নিজস্ব সংবাদদাতা: মাথার চুল ছিঁড়তে ইচ্ছা করছে ঠাকুর মশাইয়ের। মার্চ মাস থেকে চলছে করোনার দাপট। জেলাজুড়ে করোনার ভরা জলে ঘাই মারল করোনার ল্যাজ। এতদিন কিছুই হলনা, হবি তো হ একেবারে শেষ বেলায়! আর দু-চারদিন পেরিয়ে হলে কী এমন আকাশ পাতাল নষ্ট হয়ে যেত! এমন মূল্যবান সুযোগ হাত ছাড়া করে দিল হতভাগা করোনা! না, টাকা টা বড় কথা নয়, আসল কথা হল সম্মান। সরাসরি মূখ্যমন্ত্রীর হাত থেকে ভাতা নেওয়ার সুযোগটাই ঠাকুর মশাইয়ের হাত ছাড়া হয়ে গেল হতচ্ছাড়া করোনার জন্য। সত্য যুগ হলে অভিশম্পাত করে দিতেন, করোনার বংশ নির্বংশ হয়ে যেত কিন্তু কলিকালে বামুনের অভিশাপে কাজ হয়না। তাই মনখারাপ করেই বসে রয়েছেন বামুন ঠাকুর।
মঙ্গলবার খড়গপুর শহরের বিদ্যাসাগর শিল্পতালুকে আসছেন মূখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। প্রসানিক বৈঠক। করোনা কালের জন্য বহুদিন এই বৈঠক হয়নি। শেষ প্রশাসনিক বৈঠক হয়েছিল ডেবরায়। গতবছর সেপ্টেম্বর মাসে। আর শেষবার জেলায় এসেছিলেন ৯ডিসেম্বর, এই খড়গপুরেই। নবনির্বাচিত বিধায়ক প্রদীপ সরকারকে জেতানোর জন্য খড়গপুরবাসীকে ধন্যবাদ দিতে। মূখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক বৈঠক মানেই বিভিন্ন উপভোক্তাদের হাতে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুবিধা তুলে দেওয়া। কিন্তু এবার করোনা কাল তাই সব বাতিল। উপভোক্তাদের যা কিছু দেওয়ার জেলা প্রশাসনই তুলে দেবে। শুধু একটাই জিনিস নিজের হাতে করার কথা তার এবং তা হল সরকারের সদ্য চালু হওয়া পুরোহিত ভাতার প্রথম মাসের ভাতা প্রতীকী ভাবে তুলে দেওয়া দুজন পুরোহিতের হাতে।
উল্লেখ্য মুসলিমদের ইমাম ভাতা সহ নানা সুবিধা দেওয়ার জন্য হিন্দু একাংশের তীব্র সমালোচনা এবং বিজেপির প্রচার করা ‘ মুসলিম প্রীতি’র হিন্দুত্ববাদী প্রচার আটকাতেই মমতা ব্যানার্জী পুরোহিত ভাতা চালু করেছেন এমন অভিযোগ করেছেন বিরোধীরা। এবার রাজ্যের ৮০০০ পুরোহিতকে মাসিক ১০০০টাকা ভাতা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন এমনটাই দাবি অনেকের। অনেকে আবার মনে করেন, বিজেপির হিন্দু ভোটে ফাটল ধরাতেই এই কৌশল। প্রথম নেতাজি ইনডোরে উদ্বোধন হয়েছিল এই ভাতা দেওয়ার। তারপর পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় এই প্রথম মূখ্যমন্ত্রীর হাত ধরেই উদ্বোধন হবে এই প্রকল্পের। জেলায় হিসাব অনুযায়ী ৬০০ জন মত এই ভাতা পাবেন কারন ৮০০০ জন সমস্ত ব্লক এলাকায় ভাগ করে দিতে হবে।
ঠিক হয়েছিল ২ জনকে এই ভাতা মূখ্যমন্ত্রী নিজের হাতে তুলে দেবেন। সেইমত দুজন পুরোহিতকে ঠিক করা হয়। কোভিড প্রটোকল অনুযায়ী এই সভায় মূখ্যমন্ত্রীর আশেপাশে যাঁরাই থাকবেন সবার আরটি/পিসিআর আর একটু দুরে যারা থাকবেন তাঁদের আ্যন্টিজেন পরীক্ষা করতে হবে। দুই পুরোহিত সরাসরি মূখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে ভাতা নেবেন তাই তাঁদের আরটি/পিসিআর টেষ্ট করানো হয়। তাতেই একজনের পজিটিভ বেরিয়ে পড়েছে! ব্যস, মন খারাপ ঠাকুর মশাইয়ের। নিজের হাতে মূখ্যমন্ত্রীর হাত থেকে ভাতা নেওয়ার সুযোগ ফসকে গেল!