Homeঅন্যান্যক্রান্তিকালের মনীষা -১ ।। অনিন্দিতা মাইতি নন্দী

ক্রান্তিকালের মনীষা -১ ।। অনিন্দিতা মাইতি নন্দী

বাণিজ্যে বসতে লক্ষ্মী, আচার্য সহায়                                   অনিন্দিতা মাইতি নন্দীজন্ম সূত্রে আমি যে বাঙালি পরিবারে জন্মেছি সেখানে  পরিবারের মূল পেশাই শিক্ষকতা। আত্মীয়রাও সকলের কম বেশী চাকুরিজীবি। বাণিজ্য -এর ‘ব’ সম্পর্কে তেমন কোনো সুস্পষ্ট ধারণা নেই আমার। স্কুল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবার পর রসায়ন নিয়েই পড়ার অদম্য উৎসাহে, বিশ্ববিদ্যালয়  অব্দি রসায়নের রস আস্বাদনের সুযোগ পাই। মুখস্থ বিদ্যেতে আমার প্রবল অনীহা নাকি অক্ষমতা জানা নেই, তবে বোধশক্তির ওপর বরাবর জোর দিয়ে গেছি, তাই পরীক্ষায় এই দৌড় নিয়ে যতটুকু যাওয়া যায় সেই অব্দি কোনরকমে
পৌঁছনোর একটা চেষ্টা করেছি। আর পাঁচজন, রসায়ন পড়তে গিয়ে, যেমন- ‘রসায়ন’ কী বা ভারতীয় রসায়নের জনক কে? ইত্যাদি জানেন আমিও তেমন ভাবেই ভারতীয় রসায়নের জনকের নাম জেনেছি, তিনি যে ‘মাস্টার অফ নাইট্রাইটস’ -এগুলো তো রসায়ন পাঠ্য পুস্তকেই পড়েছি। কিন্তু এই বিশ্ব করোনা সংক্রমণে হঠাৎ করে এই প্রখ্যাত রসায়নবিদ প্রতিষ্ঠিত ‘বেঙ্গল কেমিক্যালস’ -এর উপর এতই আলোকপাত হয় যে নতুন করে আবার আমাদের আচার্য কে স্মরণ করতে হয়।
ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন ধরণের বই পড়ার অভ্যেস আমার। বুঝি বা না বুঝি বইয়ের পাতা ওল্টাতে আমার ভালো লাগে- এখনো সেই পুরানো অভ্যেসটা আমার রয়ে গেছে। এমনি ভাবেই একটি বই যেখানে বিভিন্ন বিজ্ঞানীর জীবনী পড়তে গিয়ে কিছু বিশেষ পাতায় আমার চোখ আটকে যায়— কে ঐ রসায়নবিদ যিনি আশি বছর বয়সেও উদাত্তচিত্তে ডাক দেন—‘বাঙালি ব্যবসা করো’।
তিনি বাংলার নবজাগরণের পুরোধা পুরুষ, ভারতে রসায়ন বিদ্যার জনক, শিল্প প্রতিষ্ঠাতা আবার, ব্যবসা বাণিজ্য উদ্যোগী, ‘বেঙ্গল কেমিক্যাল’ ভারতের প্রথম ফার্মা ইন্ডাস্ট্রির প্রতিষ্ঠাতা, মাস্টার অফ নাইট্রাইটস্ আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়।

