নিউজ ডেস্ক: গ্রেফতারের পরই অসুস্থ মদন-শোভন-সুব্রত। মঙ্গলবার ভোররাত পৌনে চারটে নাগাদ শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যার কারণে, মদন মিত্র, শোভন চট্টোপাধ্যায় ও সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু সুব্রত মুখোপাধ্যায় কোনও পরীক্ষা না করিয়ে জেলে ফিরে যান। অন্যদিকে এসএসকেএম হাসপাতাল সূত্রে খবর, মদন মিত্রের অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়ায় তাঁকে অক্সিজেন দিতে হয়। শোভন চট্টোপাধ্যায়কেও শ্বাসকষ্টের কারণে অক্সিজেন সাপোর্ট দিতে হয়েছে বলে জানা গেছে । মদন মিত্র রয়েছেন এসএসকেএমের উডবার্ন ওয়ার্ডের ১০৩ নম্বর কেবিনে। শোভন চট্টোপাধ্যায় ১০৬ নম্বর কেবিনে রয়েছেন।
উল্লেখ্য যে,সোমবার সকালে নারদ-মামলায় তৃণমূল কংগ্রেসের তিন নেতা-মন্ত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়। সোমবার সকালে ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র, সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও শোভন চট্টোপাধ্যায়কে সিবিআই গ্রেফতার করার পর থেকে নিজাম প্যালেসে ভিড় জমান তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা। নিজাম প্যালেসে সিবিআইয়ের অফিস ঘেরাওয়ের পাশাপাশি দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে হয়ে পরিস্থিতি। সিবিআই গ্রেফতার করার কিছুক্ষণের মধ্যেই নিজাম প্যালেসে পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সকাল এগারোটা নাগাদ মুখ্যমন্ত্রী নিজাম প্যালেসে পৌঁছান। প্রায় ছয় ঘণ্টা পর আদালতে নারদ মামলার শুনানি যখন শেষের মুখে তখন নিজাম প্যালেস থেকে বের হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরই সন্ধ্যের দিকে নারদ মামলায় সুব্রত, ফিরহাদ, মদন ও শোভনের জামিনের আর্জি মঞ্জুর করে আদালত। এই সঙ্গেই খারিজ করা হয় সিবিআইয়ের জেল হেফাজতের আর্জি ।
কিন্তু এরপরেই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় সিবিআই। সিবিএইয়ের এই আবেদন গ্রহণ করেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির। আগামী বুধবার কলকাতা হাইকোর্টে শুনানি, যার ফলে আপাতত বুধবার পর্যন্ত জেল হেফাজতে থাকতে হবে ৪ নেতাকে। এদিন নিজাম প্যালেস থেকে কনভয়ে করে প্রেসিডেন্সি জেলে নিয়ে যাওয়া হল ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র ও শোভন চট্টোপাধ্যায়কে। পিছনের গেট দিয়ে ৪ নেতাকে বের করা হয়। সামনের দুটি ও পিছনের গাড়িতে করে গাড়িতে কেন্দ্রীয় বাহিনী। মাঝের দুটি গাড়িতে ছিলেন চার মন্ত্রী এবং তাদের মোট ৩০-৪০ জন কেন্দ্রীয় বাহিনী কনভয় কর্ডন করে নিয়ে যান।
এদিকে শোভন চট্টোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘কোনও অন্যায় করিনি আগেও বলেছি, ফের বলছি। ফিরহাদ হাকিম বলেন ‘আইনি ব্যবস্থার ওপর আস্থা আছে। ভরসা রাখি বিচারবিভাগের মধ্যে দিয়েই আমরা ন্যায়বিচার পাব।’ ‘জনপ্রিয় হওয়াটা অন্যায় নয়। আমি কী সিবিআইকে সহযোগিতা করিনি। কেন আমরা জামিন থেকে বঞ্চিত হলাম?’ নিজের কান্না সামলে ফিরহাদ বলেন, ‘আমাকে কোভিড পরিস্থিতি সামলানোর জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কলকাতার মানুষকে বাঁচাতে দিল না।‘ মদনের গলায় অভিমানী সুর, “আমরা খারাপ, মুকুল-শুভেন্দু ভালো।“ মদন মিত্র বলেন, জামিন পেলাম কিন্তু বেরোনো গেল না। যেটুকু বোঝা গেল আমরা খারাপ, আর মুকুল এবং শুভেন্দু ভালো। বুধবার পর্যন্ত জেলেই থাকতে হবে এই ৪ জন নেতা-মন্ত্রীকে।