নিজস্ব সংবাদদাতা: রবিবার সকালেই দ্য খড়গপুর পোষ্ট প্রকাশ করেছিল বাজার করার নাম করে কিভাবে বে-আদপি চলছিল বি.এন.আর গ্রাউণ্ডে। একে অপরের ঘাড়ে বসেই চলছিল কেনা বেচা। আর তার পরিনামে কী ভয়ংকর পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে খড়গপুর শহর আর শহরতলিতে! ৫লাখ মানু্ষের বসতি এই শহরের সর্বনাশ করার জন্য একা বি.এন.আর গ্রাউন্ডই যথেষ্ট কারন গোলবাজার থেকে সরে আসা খড়গপুরের সবজির বৃহত্তম খুচরো ও পাইকারী বাজার এটাই। আর এখানে যেমন সারা খড়গপুর বাজার করতে আসে তেমনই আশে পাশের গ্রামগুলি থেকে বিক্রেতারা আসেন। ফলে কে কোথা থেকে সংক্রমিত হয়ে আসবেন আর কোথায় তা ছড়িয়ে পড়বে তা বোঝা মুশকিল কারন গোটা বাজার জুড়েই শতশত বিক্রেতা আর হাজার হাজার ক্রেতা একেবারেই মিলে মিশে রয়েছেন।
রবিবার সেই বাজারেই হানা দিলেন খড়গপুর টাউন থানার পুলিশ কর্মীরা। খড়গপুরের দায়িত্ব প্রাপ্ত জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজি সামসুদ্দিন আহমেদ এবং খড়গপুর টাউন থানার ইনসপেক্টর ইনচার্জ রাজা মুখার্জীর নেতৃত্বে প্রায় ১৫ জনের একটি দল রীতিমত লাঠি উঁচিয়ে তেড়ে হটিয়ে দেয় সমস্ত জটলা। ১ মিটারের মধ্যে থাকা সমস্ত দোকান ৫ মিনিটের মধ্যে সরিয়ে না নিলে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। ক্রেতা আর বিক্রেতাদের শেষবারের মত হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়েছে, আগামীকাল থেকে সবজি বাজারে মাস্ক ছাড়া কিনতে বা বিক্রি করতে এলে দেখা মাত্র গ্রেপ্তার করবে পুলিশ।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খড়গপুর পুলিশকে এও নির্দেশ দিয়েছেন যে সোমবার থেকেই এই বাজারের ওপর নজরদারি করার জন্য নির্দিষ্ট পুলিশ কর্মী থাকবে এবং বিন্দুমাত্র নিয়মের শিথিলতা দেখলেই কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে। আসলে এই বাজার নিয়ে ক’দিন ধরেই আশংকায় ছিল খড়গপুরের জনতা। তাঁদের বক্তব্য ছিল যাঁরা এই বাজারে বাজার করতে আসেনা তাঁদের রেহাই নেই কারন খড়গপুরের ছোটবড় স্থানীয় দোকানদাররা এখান থেকেই পাইকারি হারে বাজার করে নিয়ে যায়।
অন্যদিকে এদিনই শহরের নিমপুরা, মালঞ্চ প্রভৃতি বাজার গুলির ওপর ড্রোন ক্যামেরা উড়িয়ে নজরদারি চালিয়েছেন খড়গপুরের মহকুমা পুলিশ শাসক সুকোমল দাস। নিজের বাহিনী নিয়ে বাজার ও আশেপাশের বস্তিগুলির ওপর ড্রোন উড়িয়ে দাস দেখেন কোথাও আড়ালে কোনও জটলা হচ্ছে কিনা।পুলিশের কাছে খবর ছিল যে বন্ধ হওয়া বাজার, আড়ালে থাকা গলিতে আড্ডা , মজলিস চলছে। যদিও তেমন কিছু পায়নি পুলিশ।
এদিন শহরের আরও কয়েকটি বাজারে হানা দিয়ে সরকারের নির্দেশিকার বাইরে খোলা দোকানপাট বন্ধ করে দেয় পুলিশ। রবিবার শহরের বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের এই তৎপরতায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে খড়গপুর। বিশেষ করে বি.এন.আর গ্রাউন্ড বাজারে পুলিশি হানা অনেকটাই আতঙ্ক মুক্ত করেছে শহরবাসীকে। শহরবাসী বিশেষ করে লাগোয়া সুভাসপল্লী ও ভবানীপুর এলাকার মানুষ চাইছেন পুলিশের এই সক্রিয়তা যেন বজায় থাকে।