নিজস্ব সংবাদদাতা: এক অসাধারণ অভিজ্ঞতার স্বাক্ষী থাকল কাঁসাই পাড়ের দুই শহর খড়গপুর, মেদিনীপুর এবং তারই সঙ্গে দুই এলাকার গ্রামীন অংশ। রবিবার সন্ধ্যার পর থেকেই অনেকেরই ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামে পোষ্ট হতে শুরু করে সেই ছবি। যে ছবিতে বিকাল পাঁচটা পঁয়তাল্লিশ থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা অবধি নানা জায়গা থেকে ধরা পড়েছে পশ্চিম দিগন্তে সূর্যাস্তের সময় অপরূপ বর্ণময় ফিরোজা ছটা। শুরুতে লাল থেকে পোড়া মাটির রঙ ছাড়িয়ে যা ক্রমশ পরিণত হয়েছে গোলাপি আভায়। সেই ছবি একের পর এক সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট হতে থাকায় উচ্ছাসে ফেটে পড়েছেন খড়গপুর মেদিনীপুরের মানুষ। যাঁরা দেখতে পাননি তাঁরা আফসোস করেছেন।
অবশ্য শুধুই খড়গপুর, মেদিনীপুর শহর নয় তার বাইরে গিয়েও গ্রামীন খড়গপুর, সবং থেকেও দেখা গেছে এই অসাধারণ নৈসর্গিক দৃশ্য যা অনেকেই ক্যামেরা বন্দি করেছেন নিজের এ্যন্ড্রয়েড ফোনে এমনকি বাদ যাননি গৃহবধূরাও। খড়গপুর শহরের প্রেমবাজার, আইআইটি ফ্লাইওভার, মালঞ্চ, উটপুকুর, খরিদা, নিউটাউন ইত্যাদি বিভিন্ন জায়গার ছবি ধরা পড়েছে। গ্রামীন খড়গপুরের হরিনা, বসন্তপুর, রূপনারায়নপুর থেকেও অসাধারণ ছবি পাওয়া গেছে। মেদিনীপুর শহরের মিত্রকম্পাউন্ড, রাঙামাটি ফ্লাইওভার, গোপগড় থেকে এই দৃশ্য দেখা গিয়েছে। এমনকি সবংয়ের দশগ্রাম থেকেও একটি অনুপম ছবি এসেছে। হাওড়ার দিক থেকে কোলাঘাট সেতু পেরিয়ে পূর্বমেদিনীপুর জেলার প্রবেশ পথেও মিলেছে আশ্চর্য্য প্রাকৃতিক দৃশ্য।
নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে গিয়ে রবিবার নিজের ফেসবুক পেজে এরকমই একটি ছবি পোস্ট করেছেন মালঞ্চ এলাকার বাসিন্দা সুমিত চৌধুরী। দ্য খড়গপুর পোস্টকে সুমিত বলেছেন, “প্রথমে আমরা ভেবেছিলাম আগুন লেগেছে বোম্বে রোডের ওপাশে কোথাও। ওপাশে অনেক কারখানা, বোধহয় সেখানেই লেগেছে আগুন। কিন্তু একটু পরেই ভুল ভাঙল। আগুন থাকলে ধোঁয়াও থাকবে তো। কিন্তু কোথাও ধোঁয়া নেই। আকাশের লাল রঙটা এরপর গোলাপি হতে থাকল। আমরা সবাই ছাদের ওপরে উঠে এলাম। পুরো ফ্যামিলি। বিশ্বাস করুন, আমার বয়স ৪৫, আমি জন্ম থেকে খড়গপুরে আছি। আমি জীবনে খড়গপুরের এমন রূপ দেখিনি। আমার মনে হচ্ছিল আমি যেন নেতারহাটের ম্যাগনোলিয়া পয়েন্টে দাঁড়িয়ে সূর্যাস্ত দেখছি।”
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ‘ লকডাউনের ফলে বাতাসে দূষণের পরিমান অনেকটাই কমে গেছে। বিশেষ করে খড়গপুর শহরের কল কারখানার ধোঁয়ার সাথে মিশে যায় গাড়ি আর হোটেল, রেস্তোরাঁ, ফুটপাতের দোকানগুলির ধোঁয়াও। কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি হওয়ার ফলে মাঠঘাট আর রাস্তার যানবাহন বাহিত ধুলো তেমন করে আকাশ বাতাসে মিশে নেই। তারওপর রবিবার বাতাসে প্রচুর পরিমানে জলকণা ছিল। পশ্চিম আকাশে অবস্থান করছিল জলকণা পূর্ন সাদা মেঘ। অস্তগামী সূর্যের ছটা সেই জলকণা ও মেঘের ওপর প্রতিফলিত হয়ে এই নৈসর্গিক দৃশ্যের সৃষ্টি করেছে। সূর্য যখন দিগন্ত রেখার ওপরে ছিল তখন লাল রঙ বিচ্ছুরিত হয়েছে। ক্রমশ দিগন্তের নিচে নামার সময় ফিরোজা হয়ে গোলাপী রঙ ধারণ করেছে।
এখানে কয়েকটি ছবি পোস্ট করা হয়েছে সরাসরি ফেসবুক পেজ থেকে। সেখানে তাঁদের নাম ও ছবির টাইটেল উল্লেখ রয়েছে। কারও কারও ক্ষেত্রে হয়ত নাম পাওয়া যায়নি। সেক্ষেত্রে তাঁরা আমাদের জানালে তাঁদের নাম উল্লেখ করে দেওয়া হবে। প্রচ্ছদের ছবি অতীশ কৃশানুর তোলা আইআইটি ফ্লাইওভার