বিভূ কানুনগো : পায়ে পায়ে ১০০দিন পেরিয়ে এল খড়গপুর শহরে শ্রমজীবী পাঠশালা। লকডাউনে বন্ধ স্কুল। উচ্চবিত্ত কিংবা মধ্যবিত্ত পরিবার না’হয় গৃহশিক্ষক দিয়ে চালিয়ে নিচ্ছে ক্ষুদে পড়ুয়াদের পাঠ কিন্তু হতদরিদ্র পরিবারের পড়ুয়াদের কী হবে? তাদেরকেই পরিপূরক পাঠ দেওয়ার উদ্দেশ্যে শুরু হয়েছিল এই পাঠশালার। সম্পূর্ণ নিখরচায় পঠন সামগ্রী ও পাঠ দেওয়ার পরিকল্পনা শুরু হয়েছিল ১০০দিন আগে। প্রথমে ক্লাশ ওয়ান থেকে ক্লাশ ফোর অবধি শুরু হলেও এখন ক্লাশ সেভেন অবধি এই পাঠদান চলছে। খড়গপুর শহরের খরিদায় মার্কসীয় পাঠাগারে প্রতিদিন ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত এই পাঠ দান চলে বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তা যতীন মিত্র স্মৃতি রক্ষা কমিটির অন্যতম সদস্য শ্যামল ঘোষ।
ঘোষ জানান, সেই পাঠশালার ১০০তম দিবস পূর্ন হওয়া এবং নেতাজীর ১২৫তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষ্যে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল এই ৫ মাইল বা ৮ কিলোমিটার দৌড় প্রতিযোগিতার। এখানে মহিলা ও পুরুষ বিভাগে এরাজ্যে ও ভিন রাজ্য মিলিয়ে ১৫৮ জন প্রতিযোগী অংশ নিয়েছিলেন।খড়গপুর, মেদিনীপুর, হাওড়া, কলকাতার পাশাপাশি ভিনরাজ্যের জামসেদপুর, রাঁচি থেকে আসা প্রতিযোগিরাও অংশ নিয়েছিলেন।
প্রেমহরি ভবন থেকে শুরু হওয়া এই প্রতিযোগিতা নিমপুরা, মথুরাকাটি হয়ে শেষ হল সেই প্রেমহরি ভবনেরই সামনের ময়দানে। প্রতিযোগিতার শুভ সূচনা করেন ম্যারাথন দৌড়বিদ বিমল মাহাত। উপস্থিত ছিলেন আ্যথেলিট নুপুর রায়, তনিমা ভট্টাচার্য, আদিনাথ ভট্টাচার্য প্রমুখরা। শনিবার সন্ধ্যায় এই প্রতিযোগিতার বার্তা দিয়ে মশাল নিয়ে একটি বাইক র্যালি শহর প্রদক্ষিণ করে।
মহিলা বিভাগে প্রথম ও তৃতীয় পুরস্কারের দখল নিয়েছে ঝাড়খণ্ডের প্রতিযোগীরা। তবে পুরুষ বিভাগে প্রথম পুরস্কার দখলে রেখেছেন খড়গপুর শহরের প্রদীপ মাহাত। পুরুষ বিভাগে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় হয়েছেন পঞ্চানন বেরা ও কিষ্ট মাহাত। অন্যদিকে মহিলা বিভাগে প্রথম তিনজন হলেন সংঘামিত্রা মাহাত, গুরুবারি মান্ডি ও অর্পিতা মন্ডল। দুটি বিভাগেই প্রথম ৫জনকে ট্রফির পাশাপাশি আর্থিক পুরস্কার দেওয়া হয়। পুরস্কার মূল্য ছিল ৩০০০,২০০০,১০০০,৬০০,৪০০ টাকা। এছাড়াও পরবর্তী ৫জনকে ট্রফি প্রদান করা হয়েছে।
শ্রমজীবী পাঠশালার পড়ুয়ারা এদিন সন্ধ্যাবেলায় খরিদা বীণা সঙ্ঘের মাঠে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেয়। তাঁদের নিজস্ব অনুষ্ঠানের পাশাপাশি ছিল শহরের প্রতিষ্ঠিত শিল্পীদের অনুষ্ঠান ও জাদু প্রদর্শনী। শ্যামল ঘোষ জানিয়েছেন, ” এই অনুষ্ঠানকে ঘিরে শিশু পড়ুয়াদের উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতই। সকাল থেকে সন্ধ্যা সমস্ত অনুষ্ঠানেই বাঁধন হারা আনন্দে ভেসে গিয়েছে তারা।'”