সংবাদদাতা: মুঠোফোনে নিজেকে বন্দি করার সেই নেশা যা কিনা কখনও কখনও নিয়ে যায় মরনখাদের অতলে সেই মারন নেশায় শুক্রবার মহানন্দায় তলিয়ে গেল ৩ বন্ধু। একজনকে কোনোমতে উদ্ধার করা সম্ভব হলেও দীর্ঘক্ষণ মেলেনি বাকি ২জনের। শেষ খবর পাওয়া অবধি অবশ্য ২টি দেহই উদ্ধার হয়েছে মৃত অবস্থায়।
শুক্রবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের পুখুরিয়া থানার মাগুরায়। নিহত ২ যুবকের নাম মৃত বিবেক রোশন ও আসিফ হোসেন। দুজনেরই বয়স ২২ বছর। আহত আনোয়ার শেখের বয়স মাত্র ১৮। এঁরা স্থানীয় কুতুবগঞ্জের বাসিন্দা। পুলিশ জানিয়েছে, দুপুরে তিন বন্ধু স্নান করার জন্য পুখুরিয়া থানার মাগুড়ায় মহানন্দার খাড়ির স্লুইসগেটে যায়। সেখান থেকে সামান্য গভীরতায় তিনজনে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে মগ্ন হয়ে সেলফি তুলছিল তারা।
ওই জায়গার একটু পেছনেই ছিল জলের জোরালো স্রোত যা পাক খেয়ে খেয়ে সাদা ফেনা তুলে চলে যাচ্ছিল। সেই স্রোতকে পেছনে রেখে একে অপরের সঙ্গে জড়িয়ে সেলফি তোলার সময় কোনও একজনের পা সরে যাওয়ায় তিনজনই হুড়মুড়িয়ে পড়ে যায় মূল স্রোতে। হঠাৎই ঘটনাটি ঘটায় জলের তোড়ে তলিয়ে যায় তিনজন। স্থানীয় গ্রামবাসীরা ঘটনা দেখতে পেয়ে তাদের বাঁচানোর চেষ্টা করে। ঘটনার খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। স্থানীয়দের তৎপরতায় ঘন্টাখানেকের চেষ্টায় দু’জনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তৃতীয়জনের দেহে তখনও প্রাণ ছিল। তাঁকে তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
উল্লেখ্য প্রায় সপ্তাহ খানেক ভারী বৃষ্টিতে ভাসছে উত্তরবঙ্গ। টানা সেই বৃষ্টিতে ফুলেফেঁপে উঠেছে মহানন্দা নদী। ফলে খুলে দেওয়া হয়েছে স্লুইস গেট। সেখানে জমা জলে নেমেই দিন কয়েক ধরে হইহুল্লোড়ে মেতেছেন মানুষজন। বহু মানুষ এখানে এসে জলে নামছেন মজা করতে। এদিন ওই তিন বন্ধু সেখানে গিয়ে জলে নেমে মোবাইলে ছবি তুলছিল। আচমকা স্রোতের টানে তলিয়ে যায়। তবে এই এলাকায় স্লুইস গেট খোলা রেখে কেন ভ্রমণার্থীদের যাতায়াতে সেভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়নি, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। পুলিশ দেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। আহতকে ভরতি করা হয়েছে মালদহের সামসি হাসপাতালে। ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। শোকস্তব্ধ ২টি পরিবার।