালীনই তিনি মিছিল ও মিটিং করেছেন একাধিক যার মধ্যে একটি সাংবাদিক সম্মেলনে তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতি সহ গুরুত্বপূর্ণ একাধিক নেতা। কেশপুরের নেতা কর্মীদের নিয়েও বিধায়ক একটি মিছিল করেছেন সম্প্রতি। তাঁর থেকে সংক্রমন ছড়িয়েছে কিনা সেটাই এখন মাথা ব্যথা কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে তৃণমূল জেলা নেতৃত্বের। বিধায়ক নিজে বলেছেন, “যাঁরা আমার সংস্পর্ষে এসেছেন তাঁদের বলেছি সাবধানে থাকতে এবং পরীক্ষা করিয়ে নিতে।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি জানিয়েছেন, “বিধায়কের সঙ্গে কয়েকটি সভায় ছিলাম ঠিকই কিন্তু আমি সামাজিক দূরত্ব মেনেই চলি। ফলে নিজে খুব বেশি আশঙ্কা করছিনা তবে পার্টির নেতা কর্মীদের প্রতি আশঙ্কা থেকেই যায়। যারা মনে করছেন বিধায়কের কাছাকাছি ছিলেন আমি তাঁদের বলব পরীক্ষা করিয়ে নিন।”