আচার্যদেব ১৮৬১ সালের ২রা আগস্ট রাড়ুলি গ্রামে জন্মেছিলেন যা ছিল কপোতাক্ষ নদের তীরে। কিছুদূরেই কবি মধুসূদন জন্মভূমি সাগরদাঁড়ি। আচার্যদেব স্বয়ং তাঁর জন্মসালটি কে একটি ঐতিহাসিক ঘটনার সাথে যুক্ত করে বলেন “এই বৎসর টি রাসায়ন শাস্ত্রের ইতিহাসে স্মরণীয়, কেন না ঐ বৎসরেই ক্রুক্স ‘থ্যালিয়াম’ আবিষ্কার করেন”। থ্যালিয়ামের বর্ণালির রঙ সবুজ, যেন সবুজ সঙ্কেত দেয় রসায়নবিজ্ঞানী হয়ে ওঠা প্রফুল্লচন্দ্রকে। ১৮৬১ সালটি প্রকৃতপক্ষে বাঙালিদের জন্য স্বর্ণযুগের বছর কারণ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ও প্রখ্যাত ডাঃ নীলরতন সরকার ওই একই বছর জন্মগ্রহণ করেন। বাংলাকে, ভারতকে ভরিয়ে দিতেই যেন এই ত্রয়ীর একইসাথে আবির্ভাব। আচার্যদেব চিন্তাভাবনায় ভারতীয় আবার আন্তর্জাতিকও। তিনি ছিলেন একজন ব্যতিক্রমী বাঙালি। তিনিই একমাত্র বিজ্ঞানী যিনি গবেষণাগারে শুধু আবদ্ধ না থেকে অতিসাধারণ মানুষের পাশে এসে, কর্মকলাপের মাধ্যমে প্রকৃত দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
বাঙালীর আর্থিক দুর্দশা, দৈন্যদশা, চারিত্রিক দুর্বলতা নিয়ে এভাবে আর কোন প্রথিতযশা বৈজ্ঞানিক চিন্তাভাবনা করে আলোকপাত সেযুগে করেননি। বাঙালি অন্তরের অন্তরস্থল থেকে প্রকৃত ভালোবাসতেন এই আচার্যদেব, তাই বাঙালির প্রকৃতি, স্বভাব, অভ্যাস, কর্মদক্ষতা ও চারিত্রিক ত্রূটি বিচ্যুতির ওপর একমাত্র যথার্থ বিশ্লেষণ করেছেন, ছুরি চালনা করে অ্যানাটমি বিশ্লেষকের ভূমিকায় এই আচার্য। তাই ‘আত্মচরিত’ এ তিনি বলেছেন:-

“আমি বাঙালি চরিত্র বিশ্লেষণ করিয়া তাহার দোষ ত্রূটি দেখাইতে দ্বিধা করি নাই। অস্ত্রচিকিৎসকের মতই আমি তাহার দেহের ছুরি চালাইয়াছি এবং ব্যাধিগ্রস্ত অংশ দূর করিয়া তাহাতে ঔষধ প্রয়োগ করিতে চেষ্টা করিয়াছি। কিন্তু বাঙালি আমারই স্বজাতি এবং তাহাদের দোষ ত্রূটির আমিও অংশভাগী। তাহাদের যেসব গুণ আছে, তাহার জন্যও আমি গর্বিত, সুতরাং বাঙালিদের দোষ-কীর্তন করিবার অধিকার আমার আছে।”
ব্যবসা-বাণিজ্যের দিকে বাঙালির দৃষ্টি ফেরানোর জন্য তিনি নিজে সক্রিয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন, কিন্তু বাঙালি আচার্যর বাণীতে কোনরকম কর্ণপাত করেনি। বিস্ময়ে স্তব্ধ হতে হয় এই কট্টর বিজ্ঞানী, বাস্তব সম্মত অর্থনীতির সমর্থক ও সমাজবিশ্লেষক যিনি তার দূরদর্শী ঝানু ব্যবসায়িক বুদ্ধি দিয়ে বাংলা ও বাঙালির অভাব ও দুর্দশা মোচনে অবিরাম পরিশ্রম করে গেছেন। ভাবলে বিস্ময় লাগে একজন রসায়নবিদ কী করে আচার্য হয়ে উঠলেন- কীভাবে বাঙালিকে সঠিক দিশা দেখাতে আলোর পথযাত্রী হয়ে উঠলেন। তিনি যেন সেই আলোক শিখা যিনি অক্লেশে বলেন, “আমাদের কি দুর্বল চিত্ত, চাকরি প্রিয়, বিলাসী বাবু হওয়া সাজে? শক্ত হতে হবে, মেরুদন্ড বিশিষ্ট মানুষ হতে হবে। অন্ন মীমাংসা করতে পারলে সঙ্গে সঙ্গে অনেক প্রশ্নের সমাধান হয়ে যাবে। তাই ব্যবসা-বাণিজ্য ছাড়া আজ আমার অন্য কিছু বলবার নাই। ব্যবসা-বাণিজ্যের কাজে আমাদের স্পৃহা নেই- প্রবৃত্তি নাই। এই প্রবৃত্তি আগে জাগিয়ে তুলতে হবে।”
শিল্পে ও বিজ্ঞানে ভারত যেন পাশ্চাত্য দেশের সমকক্ষ হয়ে উঠে এই ছিল তার সাধের স্বপ্ন। তাঁর সারাজীবনের পরিশ্রমে বিজ্ঞান চর্চা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল।চিররুগ্ন ও চিরকুমার অত্যন্ত সরল ও অনাড়ম্বর জীবন যাপন করতেন। তিনি সত্যি প্রকৃত শিক্ষক ছিলেন- তাই দেশের সকল ছাত্রদের উদ্দেশ্যে বিমর্ষভাবে ডেকে বলেন, “সাবধান! বিপদ সন্নিকট। ছাত্র তোমরা, দেশের ভবিষ্যৎ আশাস্থল। অপ্রিয় সত্য তোমাদের বলছি- মধ্যবিত্ত বাঙালির সন্তান ডিগ্রী পেলেই জীবিকা সংস্থান করতে পারবে, আর ডিগ্রির অভাবে চারিদিকে অন্ধকার দেখবে- এটা কত বড় ভুল আজ নিঃসংশয়ে তা বুঝে নিতে হবে।”

