Homeরাজ্যউত্তরবঙ্গপ্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা তছরূপের অভিযোগ শাসকদলের নেতার বিরুদ্ধে

প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা তছরূপের অভিযোগ শাসকদলের নেতার বিরুদ্ধে

ওয়েব ডেস্ক: কয়েকদিন আগেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন করোনা ত্রাণ কিংবা ঘূর্ণিঝড় আমফানের ক্ষতিপূরণ সাধারণ মানুষ না পান সেক্ষেত্রে সরাসরি পুলিশকে চিঠি লেখার ঘোষণা করা হয়। এই পরিস্থিতিতে গত শুক্রবারই আমফানের ক্ষতিপূরণের টাকা তছরূপের অভিযোগে হুগলির গরলগাছা পঞ্চায়েত প্রধানকে দল থেকে বহিষ্কার করে তৃণমূল। আমফানের পর এবার প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা সরানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূলের এক নেতার বিরুদ্ধে। তিনি মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লকের তুলসিহাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের নয়াটোলার পঞ্চায়েত উপ-প্রধানের স্বামী আব্বাস আলি। তাঁর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই বিডিওর দ্বারস্থ হয়েছেন আনসারুল নামে এক ব্যক্তি।

আনসারুলের অভিযোগ, গত বছর তাঁর নাম প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার তালিকায় রয়েছে বলে জানান স্থানীয় পঞ্চায়েত উপ-প্রধানের স্বামী আব্বাস আলি৷ এরপর তার কাছ থেকে ব্যাঙ্কের নথি ও অন্যান্য কাগজপত্রও নেওয়া হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন কেটে গেলেও টাকা ঢোকেনি৷ এদিকে আব্বাস আলির ঘনিষ্ঠ গ্রামেরই অন্য এক বাসিন্দার অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে গিয়েছে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা। এরপর শাসকদলের ওই নেতার সাথে বারংবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার সাথে দেখা হয়নি। এমন স্থানীয় পঞ্চায়েতে গিয়েও কোনো লাভ হয়নি তার৷ এরপরই ওই ব্যক্তি বিডিও ও মহকুমা শাসকের দ্বারস্থ হয়ে তৃণমূলের উপ-প্রধানের স্বামীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

যদিও এই বিষয়ে তৃণমূল নেতা আব্বাস আলি বলেন, “ওই এলাকার পূর্ববর্তী পঞ্চায়েত সদস্যের ভুলে একজনের টাকা আরেকজনের অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে। জিনিসটা সনাক্ত হয়েছে। দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে।” এবিষয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের বিডিও জানান, “অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে। উপযুক্ত ব্যক্তিই টাকা পাবেন।”

প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই গরলগাছা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মনোজ সিং এর স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে আমফানের ক্ষতিপূরণ বাবদ ২০ হাজার টাকা ঢুকেছে। কিন্তু পঞ্চায়েত প্রধানের পাকা বাড়ির কোনো অংশে ক্ষয়ক্ষতির চিহ্নমাত্র নেই। এদিকে ঘূর্ণিঝড়ে ভেঙে গিয়েছে এলাকার বহু বাড়ি। অথচ তাদের নাম তালিকাতেই নেই। একথা কানে আসতেই স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। এরপরই তড়িঘড়ি শুক্রবার হুগলির গরলগাছা পঞ্চায়েতের প্রধান মনোজ সিংকে দল থেকে বহিষ্কারের নির্দেশ দেন দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা টাকা না পেলেও টাকা পেয়েছেন পঞ্চায়েত প্রধানের স্ত্রী। যদিও এবিষয়ে পঞ্চায়েত প্রধান জানান, তার বাড়ির ক্ষতি না হলেও ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাঁর ধূপকাঠির কারখানা।

এদিকে অভিযোগ খতিয়ে দেখতে শুক্রবারই তৃণমূলের হুগলি জেলা সভাপতি দিলীপ সিংকে তলব করেন দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। যাবতীয় নথি নিয়ে দলের মহাসচিবের কাছে যান তিনি। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা খতিয়ে দেখা যায় তালিকায় থাকা নামের ১০২ জনের মধ্যে ৯২ জনই ভুয়ো। আদপে তাদের কোনো ক্ষয়ক্ষতিই হয়নি। অথচ ততক্ষণে পঞ্চায়েত প্রধানের স্ত্রী সহ ১৭ জন টাকা পেয়ে গিয়েছেন। এরপরই পার্থ চট্টোপাধ্যায় মনোজ সিংকে দল থেকে বহিষ্কারের নির্দেশ দেন। এবিষয়ে গরলগাছা পঞ্চায়েত প্রধান মনোজ সিং অবশ্য সাফাই দিয়েছেন তাড়াহুড়ো করে তালিকা তৈরি করতে গিয়ে ভুল হয়ে গিয়েছে। কিন্তু সে কথা মানতে নারাজ শাসকদল। দলের ভাবমূর্তি বজায় রাখতে শুক্রবারই ক্ষতিপূরণের টাকা কারচুপির অভিযোগে মনোজ সিংকে দল থেকে বের করে দেওয়া হয়।

এর আগেও বহুবার রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা তছরূপের অভিযোগ উঠেছে শাসকদলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। কিন্তু এবার সরাসরি কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা সরানোর অভিযোগে প্রশ্নের মুখে শাসকদল।

RELATED ARTICLES

Most Popular