নিজস্ব সংবাদদাতা: আমফানের ক্ষতিপূরনের টাকা প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবর্তে ঢুকেছে শাসকদলের নেতা থেকে আত্মীয়দের ঘরে। লুটের মাত্রা এতটাই লাগামছাড়া ও দৃষ্টিকটু যে খোদ মুখ্যমন্ত্রীকে সরব হতে হয়েছে। পুলিশকে মমতা ব্যানার্জী বলেছেন অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নিতে। হাতে নাতে চুরি করে ধরা পড়ায় এক পঞ্চায়েত প্রধানককে বহিস্কার করতে বাধ্য হয়েছে দল। এমন কি কয়েকজন বিডিওকে শোকজ করা হয়েছে। কিন্তু তাতেও লাগাম পড়েনি চুরিতে। আর তাতেই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে জনরোষ। সেই জনরোষে পড়েই আমফানে ক্ষতিপূরণের টাকা তছরুপ করেছেন বলে বিডিও এবং পুলিশের কান ধরে স্বীকার করে নিলেন দক্ষিন ২৪ পরগনা জেলার মথুরাপুরের তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত নগেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের এক সদস্য।
স্থানীয়দের দাবি, আমফানের ক্ষতিপূরণের তালিকায় অনৈতিকভাবে পরিবারের সদস্যদের নাম ঢুকিয়েছিলেন ওই তৃণমূল নেতা। অথচ যাঁরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন, তাঁদের অনেকেই টাকা পাননি। তা নিয়ে মঙ্গলবার ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয়রা। স্বপনের বাইকে ভাঙচুর চালিয়ে তাঁকে স্থানীয় একটি স্কুলের মাঠে আটকে রাখা হয়। এলাকাবাসীর দাবি অনুযায়ী ঘটনাস্থলে যান মথরাপুর-২-এর বিডিও এবং রায়দিঘি থানার পুলিশ।
তাঁদের সামনেই কান ধরে দোষ কবুল করেন তৃণমূল নেতা। বলেন, ‘তালিকায় ত্রুটি থাকতে পারে। ক্ষমা করুন।’ঘটনায় উপযুক্ত তদন্তের পাশাপাশি প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা ফেরতের আশ্বাস দিয়েছেন বিডিও। তৃণমূল নেতাকে তিনি বলেন, ‘লজ্জা লাগা দরকার।’ ভুয়ো প্রাপকদের নামগুলি চিহ্নিত করে তৃণমূল নেতাকে একটি তালিকা দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন।
গোটা ঘটনায় লজ্জ্বায় পড়ে গেছে তৃনমূল দল। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নে একাধিকবার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ত্রাণের টাকা নিয়ে দুর্নীতি হলে কাউকে বেয়াত করা হবে না। তা সত্ত্বেও তাঁর দলের নেতারা যেভাবে একের পর এক ত্রাণ দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ছেন, তাতে দলের উপর তৃণমূল সুপ্রিমোর কতটা লাগাম রয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। অনেকেই বলছেন এক লপ্তে ২০হাজার টাকার লোভ সামলাতেই পারছেনা তৃনমূল নেতারা।