নিজস্ব সংবাদদাতা: গোপনসূত্রে খবর পেয়ে এক গুলিবিদ্ধ কিশোরের দেহ কবর থেকে উদ্ধার করল খড়গপুর পুলিশ। খড়গপুর লোকাল থানার অন্তর্গত গোকুলপুর স্টেশন লাগোয়া কাঁটাপাল নামক এলাকায় এই ঘটনাকে ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাস্থল গোকুলপুর স্টেশন বাজার থেকে ২০০মিটার দূরত্বে। ঘটনাস্থলে রয়েছেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রানা মুখোপাধ্যায় সহ একাধিক পুলিশ আধিকারিক। কীভাবে ওই কিশোর গুলিবিদ্ধ হল আর কেনই বা তাঁকে রাতারাতি কবর দেওয়া হল তাই নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ঘটনায় আরও ১জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে জানা গেছে।
শনিবার বেলার দিকে মৃতদেহটি উদ্ধার করার পর দেখা যায় গত ২৪ঘন্টার মধ্যেই গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছে ওই কিশোর। দেহটি উদ্ধার করে নিয়ে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে আসা হয়েছে খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালের পুলিশ মর্গে। বিষয়টি নিয়ে এখুনি মুখ খুলতে রাজি হয়নি পুলিশ। পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘পুরো বিষয়টির প্রাথমিক তদন্তের স্তরে রয়েছে। এখুনি কিছু বলার মত নয়।’ ঘটনায় এক কারখানার নিরাপত্তারক্ষীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
স্থানীয় একটি সূত্র জানাচ্ছে খড়গপুর শিল্পতালুকে বেশ কয়েকটি কারখানা বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। মাঝে মধ্যেই কারখানাগুলির প্রাচীরের ভাঙা অথবা অরক্ষিত অংশ দিয়ে, কখনও বা প্রাচীর টপকে কারখানার যন্ত্রাংশ চুরি করে নিয়ে যায় কিছু মানুষ। আর সেই কারনে কোনও কোনও বন্ধ কারখানায় গানম্যান বা সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন থাকে। তাদেরই গুলিতে আহত হয়ে ওই কিশোরের মৃত্যু হয় থাকতে পারে এমনটাই অনুমান করা হচ্ছে। জানা গেছে ওই কিশোরের নাম কাশীনাথ দলুই, বয়স আনুমানিক ১৫/১৬বছর। কাশিনাথের বাড়ি কাঁটাপাল গ্রামেই।
গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, গতকাল বিকাল নাগাদ ৩ টা নাগাদ ঘটনার খবর ছড়িয়েছিল এলাকায় যে ২জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। কাশিনাথের বাড়ি কাঁটাপাল থেকে ওই বন্ধ কারখানাটির দূরত্ব প্রায় ৫০০মিটার। গ্রামবাসীরা দেখতে পায় আহত দুজনকে কয়েকজন মিলে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। এরমধ্যে একজনের পায়ে গুলি লেগেছিল বলে গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন। সে বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। কাশীনাথ হয় ঘটনাস্থলে কিংবা কিছুক্ষণ পরে মারা যায়। সম্ভবতঃ বিষয়টি জানাজানি হয়ে পড়তে পারে এই ভয় থেকেই তাকে পুঁতে দেওয়া হয়।
পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে গতকালই তাদের কাছে খবর আসে যে দুজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে এবং একজনের মৃতদেহ পুঁতে ফেলা হয়েছে। কিন্তু ঠিক কোথায় দেহ পোঁতা হয়েছে সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারছিলনা পুলিশ। পাশাপাশি এলাকায় তীব্র উত্তেজনা থাকায় সন্ধ্যার সময় দেহ উদ্ধারের ঝুঁকি নেয়নি পুলিশ। শনিবার বড়সড় বাহিনী নিয়েই অভিযান চালিয়ে মাটি খুঁড়ে দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। কাশীনাথের পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে তাদের পরিবারের ছেলে চুরি করতে যায়নি, কারখানার পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। নেহাতই সন্দেহের বশে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে তাকে। যদিও পরিবারের এই দাবি এখুনি মানতে নারাজ পুলিশ। পুলিশ ময়নাতদন্তের রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছে। তাছাড়া প্রশ্ন উঠছে যদি খুনই হয় তবে পুলিশে অভিযোগ না জানিয়ে দেহটি পুঁতে ফেলা হল কেন?