নিজস্ব সংবাদদাতা:ভারতে করোনা ভাইরাস নিয়ে রীতিমত উদ্বেগ প্রকাশ করল স্বাস্থ্যদপ্তর আর নজির বিহীনভাবে সেই উদ্বেগকে কটাক্ষ করলেন এই মুহূর্তের অন্যতম রাজনৈতিক ব্যক্তিক্ত পশ্চিম বাংলার মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। নজিরবিহীন এই কারনেই যে বিশ্বে এই প্রথম মারণ ভাইরাসের সঙ্গে রাজনীতিও মিশে গেল।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী হর্ষবর্ধন জানিয়েছেন, ” ভারতে এই মুহূর্তে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২৯জন। আর সেই কারনে হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। সরকার সমস্ত প্রকার গুরুত্ব দিয়ে করোনা সংক্রমন রুখতে মরিয়া।” স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানাচ্ছে, কেরলের তিন ছাত্রের শরীরে করোনাভাইরাস পজিটিভ, দিল্লি ও তেলঙ্গানায় করোনা আক্রান্ত দু’জন। আগ্রায় ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে একই পরিবারের ছ’জনের শরীরে।
বিহারেও করোনার সংক্রমণ সন্দেহ করা হচ্ছে। গুরুগ্রামে এক পেটিএম কর্মীর শরীরেও ধরা পড়েছে মারণ রোগের জীবাণু। এদিকে ইতালি থেকে আসা পর্যটকের দলেও বাড়ছে সংক্রমণের আশঙ্কা। স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে মোট ১৬ জন ইতালিয় পর্যটক করোনা আক্রান্ত। সংক্রমণ ছড়িয়েছে তাঁদের এক গাড়ি চালকের শরীরেও।
ভারত সরকার সূত্রে খবর, গত মাসেই দিল্লির বিমানবন্দরে নেমেছিলেন ২৩ জন ইতালিয় পর্যটকের একটি দল। তাঁদের মধ্যে ১৫-১৬ জনের একটি দল দিল্লি থেকে রাজস্থানে গিয়েছিলেন বলে খবর। প্রথমে জয়পুরে এক ইতালিয় পর্যটকের শরীরে করোনার জীবাণু মিলেছিল।
তাঁকে জয়পুরের হাসপাতালের আইসোলেশন কেবিনে রাখা হয়। পরে ধরা পড়ে, তিনি একা নন মোট ১৬ জন আক্রান্ত ভাইরাসের সংক্রমণে। এমনকি রোগ ছড়িয়েছে তাঁদের এক গাড়ি চালকের শরীরেও। এই পর্যটকদের থেকে রাজস্থানেও ভাইরাস সংক্রমণের আতঙ্ক ছড়িয়েছে। স্বাস্থ্য আধিকারিকরা বলছেন, যে হোটেলে উঠেছিলেন পর্যটকরা সেখানকার কর্মীদেরও মেডিক্যাল টেস্ট করানো হবে। স্ক্রিনিং চলবে বাকিদেরও।
এদিকে করোনার ভয়ে ইতিমধ্যেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে নয়ডার শ্রীরাম মিলেনিয়াম স্কুল। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, যে কোনও স্কুলেই এখন বড় জমায়েত অথবা স্কুল চত্বরে ভিড় জমানো বন্ধ করতে হবে।
কোনও পড়ুয়া বা তাদের অভিভাবকরা যদি সম্প্রতি বিদেশ থেকে ঘুরে আসেন তাহলে তাদের ১৪ দিন বাড়িতেই কোয়ারেন্টাইন করে রাখা হবে। সংক্রমণ ধরা পড়লে পাঠানো হবে আইসোলেশন ইউনিটে। নয়ডার স্কুলের ৪০ জন পড়ুয়ার মেডিক্যাল টেস্ট চলছে আইসোলেশন ক্যাম্পে। স্বাস্থ্য আধিকারিকরা বলেছেন, পরীক্ষার রিপোর্ট এলেই বোঝা যাবে বাচ্চাদের কেউ সংক্রামিত হয়েছে কিনা।
যদিও এই হাই অ্যালার্টের মধ্যেই এক বিচিত্র দৃশ্য নজরে পড়েছে, তাহল বিজেপির তরফ থেকে কলকাতা সহ বিভিন্ন জায়গায় সাধারন পথচারিদের মধ্যে মাস্ক বিলি করা।
তাঁরা নাকি করোনা সতর্কতা হিসেবেই এটা করছেন। কিন্তু প্রশ্ন হল যে মাস্ক তাঁরা বিলি করছেন তা দিয়ে ধুলো বালি হয়ত আটকানো যায় কিন্তু কোরোনা আটকানো যায়না। করোনা জীবানু আটকাতে গেলে অন্ততঃ এন-৯৫ মাস্ক চাই। আর এখানেই ধরেছেন মমতা ব্যানার্জী।
মূখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য , দিল্লির হিংসা শুধুই দেশে নয়, বিদেশেও মুখ পুড়িয়েছে বিজেপির আর নরেন্দ্র মোদির। আর সেটা থেকে পরিত্রাণ পেতেই এখন কোরোনা সংক্রমণের জুজু দেখানো হচ্ছে। বিজেপি চেষ্টা করছে মানু্ষের মধ্যে তৈরি হওয়া ঘৃনাকে সহানুভূতিতে রূপান্তরিত করতে।