নিজস্ব সংবাদদাতা: খড়গপুর শহরের নিমপুরা এলাকায় দম্পত্তির দেহ উদ্ধারকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে খড়গপুর শহরে। শুক্রবার সকালে স্থানীয় একটি মাঠ থেকে দেহ দুটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে মৃতদের নাম ভেঙ্কট রাও এবং সীতা লক্ষী। দক্ষিণ ভারতীয় এই দম্পত্তির বয়স আনুমানিক ৩৫ ও ২৫ য়ের গায়ে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে লকডাউনের ঠিক আগেই এই দুই তরুন দম্পত্তি বিয়ে করেছিলেন। মাস দুয়েক আগে এই এলাকায় একটি ভাড়া বাড়ি নিয়ে থাকতেন তাঁরা। এখানেই কাজের সন্ধান করছিলেন কিন্তু সম্ভবত কাজ জোগাড় করে উঠতে পারেননি। শুক্রবার সাত সকালে নিমপুরা কনকদূর্গা মন্দির এলাকায় রেলের একটি ফাঁকা মাঠে ওই দুজনের দেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরাই খবর দেয় পুলিশকে। পুলিশ ছুটে এসে দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
স্থানীয় এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, ” ওই যুবক যুবতী মাঠেই নিশ্চল হয়ে পড়েছিলেন। মুখ দিয়ে ফেনা বেরিয়েছিল তাঁদের। তখনই আমাদের সন্দেহ হয় কিন্তু এরা কোন এলাকায়, কোথায় থাকে আমরা কিছুই জানিনা। দুজনকে দেখিনিও কোনোও দিন। পরে জানতে পারি এখানেই একজনের বাড়িতে ভাড়া নিয়ে থাকত এই দম্পত্তি।”
স্থানীয় আরেক বাসিন্দা জানিয়েছেন, ‘লকডাউন শুরু হওয়ার মুখেই বিয়ে করেছিলেন ওই দম্পত্তি। যুবক খড়গপুরে আসেন বছর কয়েক আগে। প্রথম দিকে একটি মন্দিরে পূজা করার পেশা নিয়েছিলেন। হয়ত ভেবেছিলেন ধিরে ধিরে যজমান বাড়িয়ে উপযুক্ত উপার্জন বাড়িয়ে নেবেন কিন্তু সেই পেশায় সফল হতে পারেননি। এরপর বেসরকারি অফিসে পিওন ইত্যাদির কাজ করতেন। তখন থাকতেন খড়গপুরের অন্য এলাকাতে। লকডাউনের শুরুর ঠিক আগেই বিয়ে করেন। আর তারপরেই লকডাউন শুরু হয়ে যাওয়ায় কাজ হারান। এরপরই তাঁরা অপেক্ষাকৃত কম ভাড়ায় এই এলাকায় চলে আসেন।”
মনে করা হচ্ছে প্রবল আর্থিক সঙ্কটের মুখে পড়ে গিয়েছিলেন ওই দম্পত্তি। সামান্য যা টাকা পয়সা জমেছিল তাই দিয়ে এই ক’দিন কোনও মতে চালিয়েছিলেন। ভেবেছিলেন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার কাজ জুটিয়ে নেবেন কিন্তু শেষ অবধি আর কাজ জোটাতে পারেননি। অভাব আর হতাশায় কীট নাশক খেয়ে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। পুলিশ অবশ্য এখুনি কিছু জানায়নি। ময়না তদন্তের জন্য দেহ দুটি পাঠানো হয়েছে খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে।