সংগীতচর্চায় রবীন্দ্রনাথ বিনোদ মন্ডল
উনিশ শতকের বাংলাদেশে নবজাগরণের পূর্ণবিকাশ পরিলক্ষিত হয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-এর (১৮৬১-১৯৪১) মধ্যে। নানাভাবে তিনি নবজাগরণকে ঋদ্ধ করেছেন। ধর্মীয় গোঁড়ামির বিরুদ্ধে, কুসংস্কারের অবসানে, বিজ্ঞানচেতনা প্রসারে, শিক্ষা প্রসারে বিশেষতঃ মাতৃভাষায় জনশিক্ষা বিস্তার প্রসঙ্গে, নারী মুক্তি ও নারী প্রগতি বিষয়ে, স্বাধীনতা, গণতন্ত্র, দেশপ্রেম থেকে বিশ্ব শান্তি ও আন্তর্জাতিকতাবাদ প্রসঙ্গে তাঁর অবদান অতলস্পর্শী।
সবার ওপরে স্রষ্টা তিনি। নিজেই বলেছেন একাধিকবার ‘উত্তর পুরুষ যদি তাঁর কবিতাকে ভুলেও যায় শুধু গানগুলোকেই তারা মনে রাখবে’।
কবির একদেশদর্শিতা দূরে সরিয়ে বক্তব্যের নির্যাস এভাবে চিহ্নিত করা যায় – ‘গভীরতার সম্পদে রবীন্দ্রনাথের গান তাঁর কবিতার তুলনায় কোনো অংশেই হীন নয়।’ (ধূর্জটি প্রসাদ মুখোপাধ্যায়)।
স্বভাবতই সংগীতচর্চায় রবীন্দ্রনাথ প্রসঙ্গটি খুবই তাৎপর্যবাহী এবং আজকের যুগে প্রাসঙ্গিক মনে হয়।
রবীন্দ্রনাথ ও সংগীত প্রসঙ্গে গভীরভাবে তলিয়ে ভাবতে গেলে তাঁর থই পাওয়া মুশকিল। নানা দিগন্ত উন্মোচিত হয়। ১) সংগীত বিষয়ক প্রবন্ধাদি ২) সংগীত সম্পর্কিত পত্রাবলী ৩) এই বিষয়ক ভাষণ, অভিভাষণ ৪) রবীন্দ্রনাথের সংগীত সাধনা। যার মধ্যে আবার নানা পর্যায় রয়েছে। ব্যক্তিগত সংগীত চর্চা, রচনা, সুরারোপ, নাটক, গীতিকাব্য, নৃত্যে সংগীতের প্রয়োগ ইত্যাদি। রয়েছে মার্গ সংগীত থেকে লোকায়ত সংগীত অনুরাগের ছয় দশক জোড়া অক্লান্ত জার্নি।
গীতিকার রবীন্দ্রনাথ কবি রবীন্দ্রনাথের মত পরিপাটি ছিলেন না কখনো। তাঁর সংগীতচর্চার সঙ্গে বহু নামজাদা মানুষের নাম ইতিহাসে খোদিত। অথচ আশ্চর্যের বিষয় হলো, প্রথাগতভাবে বা যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণ করে কবি কখনো গানের তালিম নেন নি। এমন কি কোন বাদ্যযন্ত্রও সেভাবে কখনো বাজিয়ে গান করা শেখা হয়নি তাঁর। স্বরলিপি বা কোটেশান ফলো করে নিজের বা অন্যের গান গাওয়ার প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষা তাঁর ছিল না। অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ঘরোয়া গ্রন্থে সজীব স্মৃতিচারণা করেছেন –
