নিজস্ব সংবাদদাতা: গত ২২দিন ধরে রেশন না পেয়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়ল জনতা। মঙ্গলবার খড়গপুর শহরের কৌশল্যা ঝাপেটাপুর রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে জনতা। খবর পেয়ে ছুটে আসে পুলিশ। জনতাকে আশ্বস্ত করে দ্রুত রেশন দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। এরপরেই অবরোধ প্রত্যাহার করে জনতা যদিও বুধবার খাদ্য নিয়ামকের দপ্তরে ফের জমায়েত হতে চলেছে ক্ষুব্ধ জনতা।
আন্দোলনকারীদের বক্তব্য রেশন না দিয়ে চোরা পথে রেশন সরিয়ে দিচ্ছেন ওই রেশন ডিলার। তাঁদের আরও দাবি গত মাসেও শেষের দিকে পর্যাপ্ত রেশন দেননি ওই ডিলার। ঘটনাক্রমে ওই রেশন ডিলার শহরের এক প্রভাবশালী তৃণমূল নেতার আত্মীয় হওয়ায় বিষয়টির মধ্যে রাজনীতি ঢুকে পড়েছে। বিজেপির পক্ষে থেকে অভিযোগ করা হয়েছে শাসকযোগ থাকার কারনেই বারবার বেনিয়ম করা স্বত্ত্বেও ছাড় পেয়ে যাচ্ছেন ওই ডিলার।
জানা গেছে শহরের ২৫নম্বর ওয়ার্ডের ওই রেশন ডিলার বিশ্বরূপ দাস চৌধুরীর নিজস্ব কোনো ডিলারশীপ নেই তিনি সন্তোষ আগরওয়াল নামে এক ডিলারের রেশন নিয়েই একটি কাউন্টার চালান যেখানে প্রায় ৩০০গ্রাহক আছে। অভিযোগ এই গ্রাহকদের অধিকাংশই এই মাসের গোড়া থেকে রেশন পাচ্ছেননা। অভিযোগকারী এক গ্রাহকের অভিযোগ, “গত ২২ দিন ধরেই বিশ্বরূপ বলে যাচ্ছেন আজ রেশন দেব, কাল রেশন দেব। লকডাউনে এই রেশনই আমাদের ভরসা। অথচ আজ অবধি রেশন মেলেনি। বাধ্য হয়েই আমরা রাস্তায় নেমেছি।”
অভিযুক্ত বিশ্বরূপ বাবুর বক্তব্য, ” ডিস্ট্রিবিউটর আমাকে রেশন সরবরাহ করছেনা যার ফলে আমি রেশন দিতে পারছিনা।” ডিস্ট্রিবিউটর অজয় বাকলি জানান,”ওনাকে আমি রেশনের সামগ্রী কোনও দিনই সরবরাহ করিনি কারন উনি ডিলারই নন। এই এলাকার যিনি নথিভুক্ত ডিলার সেই সন্তোষ আগরওয়াল তাঁর প্রয়োজন মত রেশনদ্রব্য পেয়ে গেছেন।”
সন্তোষ আগরওয়াল জানাচ্ছেন, ” আমি ডিস্ট্রিবিউটারের কাছ থেকে মাল পেয়েই বিশ্বরূপকে দিয়ে দিয়েছি। কারন ওই কাউন্টার উনিই দেখেন।”
ঘটনাক্রমে বিশ্বরূপ বাবু খড়গপুর শহরের অন্যতম তৃণমূল নেতা বিবেকানন্দ দাস চৌধুরীর ভাইপো। শহরের বিজেপি নেতা গৌতম ভট্টাচার্য জানান, ” তৃনমূল নেতার আত্মীয়তার সুযোগ নিয়েই মানুষের রেশন চুরি করা হচ্ছে। সরকারের দেওয়া রেশন কোথায় চালান হয়ে যাচ্ছে তা তদন্ত করে দেখা হোক।”
বিবেকানন্দ দাস চৌধুরী জানান, “এই বিষয়ের সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। অযথা এর মধ্যে রাজনীতি আনা হচ্ছে।”
খড়গপুর শহরের দায়িত্বে থাকা খাদ্য নিয়ামক দপ্তরের পরিদর্শক সৌম্য চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “এর আগেও বেশ কিছু অভিযোগ এসেছে এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে। আমরা কাউন্টারটা বন্ধ করে দেওয়ার কথা চিন্তা ভাবনা করছি।”