আবার নিঃসংকোচে কি অদ্ভুত বাস্তব সত্য যা আজও আমাদের সমাজকে গ্রাস করেছে তা বলেন- ”কলেজের দ্বারে এই যে শত শত ছাত্র আঘাত করছে, মাথা খুঁড়ছে এরা কি প্রকৃত জ্ঞান পিপাসু বিদ্যার্থী অথবা ডিগ্রীধারী মাত্র উদ্দেশ্য গলধঃকরণ,  উদ্গিরণ ও ডিগ্রীগ্রহণ….. যে শিক্ষায় শুধু মেরুদণ্ডহীন গ্রাজুয়েট তৈরী হয়, মনুষ্যত্বের সঙ্গে পরিচয়  হয়না, যে শিক্ষা আমাদের ‘করে খেতে’ শেখায় না, দুর্বল অসহায় শিশুর মতো সংসার- পথে ছেড়ে দেয়, সে শিক্ষার প্রয়োজন কী ? এই চাবুকের মত বাক্যবাণ গুলি যে  কতখানি সত্যি তা আমরা প্রখ্যাত কবি সুকুমার রায়ের কবিতা, ”জীবনের হিসাব” এ দেখতে পাই,
বিদ্যে বোঝাই বাবুমশাই চড়ি সখের বোটে,
মাঝিরে কন,”বলতে পারিস সূর্যি কেন ওঠে?”
-এদিকে কবিতাটির শেষাংশের উলটপুরাণ আচার্যদেবের বাণীকেই স্মরণ করিয়ে দেয়
মাঝি শুধায়, ”সাঁতার জান? মাথা নাড়েন  বাবু।
মূর্খ মাঝি বলে, মশাই, এখন কেন কাবু?
আবার স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ‘অসন্তোষের কারণ’ নামক প্রবন্ধে ও শিক্ষা সম্পর্কে একই কথা বলেছেন,  “কলসীতে  শুধু জলই ভরিতে থাকিলাম, কিন্তু সে জল কখনো দানপানের উপযুক্ত হইতে পারিল না।”
ভাবলে বিস্ময় লাগে রবীন্দ্রনাথ এবং প্রফুল্লচন্দ্র এই দুই মনীষী একজন বিশ্বকবি অন্যজন বৈজ্ঞানিক হওয়া স্বত্তেও কি প্রবলভাবে বাণিজ্যমনস্ক  ব্যক্তিত্ব। ঠাকুর পরিবারের ঐতিহ্য, ও ঐশ্বর্য সম্পর্কে আমরা সবাই অবহিত। আবার প্রফুল্লচন্দ্র এক সম্ভ্রান্ত ও অভিজাত ঐতিহ্যবাহিত পরিবারে জন্ম নেন। ফলে বিশ্বকবি ও আচার্যের বাণিজ্যিক মনস্কতা বিস্ময় জাগায়। কবি, রবীন্দ্রনাথ যেখানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘শান্তিনিকেতন’ এবং কৃষিবিদ্যালয় ‘শ্রীনিকেতন’ প্রতিষ্ঠা করেন, সেখানে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র ‘মডার্ন ইন্ডিয়ান রিসার্চ স্কুল ইন কেমিস্ট্রি’ এবং ‘বেঙ্গল কেমিক্যালস এন্ড ফার্মাসিউটিক্যালস্’ (ভারতে প্রথম ফার্মাসিউটিক্যাল কম্পানি) প্রতিষ্ঠা করেন। কেবল বেঙ্গল কেমিক্যাল নয়, অন্যান্য অনেকগুলি শিল্প প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসার সহিত ঘনিষ্ঠ ভাবে জড়িত ছিলেন আচার্য। তাঁর উৎসাহ ও প্রচেষ্টায় ক্যালকাটা পটারি ওয়ার্কস, ন্যাশনাল ট্যানারি ওয়ার্কস, বেঙ্গল এনামেল, ভারতী ইঞ্জিনিয়ারিং কোং, ইত্যাদি গড়ে ওঠে। তিনি ছিলেন এইসব প্রতিষ্ঠানের প্রেরণাশক্তি, কেন্দ্রীয় শক্তি। শ্রমিকদের প্রতি আচার্যদেবের অপার সহানুভূতি ও ভালোবাসা ছিল।