“…….. রোজ জলসা হত বাড়িতে। রবি কাকা গান করতেন, আমি তখন তাঁর সঙ্গে বসে তাঁর গানের সঙ্গে সুর মিলিয়ে এসরাজ বাজাতুম।………. একখানা ছোট্ট বই ছিল, লাল রঙের মলাট, গানের ছোট সংস্করণ, বেশ পকেট এ করে নেওয়া যায় – দাদা সেটিকে যত্ন করে বাঁধিয়েছিলেন প্রত্যেক পাতাতে একখানা করে সাদা পাতা জুড়ে, রবি কাকা গান লিখবেন বলে – কোথায় যে গেল সেই খাতাখানা, তাতে অনেক গান, তখনকার দিনের লেখা পাওয়া যেত।”
হিন্দুস্তানি সংগীত থেকে কীর্তন হয়ে লোক-সামাজিক জীবনে যুক্ত হওয়ার পর পল্লীগীতি, জারি, তরজা, ভাসান, যাত্রায় আসক্ত হন জমিদার রবীন্দ্রনাথ। সেইমতো তাঁর সংগীত ভাবনাও বারেবারে আন্দোলিত হয়েছে। বিবর্তিত হয়েছে। বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের সময় বাঙালি ভাবাবেগকে না হলে তিনি এমন বাস্তব রূপ দিতে পারতেন না। লোকসংগীতের স্পষ্ট ছাপ দেখা যায় এক্ষেত্রে। আসলে তাঁর নেতৃত্বে গান যেন হাতিয়ার হয়ে জনসংযোগের বার্তা বহন করেছে মিছিলে – মিটিংএ জনজোয়ারে। আরো পরিণত হচ্ছে তা নাটকের গানে। মুক্তধারা, রক্তকরবীতে। এখানে যেন নজরুলের কন্ঠ শোনা যায়। তাঁর বিদ্রোহী সত্তা ঘুম ভাঙানিয়া বিশু পাগল এর মধ্যে আরোপিত হয়েছে সযত্নে।
তাঁর গানের সংখ্যা প্রায় তিন হাজার। কবি নিজে মৈত্রেয়ী দেবীকে বলেছেন: “…… দেখো, রবি ঠাকুর গান মন্দ লেখেনা। একরকম চলনসই তো বলতে হবে। চিনিতে পাবে রজনীগন্ধার গন্ধ মিশিছে সমীরে, ধীরে ধীরে,” কম গান লিখেছি? হাজার হাজার গান, গানের সমুদ্র, সেদিকটা বিশেষ কেউ লক্ষ করে না গো, বাংলাদেশকে গানে ভাসিয়ে দিয়েছি। আমাকে ভুলতে পার, আমার গান ভুলবে কি করে?….(মংপুতে রবীন্দ্রনাথ)। গীতবিতানের নানা পর্যায়ে প্রায় দু হাজার গান সংকলিত আছে (সাহিত্যম্ সম্পাদিত)। সেখানে পর্যায়ভিত্তিক অবস্থান হল – পূজা – ৬১৭, প্রেম – ৩৯৫, বসন্ত – ১৯৪, বিচিত্র – ১৩৯, নাট্যগীতি – ১৩২, বর্ষা – ১১৪, প্রেম ও প্রকৃতি – ১০১, পূজা ও প্রার্থনা – ৮৩, স্বদেশ – ৪৬, শরৎ – ৩০, গ্রীষ্ম – ২৬, আনুষ্ঠানিক – ২১, শীত – ১৭, জাতীয় সংগীত – ১৬ ইত্যাদি।
রবীন্দ্রনাথের গানের উদ্যোগ পর্বে জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভূমিকা ছিল অগ্রগণ্য। বিষ্ণু চক্রবর্তী এবং যদু ভট্ট মহাশয়গণ মার্গ সংগীতের প্রতি তাঁকে আকৃষ্ট করেছেন। কিন্তু জ্যোতিদাদা না হলে গীতিকার রবীন্দ্রনাথকে পাওয়া যেত না বিকশিত রূপে। মনে রাখতে হবে, এই জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুরই বরোদা শহরে আয়োজিত প্রথম নিখিল ভারত সংগীত সম্মেলনে যে মূল ছয়টি প্রস্তাব পেশ করেন, তার প্রথম সুপারিশ ছিল – সারাদেশে একটি সর্বজনসম্মত স্বরলিপি পদ্ধতি নির্ণয় বা নির্দেশ (by adopting a common system of notation) করতে হবে। পরবর্তীকালে ইন্দিরা দেবী, দিনেন্দ্রনাথ, সুধাময় দেবী, দিলীপ কুমার রায়, সাহানা দেবী সহ অনেকে তাঁর গানের তরী কে এগিয়ে নিয়ে যেতে ভূমিকা পালন করেছেন।
