নিজস্ব সংবাদদাতা: নন্দীগ্রাম থেকে বিধানসভা আসনে লড়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলেন মমতা ব্যানার্জী। সোমবার নন্দীগ্রামের জনসভা থেকে এমনই ঘোষণা করলেন মূখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। শুভেন্দু অধিকারীর এই আসন থেকে মূখ্যমন্ত্রীর দাঁড়ানোর ঘোষণা যেমন তৃনমূল কর্মীদের উদীপ্ত করেছে তেমনই খোঁচা মারতে ছাড়েননি বিরোধীরা। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী জানিয়েছেন ভবানীপুরে জেতার আশা দেখছেননা বলেই নন্দীগ্রামে পালাচ্ছেন মূখ্যমন্ত্রী। অন্যদিকে বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য কটাক্ষ করে বলেছেন, উনি তো ২৯৪টি কেন্দ্রেই নিজেকে প্রার্থী বলে ঘোষণা করে থাকেন। আবার নতুন করে নন্দীগ্রাম বলার দরকার কী?
সোমবার নন্দীগ্রামের তেখালি বাজার মাঠ থেকে সকলকে চমকে দিয়ে সেই ঘোষণাই করলেন তিনি। নন্দীগ্রাম আমার ‘লাকি জায়গা’ জানিয়ে দিয়ে মমতা প্রথমে বলেন, ‘আমিই যদি নন্দীগ্রামে দাঁড়াই কেমন হয়? ভাবছিলাম। কথার কথা। একটু বললাম, একটু ইচ্ছে হল। একটু গ্রামীণ জায়গা। একটু আমার ভালবাসার জায়গা...।’
মূখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৬–র নির্বাচনের আগে আমি নন্দীগ্রাম থেকেই ইলেকশন ঘোষণা করেছিলাম। আমি আজও এসেছি নন্দীগ্রামে। নন্দীগ্রাম থেকে ২০২১-য়েও তৃণমূল জিতবে। এবং নন্দীগ্রাম থেকেই শুরু হল জেতার পালা। তৃণমূল এই নির্বাচনে জয়লাভ করবে। প্রতিটি আসনে জিতবে তৃণমূল।’
তাঁকে যাতে নন্দীগ্রামে প্রার্থী করা হয় সেই আবেদনও এদিন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি সুব্রত বক্সির কাছে করেন মমতা। তিনি বলেন, ‘আমি সুব্রত বক্সিকে অনুরোধ করব, এটা আমার ইচ্ছে হয়েছে। আমার মনবাসনা। ভবানীপুরকে আমি অবজ্ঞা করছি না। ভবানীপুরেও আমি ভাল প্রার্থী দেব। বক্সিকে বলব, নন্দীগ্রামেও যেন আমার নামটা থাকে।’ এরপরই সুব্রত বক্সি মঞ্চ থেকেই ঘোষণা করেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ আমাদের সকলের সামনে যে ঘোষণা করেছেন তা আমরা দলের পক্ষ থেকে গ্রহণ করলাম। নিশ্চিতভাবে আপনাদের সামনে তাঁকে উপস্থিত করে আমরা বুঝিয়ে দিতে চাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রামের মানুষকে ভোলেননি।’
মূখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণায় উচ্ছসিত নেতা কর্মীরা করতালিতে ফেটে পড়েন। বর্ষীয়ান তৃনমূল সাংসদ সৌগত রায় এতটাই উদীপ্ত হয়ে ওঠেন যে নিজের বক্তব্য রাখার সময় বলেন, “এবার শুভেন্দু অধিকারী বলুক যে সে নন্দীগ্রাম থেকে প্রার্থী হবে তো? না পালাবেন!’ এরপরই তাঁর চ্যালেঞ্জ “শুভেন্দু বাপের ব্যাটা হলে নন্দীগ্রাম থেকে দাঁড়িয়ে দেখাক।”
এই প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য জানান, ‘আর কত জায়গায় প্রার্থী হবেন তিনি? তিনি বলেন, তিনি পাহাড়ে প্রার্থী, জঙ্গলমহলে প্রার্থী, ২৯৪টি আসনে তিনিই প্রার্থী। এই সব বলে তৃনমূল কর্মীদের চাঙ্গা করতে চাইছেন বটে কিন্তু এবার আর পরিবর্তনের পরিবর্তনকে রোখা যাবেনা। অপেক্ষা করুন এবার ভবানীপুরেও চমক থাকছে তাঁর জন্য।”
সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ‘ মমতা ব্যানার্জী এত তাড়াতাড়ি পরাজয় স্বীকার করে নিলেন কেন? উনি বুঝতে পেরে গেছেন যে ভবানীপুর থেকে জিততে পারবেননা তাই পালাচ্ছেন নন্দীগ্রামে। কিন্তু সেখানেও রেহাই পাবেন কী তিনি?’