নিজস্ব সংবাদদাতা: চারচাকা দরজা খুলেই ছিটকে রাস্তায় পড়লেন প্রেমিকা আর তাতেই মাথাটা থেঁতলে গেল তাঁর। অন্যদিকে দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া গাড়ির ভেতরে পিষে গিয়ে মারা গেলেন প্রেমিকও। মঙ্গলবার সকাল সকাল হাওড়া-মুম্বাই ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে এই শিউরে ওঠার মত দুর্ঘটনা রীতিমত চমকে দিয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। পুলিশ এবং স্থানীয়রাই ধরাধরি করে প্রেমিকপ্রেমিকা নিয়ে ছুটেছিলেন হাসপাতালে কিন্তু বাঁচানো যায়নি কাউকেই। পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাট থানার পুলিশ জানিয়েছে মৃত ওই যুগলের নাম কমল প্রামাণিক (২১) এবং সায়ন্তনী পয়ড়্যা(১৮)।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন,জাতীয় সড়কে পাঁশকুড়ার দিক থেকে কোলাঘাট অভিমুখেই তীব্র গতিতে ছুটছিল মেরুন রঙের TATA CS গাড়িটি। গাড়ি চালাচ্ছিলেন কমল। বরদাবাড়ের কাছে বেখেয়ালে গাড়িটি ডিভাইডারের কাছে চলে আসতে আচমকাই ব্রেক কষে কমল। কিন্তু তাতেও নিয়ন্ত্রনে আনতে পারেননি তিনি। দুরন্ত গতিতে থাকা গাড়ি ঘষটাতে ঘষটাতেই গিয়ে ধাক্কা মারে ডিভাইডারে। কিছুটা শূন্যে উঠে গিয়ে বার পাঁচেক পাক খেয়ে পাশের লেনে উল্টে যায় গাড়িটি। আর এই শূন্যে ওঠার সময়েই গাড়ির দরজা খুলে যায়। ছিটকে পড়ে সায়ন্তনী।
পুলিশ সূত্র অনুযায়ী মঙ্গলবার সকালে আটটা নাগাদ ঘটা মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে কমল এবং সায়ন্তনী কোলাঘাট থানার বড়িষা এলাকার বাসিন্দা। কমলের একটি বাইক মেরামতের গ্যারেজ রয়েছে। সায়ন্তনী ক্লাশ ইলেভেনের ছাত্রী। দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এদিন সকালে প্রাইভেট টিউশনি পড়তে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল সে। তারপর চলে যায় কমলের কাছে। কমলের গাড়ি করে কয়েক পাক ঘুরে আসার পরিকল্পনা ছিল তাঁদের। উঠেছিল সায়ন্তনী। কমলই গাড়ি চালাচ্ছিল। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার পরই রাস্তায় ছিটকে পড়ে সেখানেই মৃত্যু হয় সায়ন্তনীর। মাথায় জোরালো আঘাত ছিল তাঁর। অন্যদিকে গাড়ির মধ্যে চালকের আসনেই দুমড়ে যাওয়া গাড়িতে খাঁচা বন্দি হয়ে পড়ে কমল।
পুলিশ এসে তাকে বন্ধ গাড়ির ভেতরে দুমড়ে যাওয়া খাঁচা বন্দি অবস্থা থেকে উদ্ধার করে । স্থানীয়দের সহায়তায় দুজনকেই নিয়ে যাওয়া হয় পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। সেখানেই সায়ন্তনীকে মৃত বলে ঘোষনা করা হয় আর দুপুরে মৃত্যু হয় কমলের। আগেই জ্ঞান হারিয়েছিল সে ফলে সে জেনে যেতেই পারেনি যে আগেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর প্রেমিকার। জোড়া মৃত্যুর ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে গ্রামে।