বেঙ্গল কেমিক্যাল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তিনি দেশীয় প্রতিভার বিকাশ ঘটিয়ে ভারতীয়দের আত্মনির্ভরতা ও আত্মশক্তির প্রকাশ ঘটিয়ে ছিলেন। বিস্ময় আরও  বাকি থাকে, রুদ্ধনিঃশাসে বাকস্তব্ধ হয়ে যায় যখন দেখি, আচার্যদেবের সেই বিখ্যাত উক্তি- বিশ্ববিদ্যালয় হবে- “পান্ডিত্য, গবেষণা ও উচ্চতর সংস্কৃতির কেন্দ্রস্বরূপ, যারা জ্ঞানান্বেষণের জন্য সমগ্র জীবন উৎসর্গ করিতে প্রস্তুত, তারাই কেবল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা পাক্”। কিংবা যখন অভিভাবকরূপে বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের যা একাডেমিক ইয়ার তাতে তো দুবছরে দশমাস মাত্র পড়া হয়। এই দশমাস পড়ে সব বিদ্যা আয়ত্ত হয়ে যায় কি? আজীবন না পড়লে শেখা  যায় না। প্রত্যেকদিন নূতন নূতন তত্ত্ব প্রকাশিত হচ্ছে, সে-সকলের খবর রাখতে হবে। ফার্স্ট হও  আর না হও পাস করার পরেই কেতাবের সঙ্গে সেলাম আলেকম্ করে তার নিকট চিরবিদায় গ্রহণ কি ভয়ঙ্কর! কী সর্বনাশ!, এখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাধিকারী দেখলে আতঙ্কে আমার প্রাণ শিউরে ওঠে।তারা ছদ্মবেশী মূর্খ।”
কী ভয়ঙ্কর বাস্তব সত্যি কথা বলে গেছেন আচার্য আজ আমরা সবাই তা প্রতিপদে উপলব্ধি করছি। তাঁর মতে- জগতে যারা প্রকৃত বিদ্যাভ্যাস করেছেন, তাদের মধ্যে অনেকেই নিজের চেষ্টায় বা সেলফ্ টট্ মেথডে শিখেছেন। এরা সম্পূর্ণ শিক্ষিত, এঁদের শিক্ষার মূলে স্বাবলম্বন। এরা পাঠাগারে বই পড়েন- নোট পড়েন না।
বই এর পাতা ওল্টাতে ওল্টাতে স্তব্ধ হয়ে বসে থাকি কিছুক্ষন, হে আচার্য আমরা আপনার মতো জ্ঞানতপস্বী, বৈজ্ঞানিক-সন্ন্যাসী, জাত-শিক্ষক প্রখর ব্যবসায়িক বুদ্ধিসম্পন্ন, বাংলা ও বাঙালীর দুর্দশা ও অভাব মোচনে অবিরাম সংগ্রামী তপস্বী পাইনি আগে, যিনি কথার চাবুক মেরে বলতে পারেন, সঠিকপথ দেখতে পারেন ছাত্রদের যে “ডিগ্রিধারীদের ‘মনপলি’তে মৌলিক চিন্তা বিনষ্ট হয়, প্রতিভার বিকাশ ব্যাহত হয়, মননশীলতা ঊষর মরুপ্রান্তরে পরিণত হয়।”