১৯২৪-এ জাহাজে বসে কবি লিখেছেন – ‘গান লিখতে যেমন আমার নিবিড় আনন্দ হয়, এমন আর কিছুতে হয় না। এমন নেশায় ধরে যে, তখন গুরুতর কাজের গুরুত্ব একেবারে চলে যায়, বড় বড় দায়িত্বের ভারাকর্ষণটা হঠাৎ লোপ পায়, কর্তব্যের দাবিগুলোকে মন একধার থেকে নামঞ্জুর করে দেয়…..’। তাঁর এই আনন্দ সম্ভার কিন্তু চরিত্র স্বাতন্ত্র্যে উজ্জল। ক্লাসিকাল ধারাকে যখন তাঁর মনে হয়েছে ছায়াময়, অন্ধকারাচ্ছন্ন, তখনই তিনি গান রচনায় পল্লীগীতির আশ্রয় নিয়েছেন। তাঁর কলমের ছোঁয়ায় বাউল, ভাটিয়ালি পরিশীলিত ‘রবীন্দ্র সংগীত’ হয়ে উঠেছে। তাই অঙ্গিকগত দিক থেকে তাঁর গানের বাণীকে স্পষ্ট ভাবে উচ্চারণ করতে হয়। তাঁর প্রতিটি গানই এক একটি স্বতন্ত্র সত্তায় মহিমান্বিত। আবার কোনও কোনও সমালোচক তাঁর গানে বৈচিত্র্যের অভাব বোধ করেন। অনেকে মনে করেন, গীতিনাট্য এর গানগুলি তাঁর সফল রচনা। ‘বাল্মীকি প্রতিভা’ থেকে চিত্রাঙ্গদা, এবং তাসের দেশ, শ্যামা, চণ্ডালিকা আধুনিক রচনাসমূহ – এ যেন কথ্যভাষার নাট্যরূপ এর ওপর সুরপ্রয়োগের এক সুদীর্ঘ শোভাযাত্রা।’ পূজা, প্রেম ও প্রকৃতি পর্যায়ের প্রচুর গানে তিনি বিশ্বমানের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
তাঁর কোনো কোনো গানে শরীরী উদ্ভাস দেহ সীমাকে স্পর্শ করেও অতীতের পথে যাত্রা করেছে। ‘আমার এই দেহখানি তুলে ধরো, তোমার ওই দেবালয়ের প্রদীপ করো।’ তাঁর গানে বিরহের ব্যবহার, কীর্তনের বিরহকে গভীরতর দ্যোতনায় সৃষ্টি করেছে। কথার সঙ্গে সুরের যুগলবন্দির মনোহারিত্বে তিনি অতীতের বহু কিংবদন্তি স্রষ্টার সমগোত্রীয় হয়ে উঠেছেন। তানসেন, বৈজু, গোপাল, সদারং, অদারং প্রমুখের সঙ্গে তুল্যমূল্য বিচার করলে বোঝা যায়, তিনি কত বড় মাপের সংগীতজ্ঞ ছিলেন। আবার তাঁর বিপুলসংখ্যক ভালো গানের মধ্যেও তাল এবং অনুষঙ্গ বাদ্যযন্ত্রহীন গানগুলিই সংগীতের জগতে তাঁকে অমরত্ব প্রদান করেছে। এক্ষেত্রে কয়েকটি নমুনা প্রদান অযুক্তি হবে না।
