নিজস্ব সংবাদদাতা: গত বছর শুরু হওয়া লকডাউনের রেশন আগামী জুন মাস বরাদ্দ করেছিলেন মমতা ব্যানার্জী। সাধারণ মানুষের জন্য বরাদ্দ সেই রেশন সরকারকে ফাঁকি দিয়ে ঢুকে পড়ছে ব্যবসায়ী গুদামে। শনিবার খড়গপুর শহরের এক ব্যবসায়ীর গুদামে হানা দিয়ে এরকমই বস্তা বস্তা চাল, গম, আটা উদ্ধার করল পুলিশ। ঘটনায় এখনও অবধি ২জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁদের আদালতে পেশ করার পর ৩দিনের জন্য হেফাজতে নেওয়া হয়েছে পুলিশের তরফে।পুলিশ এবং খড়গপুর মহকুমা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, এই ২জনের চেয়েও বড় মাথা রয়েছে, যেখান থেকে এই রেশনদ্রব্য এসেছে গুদামে। সেই মাথা কে তার খোঁজ চলছে এই ২জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। খড়গপুর মহকুমা শাসক আজমল হুসেন জানিয়েছেন, যিনি এই কাণ্ডের মূলচক্রী তাঁর খোঁজ করছি আমরা। তিনি যতবড় লোকই হননা কেন রেহাই পাবেননা।
খড়গপুর পুলিশ সূত্রে জানা গেছে শুক্রবার রাতে পুলিশ ২০বস্তা গম সহ একটি পিকআপ ভ্যান আটক করে। জানা যায় ওই গম নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল আটা তৈরির উদ্দেশে। ওই পিকআপ ভ্যানকে আটক করার পর পিকআপ ভ্যানের চালক রমেশ রাওকে আটক করে গম কোথা থেকে আনা হচ্ছে, কী ভাবে এল তা জিজ্ঞাসাবাদ করে একটি গুদামের সন্ধান পাওয়া যায়। এরপরই একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। পুলিশ এবং খাদ্য নিয়ামক দপ্তরের কর্তাদের নিয়ে গঠিত ওই টাস্কফোর্সের মাথায় থাকেন খোদ খড়গপুর মহকুমা শাসক আজমল হোসেন।
শনিবার দুপুর ১২টা নাগাদ খড়গপুর মহকুমা শাসক, খড়গপুর মহকুমা পুলিশ আধিকারিক দীপক সরকার এবং খড়গপুর মহকুমা খাদ্য নিয়ামক সৌম্য চ্যাটার্জী এবার খড়গপুর শহরের খরিদা এলাকার নিমগেড়িয়া পাটনার একটি গোডাউনে হানা দেন। গোডাউনে হানা দিয়ে হতবাক হয়ে যান। গোডাউনে থরে থরে সাজানো রয়েছে বস্তা বস্তা চাল, গম এবং আটা। পুলিশ জানিয়েছে ওই গোডাউন থেকে পাওয়া গেছে ৩৫ বস্তা আটা, ৫০ বস্তা চাল এবং ৮বস্তা গম পাওয়া গেছে। পুলিশ জানিয়েছে এই গোডাউনের মালিকের নাম মহেশ গুপ্তা। পুলিশ তাকেও গ্রেপ্তার করেছে।
মহকুমা শাসক আজমল হোসেন জানিয়েছেন, “উদ্ধার হওয়া সামগ্রী সবই সরকারের দেওয়া সাধারণ মানুষের জন্য রেশনের দ্রব্য। যেমন আটা অন্তোদ্যয় যোজনার। তবে এই সামগ্রী এখানে থাকার কথা নয়। কী ভাবে এই সামগ্রী এখানে এল তা তদন্ত করছে পুলিশ। এর পেছনে যেই থাকুকনা কেন ছাড়া পাবেনা।”
প্রাথমিকভাবে পুলিশের মনে হচ্ছে সরকারের কোনও রেশন ডিস্ট্রিবিউটারের কাছ থেকেই এই সামগ্রী এসেছিল মহেশ গুপ্তার গোডাউনে। খড়গপুর শহর ও তার আশেপাশে কয়েকজন ডিস্ট্রিবিউটর রয়েছে যাদের কাছ থেকে রেশনদ্রব্য যায় ডিলারদের কাছে। এরমধ্যেই কারও কাছ থেকে কী রেশনদ্রব্য এসেছিল মহেশ গুপ্তার গোডাউনে? ৩ দিন ওই দুজনকে নিজেদের হেফাজতে রেখে সেই প্রশ্নই খুঁজবে পুলিশ।