নিজস্ব সংবাদদাতা: জেলার মধ্যে সর্বাধিক আক্রান্তের শহর যে কেবলমাত্র মাস্ক না পরার কারনেই ডুবছে তা জানিয়ে দিলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বা সিএমওএইচ নিমাই চন্দ্র মন্ডল। মঙ্গলবার জেলার করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন করার জন্য ঘাটাল মহকুমা হাসপাতাল ও ঘাটাল সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালের পরিকাঠামো সরে জমিনে পরিদর্শনে এসেছিলেন তিনি। সেখানেই সাংবাদিকদের এমনটা জানিয়েছেন মন্ডল।
সাংবাদিকরা তাঁকে প্রশ্ন করেন খড়গপুরের পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হয়ে পড়ছে কেন? প্রত্যুত্তরে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রথমে বলেন, খড়গপুরে প্রচুর মানুষের আনাগোনা রয়েছে। এখনও বাইরে থেকে পরিযায়ী শ্রমিক আসছে, ট্রেনও আসছে ফলে একটা সমস্যা হচ্ছে। সাংবাদিকদের পরের প্রশ্ন ছিল, যদি ট্রেন বন্ধ হয়ে যায় তাহলে খড়গপুরের সংক্রমন ছড়ানো বন্ধ হয়ে যাবে বলে মনে করছেন? তখনই সিএমওএইচ বলেন, ” ওখানে আরও একটা সমস্যা হচ্ছে করোনা বিধি না মানার অভ্যাস। মাস্ক না পরা, হাত না ধোয়া ইত্যাদি। এখনও অনেক জায়গায় দেখা যাচ্ছে মাস্ক না পরেই মানুষ বিভিন্ন জায়গায় যাতায়ত করছেন।”
যদিও সিএমওএইচ প্রথম নয়, মাস্ক ব্যবহারের ব্যাপারে বারংবার পুলিশ প্রচার করলেও, ধরপাকড় করলেও অভ্যাস খুব একটা বদলায়নি। কেবল জনগনই নয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মধ্যেও এই প্রবনতা বহাল রয়েছে। আনলক পর্বে বিভিন্ন ইস্যুতে আন্দোলনে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মাস্ক না পরা, সামাজিক দুরত্ব বিধি না মানার দৃশ্য বারংবার দেখা গিয়েছে। অনেকের মতে জনগনকে নিজের মুখ দেখানোর প্রবনতা থেকে বেরিয়ে আসতে পারছেননা তাঁরা।
উলেখ্য ইতিমধ্যেই খড়গপুরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৪০ছুঁয়ে গেছে এবং শহরের ১০জন সক্রিয় কোভিড রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। শহরে করোনা সংক্রমন নিয়ে মৃত্যু হয়েছে ৪জনের। বর্তমানে প্রায় শহরের প্রতিটি কোনাতেই কোভিড আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। আক্রান্তের তালিকায় সর্বনিম্ন ১৭এবং সর্বোচ্চ ৭০ বছরের বৃদ্ধ রয়েছেন। আক্রান্তের মধ্যে ৩ জন মহিলা যার মধ্যে একজনের বয়স মাত্র ১৯ বছর রয়েছেন। মৃতের তালিকায় সর্বনিম্ন ৪৭ ও সর্বোচ্চ ৬২ বছরের ব্যক্তি রয়েছেন এবং তাঁদের কারুরই বাইরে যাওয়ার রেকর্ড নেই শুধু একজন কর্মসূত্রে দিন কয়েক ট্রেনে পূর্ব মেদিনীপুর যাতায়ত করেছেন।
মঙ্গলবার অবশ্য শহরে নতুন কোনো আক্রান্তের সন্ধান মেলেনি। সোমবার গ্রহন করা ১৩৭টি নমুনার সবই নেগেটিভ এসেছে। মঙ্গলবার নতুন করে ৭২ জনের নমুনা সংগ্ৰহ করা হয়েছে। সিএমওএইচ দাবি করেছেন, জেলার পরিস্থিতি আগের চেয়ে ভাল। পূর্ব মেদিনীপুরের বড়মার ওপর নির্ভরশীলতা কাটিয়ে জেলাতেই করোনা রুগীর চিকিৎসা হচ্ছে।