নিজস্ব সংবাদদাতা: আহত হয়েও বেঁচে গেলেন সবাই কিন্তু পারলনা দুধের শিশুটি। দুর্ঘটনায় মায়ের কোল থেকে বেরিয়ে মৃত্যু হল তার। দীর্ঘ লকডাউনের ঘরবন্দি জীবন কাটিয়ে একটু মুক্তির স্বাদ পেতে হাতের কাছেই দিঘা সফরে এসেছিলেন এক দম্পত্তি। সঙ্গে দেড় বছরের শিশু কন্যা এবং পরিবারের আরেক সদস্য। কিন্তু অভিশপ্ত হয়ে রইল সেই সফর। দিঘার আনন্দ নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে একটি ট্রাক চালকের ভুলে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় সেই দেড় বছরের শিশুটিকে চিরতরে হারাতে হল তাঁদের।
প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে দুর্ঘটনার অভিঘাতে মায়ের কোল থেকে ছিটকে পড়ার কারনেই মৃত্যু হয়েছে শিশুটির। মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার দুপুরে দিঘা থেকে ৫৬ কিলোমিটার দুরে ১১৬ বি জাতীয় সড়কের ওপর হেঁড়িয়াতে। “আমরা যতটা দেখেছি তাতে মনে হয়েছে শিশুটি মায়ের কোলে থাকলে বেঁচে যেতেও পারত কিন্ত গাড়িটি কয়েকপাক খাওয়ায় মা ধরে রাখতে পারেননি তাকে। যার ফলে মাথায় আঘাত লাগে তার আর সেই আঘাতের কারণেই মৃত্যু হয়েছে বলেই মনে হচ্ছে।” জানিয়েছেন এক পুলিশ কর্মী।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে মৃত দেড় বছরের ওই শিশুকন্যার নাম মাহিরা শামিম। কলকাতার ইকবালপুর থেকে বাবা মা আর কাকার সঙ্গে বেড়াতে এসছিল মাহিরা। দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ওই তিনজন বর্তমানে কলকাতার একটি হাসপাতালে ভর্তি। মাকে জানানো হয়নি শিশুটির মৃত্যুর খবর। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার, একদিনের জন্য দিঘাতে রাত্রিবাস করে বুধবার ফিরছিল পরিবারটি। পরিবারের একটি ছোট্ট চারচাকা গাড়ি যা চালাচ্ছিল শিশুটির কাকা। দিঘা থেকে বাড়ি ফিরছিল ওই শিশু ও তার পরিবারের লোকেরা।
দুপুর ১২.১৫ নাগাদ হেঁড়িয়া হাসপাতালের কাছে নন্দকুমারের দিক থেকে আসা একটি ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কা লাগে ছোট গাড়িটির। ধাক্কা লাগার পরই পাশের নয়ানজুলিতে উল্টে যায় দুটো গাড়ি। স্থানীয়রা এসে দ্রুত উদ্ধার করেন শিশু সহ আহত আরোহীদের। নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকরা শিশু মাহিরাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিশ জানিয়েছে, নন্দকুমারের দিক থেকে আসা দ্রুতগতির ট্রাকটি ভুল করে চলে আসে বিপরীত গামী রাস্তায় কিছু বোঝার আগেরই ছোট চারচাকা গাড়িটির সঙ্গে সংঘর্ষ হয় ট্রাকের। দুই গাড়িরই চালক শেষ অবধি সংঘর্ষ এড়ানোর চেষ্টা করে কিন্তু সেটা সম্ভব হয়ে ওঠেনি শেষ অবধি। দুটি গাড়িই উল্টে যায়।
ঘটনার পর খানিকটা যানজট তৈরি হয় ব্যস্ততম জাতীয় সড়কে। কিছুক্ষণের চেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। পুলিশ ও স্থানীয়দের চেষ্টায় দ্রুত আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও শিশুটিকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি, আগেই মৃত্যু হয়েছিল তার। উদ্ধার কার্যর সময় থাকা স্থানীয় এজানিয়েছেন, ‘দুর্ঘটনার পর কয়েক পাক খেয়ে নয়ানজুলিতে গিয়ে পড়েছিল চারচাকাটি। সম্ভবতঃ তখনই মায়ের কোল থেকে ছিটকে পড়েছিল সে। তার মাথায় আঘাতের চিহ্ন ছিল।”