নিজস্ব সংবাদদাতা: শেষ অবধি করোনায় আক্রান্ত হলেন খড়গপুর শহরের অন্যতম শ্রেষ্ঠ করোনা যোদ্ধা খড়গপুরের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সুকোমল কান্তি দাস। এবং আক্রান্ত হলেন সেই বিতর্কিত রাবন দহনের ঠিক ৫ দিনের মাথায় যে রাবন দহন নিয়ে বিতর্ক আর সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে গোটা রাজ্যে। প্রশ্ন উঠেছে করোনা বিধি উড়িয়ে দিয়ে হাজার হাজার মানুষের সমাগমে খড়গপুরে ওই রাবন দহন হল কী করে? ঘটনাচক্রে ওই দিন ব্যারিকেডের সামনেই দাঁড়িয়ে এসডিপিওকে দেখা গিয়েছিল জনতাকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করতে যা কার্যত এক সময় ব্যর্থ হয়ে পড়েছিল। নিয়মনীতি ভেঙে উপচে পড়েছিল জনতা।এই অনুষ্ঠান থেকেই তিনি সংক্রমিত হয়েছেন এমনটা বলা না গেলেও এই অনুষ্ঠানের পরেই যে তিনি সংক্রমিত হয়েছেন এটা নিশ্চিত আর এখানেই নতুন করে বিতর্ক ফের মাথা চাড়া দিয়ে উঠল রাজ্য জুড়ে।
শুক্রবার সকালেই খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে আ্যন্টিজেন পরীক্ষায় পজিটিভ এসেছে তাঁর। এরপরেই কলকাতার আর.এন.টেগোর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে তাঁকে। খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণেন্দু মুখার্জী জানিয়েছেন, ঠান্ডা লাগার উপসর্গ নিয়ে এসেছিলেন এসডিপিও সাহেব। তাঁর আ্যন্টিজেন পরীক্ষায় পজিটিভ এসেছে। ইতিমধ্যেই খড়গপুর মহকুমার দায়িত্ব নিয়ে এসেছেন ডিএসপি-ডিইবি। দ্য খড়গপুর পোষ্টকে জানান, “সামান্য জ্বর এবং হালকা মাথা ধরা ছিল ওনার। এখন জ্বরটা কমেছে, মাথা ধরাও ভাল হয়েছে। পালস্ অক্সিমিটারে ওনার রক্তে অক্সিজেনের মাত্রাও স্বাভাবিক। সব কিছু মিলিয়ে আপাতত ভালই আছেন।”
উল্লেখ্য করোনা কালীন সময় থেকেই করোনা মোকাবিলা এবং লকডাউন বলবৎ করতে অসম্ভব দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন সুকোমল কান্তি দাস। এবং এই কাজ করতে গিয়ে অনেকেরই বিরাগভাজন হয়েছেন তিনি কিন্তু তাতে নিজের কর্তব্য থেকে সরেননি। উল্লেখ্য রাবন দহনের মাস খানেক আগেই এসডিপিও এবং তাঁর দেহরক্ষীর দল করোনা পরীক্ষা করালেও তাঁদের প্রত্যেকেরই নেগেটিভ এসেছিল। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্নটা উঁকি দিচ্ছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার খড়গপুর শহরের ৩নম্বর ওয়ার্ডের ঈদগা ময়দানে বিশ্ব নবী দিবস উপলক্ষ্যে একটি বস্ত্রদান কর্মসূচীতে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। সেখানে খড়গপুরের মহকুমা শাসক বৈভব চৌধুরী, জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী শামসুদ্দিন আহমেদ সহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। খুব স্বাভাবিক ভাবেই তাঁদেরও সংক্রমনের ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে।
অন্যদিকে শুক্রবারই খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে অসুস্থ অবস্থায় ৭৫ বছরের বৃদ্ধা ভর্তি হতে এলে তাঁরও আ্যন্টিজেন পরীক্ষা করা হলে পজিটিভ ধরা পড়ে আর কিছুক্ষণের মধ্যেই মৃত্যু হয় ওই বৃদ্ধার। সুপার ডঃ মুখার্জী জানিয়েছেন ডিভিসি এলাকায় বাড়ি ওই বৃদ্ধার। এদিন আরও একজনের আ্যন্টিজেন পরীক্ষায় পজিটিভ মিলেছে। অন্যদিকে এসডিপিওর নমুনা সংগ্ৰহ করা হয়েছে আরটি/পিসিআর পরীক্ষার জন্য।