নিজস্ব সংবাদদাতা: দিনটা খুশির হলেও খুশির হলনা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মেদিনীপুর কোতোয়ালি থানার অন্তর্গত রাম নগরের দুই কিশোরের পরিবারের জন্য। বুধবার এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় খড়গপুর চৌরঙ্গী থেকে সামান্য দূরত্বে এক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে ওই দুই কিশোর। পুলিশ জানিয়েছেন ১৫/১৬ বছরের ওই নিহত কিশোরদের নাম হল শাহবাজ খান ও নাসির আলম ওরফে ভলু খান।
অনুমান করা হচ্ছে মহামারি আইন অনুযায়ী রাত ৯টার মধ্যে বাড়ি ফিরতে চাওয়ার তাড়াতেই ঘটেছে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি। ঘটনাটি ঘটেছে খড়গপুর গ্রামীন থানার অন্তর্গত চেন্নাই-রানীগঞ্জ ৬০নম্বর জাতীয় সড়কের ওপরে, সতকুই পেরিয়ে মেদিনীপুর অভিমুখে একটি পেট্রোল পাম্পের কাছাকাছি। দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত এক ১৮বছর বয়সী তরুণ সেক শাহিদকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে তিনজনই রামনগরের বাসিন্দা। তারা একটি স্কুটিতে (WB 34BK/ 8280) করে খড়গপুর থেকে মেদিনীপুরের দিকে যাচ্ছিল। ঘটনাটি ঘটেছে রাত পৌনে ৮টা নাগাদ। ওই পেট্রোলপাম্পের কাছাকাছি দুরন্ত গতিতে থাকা স্কুটিটি যে কোনো কারনে রাস্তার ওপরেই পিছলে যায়। স্কুটি চালাচ্ছিল শাহিদ। সে টাল সামলাতে না পেরে পড়ে যায়। পেছনে থাকা শাহবাজ ও নাসির পড়ে যায় রাস্তার তাদের ডান দিকে অর্থাৎ রাস্তার ওপরে। ঠিক ওই সময় পেছনে থাকা লরি কিংবা কোনোও মালবাহী গাড়ি তাদের দুজনকেই পিষে দিয়ে চলে যায়। স্থানীয়রা ঘটনাটি দেখতে পেয়েই ছুটে আসে। ওই দুই কিশোরের জন্য অবশ্য কিছুই করার ছিলনা। ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারিয়েছিল তারা। আহত শাহিদকে নিয়ে প্রথমে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে পুলিশের উদ্যোগে তাঁকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসা চলছে তার।
রাস্তার ওপর দুই কিশোরের দেহ পড়ে থাকায় কিছুক্ষনের জন্য জাতীয় সড়কে যান চলাচল থমকে যায়। পুলিশ দ্রুত মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করে খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠায় ময়নাতদন্তের জন্য। অল্প সময়ের মধ্যেই রাস্তা পরিষ্কার করে ফের যান চলাচল শুরু হয়ে যায়। এদিকে ঘটনার খবর পৌঁছাতেই স্তব্ধ হয়ে যায় রামনগর ও তার আশেপাশের গ্রামগুলি। বুধবার বকরি ঈদের আনন্দে মশগুল ছিল ওই এলাকা। আলোর রোশনাই, মাইকের গানে গমগম করছিল এলাকা। মর্মান্তিক দুর্ঘটনার খবর পৌঁছাতেই শোকের আবহ ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়।
এদিকে কেন এত রাতে ওই তিনজন নিজেদের এলাকা ছেড়ে খড়গপুর এলাকায় এসেছিল তা নিয়ে ধ্বন্দে রয়েছে পুলিশ। খড়গপুরে তারা কোনও আত্মীয় বাড়ি বা পরিচিতের বাড়ি এসেছিল এমন সূত্র এখনও পায়নি পুলিশ। পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, রাত্রি ৯টার পর অযথা বাইরে থাকার জন্য পুলিশ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ঠিকই কিন্তু তারা যদি সেরকম কোনও কারণে এদিকে আসত সেই কারন যথাযথ হলে তাদের তাড়ার কোনও কারন থাকতনা। তাছাড়া আজ ঈদ ছিল, মানুষের আনন্দে একটু মাত্রা ছাড়ালেও পুলিশ ততটা কিছু বলত না। কোথাও একটা মনে হচ্ছে পাছে রাত ৯টা বেজে গেলে পুলিশি ঘেরার মধ্যে পড়তে হয় সেটা এড়ানোর একটা চেষ্টা ছিল পাছে পুলিশি জেরায় সত্যিটা বেরিয়ে পড়ে। ঠিক কী কারণে ওই তিনজন এদিকে এসেছিল তা জানতে চায় পুলিশ এবং সেই কারণে শাহিদ সুস্থ হলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় তারা।