সারাজীবন ধরে বাঙালি জাতিকে আরামপ্রিয়তা,  আলস্য ত্যাগ করে শিল্পমুখী, ব্যবসা-বাণিজ্যমুখী হওয়ার জন্য অনুপ্রেরণা জাগিয়ে গেছেন।
ভাবলে শিউরে উঠতে হয়, এই আচার্যের কৌটিল্যের মতো দূরদৃষ্টিকে- ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালাবাগের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর রবীন্দ্রনাথ তার ‘নাইট’ উপাধি ফিরিয়ে দিলেও প্রফুল্লচন্দ্র তা করেননি বরং এই রসায়নবিদ্ ওই উপাধির দৌলতে অনেক বিপ্লবীকে নানাভাবে সাহায্য করেছেন, আবার কিছু বিপ্লবীকে নিরাপদ আশ্রয় ও দিয়েছেন। আবার এই রসায়নবিদ্ জীবনের শেষ পর্যায়ে এসেও বাঙালি তথা ভারতবাসীদের বারবার উৎসাহিত করেছেন শিল্পব্যবসায়। তাই আশি বছর বয়সেও বলেন-
“আমার বয়স হল আশি- এখন জীবন-সন্ধ্যায় পৌঁছেছি যে কোন সময়ে ওপারের ডাক এসে পৌঁছবে। যে কটা দিন থাকব ঐ একই কথা বলব- ভারতবাসী এখনও ফেরো, সঙ্গবদ্ধ হয়ে শিল্প-বাণিজ্যে ব্যবসায়ে মন দাও, তবে যদি বাঁচতে পারো, নইলে তোমাদের ভবিষ্যৎ নেই।
…….ব্যবসা মানে নিন্দের জিনিস, ছোট কাজ এমন ধারণা ছাড়। যদি আমার রূঢ় কথায় কারও দৃষ্টি ফেরে, তবেই সার্থক হবে আমার সমস্ত সাধনা। শেষ বয়সের শেষের কথায় আমার দেশবাসীর কাছে এই একমাত্র আবেদন।” হে আচার্যদেব,  আজ সারা বাংলা কাঁদছে, সারা ভারতবর্ষ কাঁদছে, এমত অবস্থায় কি সম্ভব আচার্যদেব, ”সম্ভবামি যুগে যুগে।।”
রচনা সূত্র (Reference):
আচার্য প্রফুলচন্দ্রের চিন্তাধারা – রতনমনি চট্টোপাধ্যায়
আচার্য প্রফুলচন্দ্রের জীবনবেদ – নন্দলাল মাইতি
১৯৮০ সালের ৮ই ডিসেম্বর রাত্রি ৮টার সময়ে অল্ ইন্ডিয়া রেডিওর প্রচারিত আচার্যের বেতার বক্তৃতা।
‘প্রবাসী’ ষষ্ঠবার্ষিকী স্মারক গ্রন্থে ও মাসিক ‘শিক্ষা’ পত্রিকায়
‘আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র স্মারক’ বই
‘আত্মচরিত’
বিজ্ঞানাচার্য – ডাঃ মাহেন্দ্রলাল সরকার
ছবি: ভারত সরকার এর নথি

RELATED ARTICLES

Most Popular