১) স্বপন যদি ভাঙ্গিলে ২) এবার নীরব করে দাও হে কবি রে ৩) আহা তোমার সঙ্গে প্রাণের ৪) আজি ঝড়ের রাতে ৫) আমি চঞ্চল হে ৬) তোমায় নতুন করে পাব বলে ৭) ও চাঁদ চোখের জলে ৮) লুকিয়ে আছো তুমি ৯) আমি রূপে তোমায় ভোলাবো না ১০) মেঘের পরে মেঘ জমেছে ১১) নীলাঞ্জন ছায়ায় ১২) বাজে করুণ সুরে ১৩) স্বপন গহন রাত্রি ১৪) তুমি কি কেবলি ছবি ১৫) কৃষ্ণকলি আমি তারেই বলি ১৬) ও মোর দরদিয়া ১৭) দূরে কোথায় দূরে ১৮) বড় বিস্ময় লাগে ১৯) আমি শ্রাবণ আকাশে ঐ দিয়েছি ২০) সার্থক জনম আমার।
গীতিকার হিসেবে তিনি কত বড় ছিলেন তার প্রমাণ মেলে তাঁর গানগুলির মেজাজে। প্রতিটি পর্যায়ের গান-এই তিনি নানা স্তরের বর্ণবিন্যাস ঘটিয়েছেন। তাঁর গানগুলি কাব্যগুণ ও সাংগীতিকগুণ উভয়-বিচারেই স্বয়ংসিদ্ধ। একটা বর্ষা ঋতু কে নিয়ে তিনি কতো না ভাবে ভেবেছেন, লিখেছেন। মেঘের নানা সাজগোজ, বৃষ্টির নানা প্রকরণ, ঝুমঝুমানি, কখনো বর্ষার আগলভাঙা অভিযান, তার পূর্ণ বিকাশ, কখনো বিদায় অভিসার, কী নেই গানে! বৃষ্টিদিনের দুঃখ, বেদনা, বিরহ হর্ষ বিষাদের নানা আয়োজন। এতো রবীন্দ্রনাথেই শুধু সম্ভব!
জীবনের বিচিত্রগামী পথে চলতে চলতে প্রাণের আনন্দে যে সব গান লিখেছেন, তা কিন্তু নয়। জনপ্রিয়তার কারণে বহু ফরমায়েশে না সাড়া দিয়ে পারেননি তিনি। প্রতিটি প্রিয়জন হারানোর ব্যথার সাক্ষী তাঁর কলমে রক্তক্ষরণের মত উঠে আসা বেদনার গান। আবার দুঃখ থেকে মুক্তিলাভের উপনিষদিক আনন্দবিহারও তাঁর গানে লক্ষিত হয়। নানা ফরমায়েশি গান নিয়ে নানা কৌতুককর কাহিনী প্রচলিত রয়েছে দেশ-বিদেশে, তাঁকে ঘিরে, তাঁর গানকে ঘিরে। সবচেয়ে বড় বিতর্ক বোধহয় ‘জনগণমন’ সংক্রান্ত। রাজ ভক্তিকে প্রমাণ করতেই নাকি এ গান তিনি লিখেছেন, এইটি চালু সমালোচনা। জীবনের উপান্তে পুলিনবিহারী সেনকে লেখা চিঠিতে কবি নিজেই তার কৈফিয়ৎ পেশ করেছেন।
“সে বৎসর ভারত সম্রাট এর আগমনের আয়োজন চলছিল। রাজ সরকারি প্রতিষ্ঠাবান আমার কোনো বন্ধু সম্রাটের জয়গান রচনার জন্য আমাকে বিশেষ করে অনুরোধ জানিয়েছিলেন। শুনে বিস্মিত হয়েছিলুম, সেই বিস্ময়ের সঙ্গে মনে উত্তাপেরও সঞ্চার হয়েছিল। তারি প্রবল প্রতিক্রিয়ার ধাক্কায় আমি জনগণমন অধিনায়ক গানে সেই ভারত ভাগ্য বিধাতার জয় ঘোষণা করেছি, পতন-অভ্যুদয়-বন্ধুর পন্থায় যুগ যুগ ধাবিত যাত্রীদের যিনি চিরসারথি, যিনি জনগনের অন্তর্যামী পথ পরিচায়ক – সেই যুগে যুগান্তরের মানব ভাগ্য রথচালক যে পঞ্চম ও ষষ্ঠ বা কোনো জর্জই কোনক্রমেই হতে পারেন না সে কথা রাজভক্ত বন্ধুও অনুভব করেছিলেন। কেননা তাঁর ভক্তি যতই প্রবল থাক, বুদ্ধির অভাব ছিল না। আজ মতভেদবশতঃ আমার প্রতি ক্রুদ্ধ ভাবটা দুশ্চিন্তার বিষয় নয়, কিন্তু বুদ্ধি ভ্রংশটা দুর্লক্ষণ।” ব্যাখ্যা নিষ্প্রয়োজন।
