অশ্লেষা চৌধুরী: তিনদিনের জন্য উত্তরবঙ্গ সফরে আজ সোমবার জলপাইগুড়ি এসে পৌঁছালেন মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার দুপুরে বাগডোগরা থেকে হেলিকপ্টারে জলপাইগুড়িতে আসেন মুখ্যমন্ত্রী । এদিন জলপাইগুড়ি পুলিশ লাইনের মাঠে ৩.৪৫ নাগাদ তাঁর হেলিকপ্টার অবতরন করে। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে পুলিশ লাইন চত্বর।
জানা গিয়েছে, আগামীকাল মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মীসভা রয়েছে শহরের কলেজপাড়ার এবিপিসি মাঠে। আর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাংগঠনিক সভাকে ঘিরে চূড়ান্ত পর্যায়ের প্রস্তুতি লক্ষ্য করা গেল সোমবার। এদিন এবিপিসি ময়দানে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসনিক আধিকারিকরা। পাশাপাশি এদিন আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তীও মাঠে উপস্থিত হন। মঙ্গলবারের পর বুধবার মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন কোচবিহারে। সেখানে রাসমেলা ময়দানে তাঁর একটি জনসভা রয়েছে।
জলপাইগুড়ি শহরের কলেজ পাড়ার এবিপিসি মাঠে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা মঙ্গলবার, আর আজ তার চূড়ান্ত পর্বের প্রস্তুতি চলছে জোর কদমে। মাঠে মোট তিনটি মঞ্চ করা হয়েছে। সূত্রের খবর মাঝের মঞ্চের থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী এবং দু’পাশে মঞ্চে থাকবেন আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ির নেতারা। মাঠের পাশের আইটিআই কলেজের বসার জায়গা থাকছে। তারপাশে আনন্দচন্দ্র কলেজের মাঠে করা হয়েছে হেলিকপ্টারের নামার ব্যবস্থা। এদিকে নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে সভা মঞ্চের বসেছে পুলিশ ক্যাম্প।
পুলিশ সুত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী শহরে আসতেই কয়েকটি রাস্তা ওয়ানওয়ে ও বিকল্প রাস্তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সভাস্থল ও পুলিশ লাইনে হেলিকপ্টার ওঠা নামার ব্যবস্থা থাকছে। শহরের একাধিক রাস্তায় চলছে নাকা তল্লাশি। এদিন সভাস্থল খতিয়ে দেখেন আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক তথা তৃণমূল নেতা সৌরভ চক্রবর্তী। তিনি বলেন,” দিদির কাছ থেকে আমরা নতুন বার্তা নিশ্চই পাবো। বঙ্গধ্বনি আর দুয়ারে সরকারে প্রচুর মানুষ সামিল হচ্ছেন। বিরোধীরা অনেক কথাই চলবে। তবে সভা স্থলের মাঠে জায়গা ভরে যাবে সাধারণ মানুষে।“
এছাড়াও তিনদিন ধরে উত্তরবঙ্গ জুড়ে একাধিক রাজনৈতিক জনসভা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। পাশাপাশি গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠক করারও কথা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কাছে এই সফর যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ গত লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গে যথেষ্ট খারাপ ফল হয়েছে ঘাসফুল শিবিরের। সেই জায়গা থেকে বিধানসভা নির্বাচনে ঘুরে দাঁড়ানোর চ্যালেঞ্জ শাসকদলের কাছে। উত্তরবঙ্গের বর্তমান পরিস্থিতিতে তৃণমূল যথেষ্ট চিন্তিত। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গ নিয়ে যথেষ্ট আশাবাদী রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। সেই জায়গা থেকে দলের কর্মী থেকে নেতাদের তরতাজা করতে এই সফরের যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে বৈকি! তাছাড়া কয়েকদিন আগেই তৃণমূল ছেড়ে পদ্ম শিবিরে যোগদান করেছেন তৃণমূলের প্রভাবশালী নেতা তথা কোচবিহার দক্ষিণের বিধায়ক মিহির গোস্বামী। গুঞ্জন আগামী দিনে আরও একাধিক নেতা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন এমনটাই দাবী বিজেপি নেতাদের।
তার ওপর আবার মুখ্যমন্ত্রীর উত্তরবঙ্গ সফরের আগেই এখানকার বিভিন্ন জেলায় বেড়েছে দুই দাদার অনুগামীদের দৌরাত্ম। এই সকল উত্তপ্ত পরিস্থিতির মাঝে উত্তরবঙ্গের ভিত শক্ত করতেই মমতার এই সফর বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও ইতিমধ্যেই মমতার সরকারের দুয়ারে সরকার ও বঙ্গধ্বনি কর্মসূচি সাড়া ফেলে দিয়েছে সাড়া বঙ্গজুড়ে। উত্তরবঙ্গেও সাড়া মিলছে ভালোই। এরই মাঝে মুখ্যমন্ত্রীর এই সফর কতটা কার্যকরী হয় এবং দলীয় কর্মীদের তিনি কী বার্তা দেন, সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।