নিজস্ব সংবাদদাতা: করোনা পরীক্ষায় অমীমাংসিত ফলাফলের অভিজ্ঞতা সুখকর নয় খড়গপুরের জন্য। প্রথম ৫জন অমীমাংসিত ফল বেরিয়েছিল গত সপ্তাহের বুধবার আর তার মধ্যে পরে ৩টি পজিটিভ ফলাফল আসে পাঁচবেড়িয়া এলাকায় যার মধ্যে খড়গপুর পুরসভার প্রাক্তন উপ পুরপ্রধান সেক হানিফও ছিলেন। কার্যত সেই ঘটনার পর কোয়ারেন্টাইনে চলে যেতে হয়েছিল খড়গপুর প্রশাসনের সিংহভাগকেই। যদিও পরে সবারই নেগেটিভ বের হয় কিন্তু ১৫জন অমীমাংসিতের ৩জনই খড়গপুরের যা চমকে দেওয়ার মতই হার ছিল।
পরে ফের ৩টি অমীমাংসিত ফল আসে যার মধ্যে ১জনের পজিটিভ আসে এটিও সেই পাঁচবেড়িয়া লাগোয়া ভবানীপুর এলাকারই ছিল। এরপর ফের মঙ্গলবার ২০টি অমীমাংসিত ফলাফল এসেছে খড়গপুরে এরমধ্যে ক’জন পজিটিভ আসে সেটাই এখন দুশ্চিন্তার। বুধবার বিকালের মধ্যেই এই ফলাফল চলে আসার কথা।
জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গেছে সোমবার খড়গপুর মহকুমা হাসপাতাল থেকে মোট ১০৯জনের নমুনা পাঠানো হয়েছিল যার মধ্যে থেকে ওই ২০টি অমীমাংসিত এসেছে।
উল্লেখ্য করোনার পরীক্ষার একটি পদ্ধতি হল মোট গৃহীত নমুনাকে বিভিন্ন এলাকার নমুনা মিশিয়ে কয়েকটি দলে ভাগ করে দিয়ে পরীক্ষা করা। তিনজন বা পাঁচজনের একটি নমুনা দলের মধ্যে পৃথক পৃথক এলাকার নমুনা রাখা হয়। ওই দলগুলির মধ্যে এক বা অধিক পজিটিভ বের হলে তাকে অমীমাংসিত ধরা হয়। এখানে অমীমাংসিতের অর্থ হল এই দলটি পজিটিভ কিন্তু কে পজিটিভ সেটা জানা যায়নি। এই প্রক্রিয়া অবলম্বন করা হয় একটি এলাকার গোষ্ঠী সংক্রমন বোঝার জন্য। এরপর অমীমাংসিত দলটির প্রত্যেকের নমুনা আলাদা পরীক্ষা করে কে পজিটিভ তা বের করা হয়। বুধবার সেই ২০টি অমীমাংসিতের পরীক্ষা হবে এবং বোঝা যাবে খড়গপুরের কজন পজিটিভ রয়েছে।
এদিকে শহরের করোনা পরিস্থিতি মাথায় রেখেই বেশি বেশি করে নমুনা পরীক্ষায় জোর দেওয়ায় নমুনা সংগ্রহের পরিমান বেড়েছে। সোমবারের পর মঙ্গলবারও ভাল পরিমান নমুনা সংগ্ৰহ হয়েছে সংখ্যায় যা ছিল ৮২ জনের। এই ৮২ জনের ১৫ জন ছিল কোয়াক বা গ্রামীন ডাক্তারদের সুপারিশে পাঠানো। উল্লেখ্য আরও নিবিড় করোনা পরীক্ষার জন্য এই গ্রামীন চিকিৎসকদের কাছে সরকারের আহবান ছিল তাঁদের কাছে চিকিৎসা করাতে আসা করোনার উপসর্গ রয়েছে এমন ব্যক্তিদের যেন করোনা পরীক্ষার পরামর্শ দেন তাঁরা। সেই মত সোমবার ৬ জন ও মঙ্গলবার ১৫জন এসেছিলেন নমুনা দিতে। এই সংখ্যাটা বাড়ায় খুশি স্বাস্থ্য দপ্তর।
পাশাপাশি আনলক ইন্ডিয়া টু শুরু হচ্ছে বুধবার থেকে সেই পর্যায়েও যাতে জনতা লাগাম ছাড়া না হয়ে যায় তাই পুলিশও কঠোর হয়েছে। সোমবার মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, নাইট কারফ্যু মেনে চলা ইত্যাদি আবেদন জানিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে মাইক প্রচার করা হয়। মঙ্গলবার সকাল থেকেই কড়া ভূমিকায় দেখা যায় পুলিশকে। এদিন মাস্ক না পরা, লকডাউন বিধি লঙ্ঘন করা ও সামাজিক দূরত্ব লঙ্ঘন করা ইত্যাদি সব কিছু মিলিয়ে মোট ৮০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে খড়গপুর পুলিশ।