নিজস্ব সংবাদদাতা: স্বামীর সঙ্গে অশান্তির জেরে নিজের ছেলেকেই অপহরণ করে খুন করার অভিযোগ উঠল মহিলার বিরুদ্ধে। অভিযোগ করলেন স্বয়ং স্বামী। খোদ কলকাতার বুকেই এমন ঘটনায় রীতিমত হতবাক পুলিশ। যদিও পুলিশের পক্ষ থেকে এখনও এই দাবি নিয়ে কিছুই বলা হয়নি কিন্তু অভিযুক্ত মহিলার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া পচাগলা দেহ পুলিশের বিস্ময় জাগিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার ওই দেহ উদ্ধার হয়েছে সল্টলেকের একটি বাড়ি থেকে।
পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে অনিল মাহেনসরিয়া নামে সল্টলেকের এক ব্যবসায়ী বিধাননগর (পূর্ব) থানায় তাঁর বড় ছেলের নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন। অনিলের দাবি, স্ত্রী গীতা মাহেনসরিয়াই তাঁর বড় ছেলে অর্জুন মাহেনসারিয়াকে (২৫) অপহরণ করে খুন করেছেন। অনিলের অভিযোগের ভিত্তিতেই বৃহস্পতিবার অনিলের স্ত্রীর সল্টলেকের বাড়িতে তল্লাশি চালায় পুলিশ। সেই তল্লাশিতে ওই বাড়ির ছাদ থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রায় কঙ্কাল হয়ে যাওয়া পচাগলা একটি দেহ।
খাস কলকাতায় সল্টলেকের এ জে ব্লকের এই ঘটনায় পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ওই কঙ্কালটি ব্যবসায়ীর বড় ছেলের। পারিবারিক বিবাদের জেরেই তাঁকে খুন করা হয়েছে। এবং পরিবারের কোনও সদস্যই খুন করেছেন। ঘটনায় সন্দেহভাজনদের তালিকায় রয়েছেন ওই ব্যবসায়ীর স্ত্রী-ও। গোটা ঘটনায় তদন্তে নেমেছেন বিধাননগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের কর্তারা।
কিন্তু কেন মহিলা নিজের ছেলেকে খুন করবে? অনিল পুলিশের কাছে নিজের স্ত্রীর বিরুদ্ধে আঙুল তুলে জানিয়েছেন, ‘ স্ত্রীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় তিনি তাঁর রাজারহাটের বাড়িতে একাই থাকতেন অন্যদিকে দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে সল্ট লেকে থাকতেন তাঁর স্ত্রী গীতা। অনিল ও গীতার দুই ছেলের বড় হল অর্জুন অন্যদিকে ছোট ছেলের নাম বিদুর আর মেয়ের নাম বৈদেহী। গত ২৯শে অক্টোবর তিনি জানতে পারেন যে ছেলেমেয়েদের নিয়ে নিজের বাবার বাড়ি রাঁচী চলে গিয়েছেন গীতা।
কয়েক দিন পরে অনিল খবর নিয়ে জানতে পারেন বিদুর এবং বৈদেহী মায়ের সঙ্গে রাঁচীতে থাকলেও সেখানে অর্জুন নেই। অথচ স্ত্রী গীতা ফোনে তাঁকে জানিয়েছিলেন, তাঁর সঙ্গেই বড় ছেলে রয়েছে। ওই ঘটনার পর থেকে স্ত্রীর উপর সন্দেহ হয় অনিলের। ছেলের খোঁজ শুরু করেন তিনি। তবে কোথাও অর্জুনের খোঁজ না পেয়ে অবশেষে বৃহস্পতিবার পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন।
এই অভিযোগের ভিত্তিতেই ওই দিন বিকেলে সল্টলেকে স্ত্রীর বাড়িতে যান তদন্তকারীরা। স্থানীয় সূত্রে খবর, মাস দুয়েক ধরেই ওই বাড়িটি তালাবন্ধ ছিল। সেই বাড়িতে তল্লাশি শুরু করে তাঁর তিনতলার ছাদে একটি পূর্ণবয়স্ক মানুষের পচাগলা কঙ্কালসার দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। দেহটি প্রায় পচেগলে কঙ্কালে পরিণত হয়েছে। ঘটনার পরই গীতা এবং তাঁর অপর ২সন্তানকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চলেছে পুলিশ। তবেই এই রহস্য উন্মোচন হতে পারে বলে পুলিশের ধারণা।