অন্য একটি বিতর্ক সূত্রে টান দিয়ে এই লেখার সমাপ্তি ঘটানো যাক। রবীন্দ্র সংগীতে হারমোনিয়াম ব্যবহার প্রসঙ্গ। এটা সর্বজনবিদিত যে, কবি নিজে হারমোনিয়াম ব্যবহারের ঘোরতর বিরোধী ছিলেন। জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে এককালে পিয়ানো, অর্গান, বেহালা প্রভৃতি কয়েকটি বিদেশি বাদ্যযন্ত্রের চর্চা হলেও পরে তাবর্জিত হয়। কণ্ঠসংগীতের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হতো এস্রাজ ও দিলরুবা। পরবর্তীকালে শান্তিনিকেতনেও কবি হারমোনিয়াম নিষিদ্ধ করেন। কিন্তু আজকের দিনে সর্বত্র তবলার সঙ্গে হারমোনিয়াম যোগে নবীন-প্রবীণ শিল্পীরা রবীন্দ্রনাথ কে গানে গানে শ্রদ্ধা জানান।
কবির মৃত্যুর বছর দেড়েক আগে ‘অল ইন্ডিয়া রেডিও’ তাঁদের সব অনুষ্ঠান থেকে হারমোনিয়াম বর্জন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। এ ব্যাপারে প্রধান উদ্যোগী ছিলেন তখনকার কর্মকর্তা mister John foulds. সমাজে বিতর্ক তখন কম হয়নি। কিন্তু সব চাঞ্চল্য একসময় থিতিয়ে যায়। রবীন্দ্রনাথ এই পদক্ষেপকে সমর্থন জানিয়ে চিঠি দেন। Times of India, ৩ এপ্রিল ১৯৪০ এ সে খবর ফলাও করে প্রকাশ করে।
Indian music in all India radio: Calcutta welcomes harmonium ban. Our Calcutta correspondent writes that the reaction of Indian listeners in that city to the ban placed by all India radio on the musical instrument known as the the harmonium has been most famousable, as while everybody acknowledged the inferiority of the harmonium as an accompaniment to Indian songs with there subtleties nobody had the courage to discard it, until the late Mr John Foulds definitely decided against its use.
Distinguished personalities in India and some of the front row musicians have approved of the radio authorities action, Dr. Rabindranath Tagore is landing his full support to this move. “I have always” writer Dr. Rabindranath,” been very much against the prevalent use of the harmonium for purpose of accompaniment In our music and it is banished completely from our aashram. You will be doing a great service to the cause of Indian music if you can get it abandoned from the studios of all India radio.