নিজস্ব সংবাদদাতা: বছরের শুরুতেই খড়গপুর শহরে শ্যুট আউটে মৃত্যু হল হল এক ২৯বছরের যুবকের। ভর সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে খড়গপুর শহরের অপরাধের মানচিত্রের প্রান কেন্দ্র সেই মথুরাকাটিতেই। প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে মৃত যুবকের নাম অর্জুন সোনকার।খড়গপুর শহরেরই সুভাসপল্লী ও খরিদার সংযোগস্থল ১৯নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা অর্জুনের বাবা হেমা সোনকার এক সময়ের পরিচিত সক্রিয় কংগ্রেস কর্মী বলেই জানা গেছে। খড়গপুর পুরসভার প্রাক্তন পৌরপ্রধান বর্তমান তৃনমূল নেতা রবিশঙ্কর পান্ডের অনুগামী কর্মী ছিলেন হেমা। সেই সময় কংগ্রেসের গোলবাজার অফিসে প্রায়ই দেখা যেত হেমা সোনকারকে। রবিশঙ্কর পান্ডের দলত্যাগের পর নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে হেমা। যদিও বাবার মত রাজনৈতিক যোগ ছিলনা নিহত যুবক অর্জুনের বরং একসময়ে খড়গপুর শহরের কুখ্যাত মাফিয়া ডন নিহত শ্রীনু নাইডুর সঙ্গে তাঁর সংযোগ ছিল বলেই প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে।
প্রাথমিকভাবে জানা গেছে ঘটনাটি ঘটেছে মথুরাকাটির বেবি রানী গ্রাউন্ড বলে পরিচিত রেলের খোলা মাঠে। গেটবাজারের পেছন দিক দিয়ে জগন্নাথ মন্দির ছড়িয়ে যে রাস্তা বিগবাজারকে ডান দিকে রেখে সোজা নিমপুরা অভিমুখে চলে যাচ্ছে সেই রাস্তার যে অংশে রামবাবুর দুর্গাপুজা ও মেলা হয়ে থাকে তার পেছনের দিক দিয়ে একটি রাস্তা মালঞ্চ পেট্রলপাম্প চলে গিয়েছে। তারই ডান দিকের ফাঁকা অংশটি বেবি রানী গ্রাউন্ড বলে পরিচিত। ঘটনা চক্রে জায়গাটি রামবাবুর মালঞ্চ রোডের বাড়ির ঠিক পেছনের দিকেই।
স্থানীয় ভাবে জানা গেছে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার আশেপাশে ঘটনাটি ঘটেছে। বাইকে ছিল অর্জুন। ওখান দিয়ে যাওয়ার সময় কেউ বা কারা তাকে দাঁড় করায় এবং কথা বলতে বলতেই গুলি করা হয়। দুটি গুলি করা হয়েছে বলে কেউ কেউ দাবি করেছেন। একটি গুলি নাভির ঠিক ওপরেই লাগে। আরও একটি ক্ষত রয়েছে বুকের বাঁ দিকে কালো বৃত্তের ঠিক নিচেই। এই দুটি গুলিই করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে পুলিশ ময়নাতদন্তের পরই নিশ্চিত করে বলতে পারবে বলে জানিয়েছে।
রবিশঙ্কর পাণ্ডে জানিয়েছেন, ‘আমি শুনেছি ঘটনাটি। হাসপাতালে আনার পথেই যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর পেলাম। এক সময় আমি যখন কংগ্রেস করতাম তখন ওর বাবার সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ হত। খরিদা গুরুদুয়ারার পেছন দিকেই ওদের বাড়ি।”
প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে খড়গপুরের অপরাধ জগতের সঙ্গে যুক্ত ছিল অর্জুন। জুয়া, সাট্টা ইত্যাদির সাথে যুক্ত হওয়ার পাশাপাশি বেআইনি অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। একটি অসমর্থিত সূত্র জানিয়েছে একটি গুলি চালানো ঘটনাতেও অভিযুক্ত ছিল অর্জুন। যে এলাকায় এই ঘটনাটি ঘটেছে সেই এলাকায় আবার খড়গপুরের জেলবন্দী মাফিয়াডন রামবাবুর সাকরেদরা সক্রিয়। কিছুদিন আগেই এই মাঠেই এক তরুণী গণধর্ষিতা হয়েছিলেন। ফলে সব মিলিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়।
এদিকে ৬ দিনের মাথায় খড়গপুর শহরে দ্বিতীয় অপরাধের ঘটনা এটি। গত ২৫শে ডিসেম্বর বোগদা বা খড়গপুর রেলস্টেশন সংলগ্ন একটি পেট্রলপাম্প থেকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনার পরই এই ঘটনা আর দুটি ঘটনাই কিন্তু ঘটেছে ঠিক সন্ধ্যার পরই। অর্থাৎ খুব রাতে ঘটনা গুলি ঘটছে এমনটা নয়। ঘটনার পরই শহর জুড়ে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। অর্জুনের মৃতদেহ রাখা হয়েছে খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালের মর্গেই।