Homeএখন খবরBlood Donation: মায়ের হাতেই 'রক্ত-খড়ি' খড়গপুরের রুদ্র, সায়ন, সৈকত, দেবকুমারদের! এখনও তাই...

Blood Donation: মায়ের হাতেই ‘রক্ত-খড়ি’ খড়গপুরের রুদ্র, সায়ন, সৈকত, দেবকুমারদের! এখনও তাই রক্ত দিয়ে মায়ের হাত থেকেই গোলাপ নেন চারমূর্তি

It's an untold story of those mothers in Khargpur that never stopped taking their sons to the first school when they were young. But when the boys was 18 years old, they also took them to the blood donation camp. Swapna Majumder, Sushmita Bagchi, Devmita Kundu and Seema Dharosia took their child at the age of 3 in front of lord Saraswati and learn them how to write. But they did not stop there. As the children were not yet 18 years old, they took them by the hand and brought them to the blood donation camp. And since then, four mothers have been present in the blood donation camp every time. Rudra, Sayan, Saikat and Devkumar still take Red Roses as gifts from their mothers after giving blood.

বিভূ কানুনগো : আর পাঁচজন মায়ের মতই ৩ বছর বয়সে নিজের সন্তানকে কোলে বসিয়ে হাতেখড়ি দিয়েছিলেন খড়গপুরে চার গৃহবধূ, স্বপ্না মজুমদার, সুস্মিতা বাগচী, দেবমিতা কুন্ডু আর সীমা ধরোসিয়া। কিন্তু সেখানেই থেমে থাকেননি তাঁরা। সন্তানদের ১৮বছর বয়স হতেনা হতেই তাঁদের হাতে ধরে রক্তদান শিবিরে নিয়ে এসে ‘রক্তখড়ি’ও করেছিলেন তাঁরা। আর তারপর থেকেই প্রতিবারই রক্তদান শিবিরে উপস্থিত থাকেন চার মা। খড়গপুরের রুদ্র, সায়ন, সৈকত আর দেবকুমাররা আজও তাই রক্ত দেওয়ার পর মায়ের হাত থেকে উপহার হিসাবে নিয়ে থাকেন রক্তগোলাপ।

রবিবার, ১১ই জুলাই গোলবাজার দুর্গামন্দিরে সেই বিরল ঘটনার আরও একবার স্বাক্ষী থাকল খড়গপুর। এদিন খড়গপুরের সাংস্কৃতিক ও সমাজসেবি সংগঠন ‘শঙ্খমালা’র ৭ম রক্তদান শিবিরে চারমূর্তির সাথে হাজির হয়েছিলেন তাঁদের মায়েরাও। শুধুমাত্র নিজের সন্তানদের জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়াই নয়, পাশাপাশি সমাজের সন্তান হয়ে ওঠা আর সমাজবদ্ধ জীব হিসাবে নিজেদের কর্তব্যপালনের পাঠও দিয়ে চলেছেন এই মায়েরা। শুধু কথায় নয়, হাতে ধরে সন্তানকে সমাজ সচেতনতার এই পাঠ ক’জন মা এইভাবে পড়াতে পারেন!

শঙ্খমালার সম্পাদক কৃশানু আচার্য্য জানান, “এটা আমাদের গর্ব যে রুদ্র, সায়ন, সৈকত, দেবকুমার রা জীবনের প্রথম রক্তদান শুরু করেছিলেন আমাদেরই আয়োজিত শিবির থেকে। সেদিন ওদের নিয়ে এসেছিলেন ওদের মায়েরা। আর তারপর থেকে প্রতিবারই ওরা রক্তদান করে। প্রতিবারই আসেন ওদের মায়েরা। আমরা ওই মায়েদেরই বলি আপনারাই রক্তগোলাপ তুলে দিন ওদের হাতে। এই যে অনুশীলন এটাই আমাদের অন্যান্য রক্তদান শিবির থেকে একটু আলাদা করে দেয়। ওই মায়েদের দেখে যদি উৎসাহিত হন অন্য মায়েরাও। যদি এভাবেই এগিয়ে আসেন নিজেদের সন্তানদের নিয়ে। আমি সংগঠনের পক্ষ থেকে এমন মায়েদের সশ্রদ্ধ অভিনন্দন জানাই।”

স্বপ্না, সুস্মিতা, দেবমিতা, সীমারা একেবারেই গৃহবধূ। কিন্তু ঘর সংসারের কাজ আর স্বামী-সন্তানের পাশে দাঁড়ানোর মধ্যেই নিজেদের সীমাবদ্ধ রাখেননি। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে যখন একেকটি পরিবারের সমস্ত সদস্যই কোভিড পজেটিভ হয়ে হোম-আইশোলেশনে ছিলেন তখন এই শঙ্খমালার আহ্বানেই সাড়া দিয়ে সেই পরিবারগুলি করোনা মুক্ত না হওয়া অবধি নিজেরাই রান্না করে বাড়িতে বাড়িতে খাবার পাঠিয়েছেন। কৃশানু জানিয়েছেন, ‘এই পর্বে করোনা আক্রান্ত পরিবারকে এখনও অবধি আমরা প্রায় ৬০০টি মিল সরবরাহ করেছি যার একটা বড় অংশই নিজেদের রান্নাঘর থেকে পাঠিয়েছেন এই মায়েরাই। তাঁরা শুধু রান্না করে দিয়েছেন এমনটাই নয়। রান্নার যাবতীয় উপাদানও তাঁরাই দিয়েছেন।”

২২ থেকে ২৬ বছরের এই চারজনের কেউ ভিন রাজ্যে কেউ এ রাজ্যের অন্যত্র পেশাগত পাঠে নিয়োজিত। কেউ চাকরি করেন, কেউ ব্যবসা।কেউ ফার্মাসি, কেউ ইঞ্জিনিয়ারিং, কেউবা অন্যপাঠ নিচ্ছেন। কিন্তু মায়েদের কাছ থেকে আজও নিয়ে থাকেন সমাজ সচেতনতার পাঠ। চার মা’য়ের অনুভূতি আর ভাবনাও যথেষ্ট পরিষ্কার। চারজনই প্রায় একই প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে বলেছেন, ‘মানুষের বিপদে অন্যের ছেলেকে ঝাঁপিয়ে পড়তে বলব আর নিজের ছেলেকে ঘরের মধ্যে আগলে রাখব। এমন ভাবনা হল সেই কল্পনার দুধপুকুর, যেখানে অন্যরা দুধ ঢালবে এই মনে করে সবাই এক কলসি করে জল ঢেলে আসে আর ভোর বেলায় দেখা যায়, দুধের বদলে জলেরই পুকুর হয়ে দাঁড়ায়।”

তাঁরা বলেন,”এই ফাঁকিবাজিটা আসলে আমাদের সবাইকেই আজ শুন্যতে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে। আমরা মনে করি এবং ছেলেদেরও বলি, আমাদের প্রয়োজনে আমরা ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে তখনই রক্ত নেওয়ার অধিকার পেতে পারি যদি আমরা নিজেরা রক্তদান করি। এই যে এখনও শুনতে পাই রক্তের অভাবে মৃত্যু। এই ফাঁকিবাজিটা কিন্তু আমাদেরই তৈরি করা যেটা হয়ত একদিন আমাদের যে কারুর জন্যই অপেক্ষা করছে।”

RELATED ARTICLES

Most Popular