নিজস্ব সংবাদদাতা: ফ্রান্স বিরোধিতার ঢেউ এবার আছড়ে পড়ল ভারতের একটি প্রান্তিক অঞ্চলের ছোট্ট জনপদ কেশপুরেও। প্যারিস থেকে প্রায় ৮হাজার কিলোমিটার দুরে পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুর যা কিনা গত তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে শুধুই রাজনৈতিক সংঘাতে জেরবার হয়েছে সেই কেশপুরের একটি বৃহৎ অংশের জনগোষ্ঠীকে ফ্রান্স বিরোধী আন্দোলনে সামিল হতে। একটি ধর্মীয় বিতর্ক যা ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে যথেষ্ট বিক্ষোভের সৃষ্টি করেছে, যা নিয়ে উত্তাল হয়েছে মধ্যপ্রাচ্য থেকে শুরু করে দক্ষিন পূর্ব এশিয়ার কিছু দেশ সেরকমই একটি বিষয় নিয়ে কেশপুরের মত একটি প্রান্তিক জনপদের এই অনুভব রীতিমত বিস্মিত করেছে অনেককেই।
শুক্রবার বিকালে জুম্মার নামাজের পর বিভিন্ন বয়সী পুরুষের দল কেশপুর বাজার এলাকায় ফ্রান্স বিরোধী এই মিছিল সংগঠিত করেছিল। মিছিলের উদ্যোক্তা ছিল জমিয়েতে উলেমা হিন্দ।উল্লেখ্য ফ্রান্সে সম্প্রতি ক্লাসরুমে ইসলামের নবীর কার্টুন দেখানোর সূত্রে একজন স্কুল শিক্ষকের শিরচ্ছেদের ঘটনার পর ইসলাম ধর্ম নিয়ে প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রঁর সাম্প্রতিক কিছু মন্তব্যের প্রতিবাদে জর্ডান ও কুয়েতসহ কয়েকটি মুসলিম দেশে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। বিক্ষোভ হয়েছে বাংলাদেশেও।
সীমিত পরিসরে হলেও কলকাতা মহানগরেও এই বিক্ষোভের আঁচ পাওয়া গেছিল এবার কেশপুরের মত প্রান্তিক এলাকাতেও এই মিছিল দেখা গেল।জানা গেছে কেশপুর বাজারে শুক্রবার নামাজের পরে কয়েক হাজার মানুষ সমবেত হয়ে প্রতিবাদী মিছিল করে একটি সভাও করেন এদিন ৷ জমিয়তে উলেমায়ে হিন্দের ডাকে এই প্রতিবাদী কর্মসুচী নেওয়া হয়েছিল শুক্রবার কেশপুরে ৷ ব্লকের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কয়েক হাজার মুসলিম লোকজন এদিন সামিল হয়েছিলেন এই ডাকে সাড়া দিয়ে ৷ শুক্রবারের নামাজের পরে সেই মিছিল শুরু হয়েছিল কেশপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকা থেকে ৷ কেশপুর বাজার সংলগ্ন এলাকাতে এই মিছিল ঘোরে ৷ যেখানে কয়েক হাজার মানুষ সামিল হয়েছিলেন ৷
প্রতিবাদী এই মিছিল থেকে ফ্রান্স সরকারের নিন্দা স্লোগান দেওয়া হয় ৷ মুসলিমদের ঐক্যতার আহ্বানও জানানো হয়েছে মিছিল থেকে ৷ মিছিন বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় শেষ করে একটি ছোট সভারও আয়োজন করা হয়েছিল এদিন ৷
জনৈক বক্তা জানিয়েছেন, ‘আমরা যেমন কারুর শিরোচ্ছেদ কে সমর্থন জানাই না তেমনই সমর্থন করিনা নবীর বিকৃতিকরন। আমরা মানুষের মত প্রকাশের বিরোধী নই, শিল্পের স্বাধীনতারও বিরোধী নই কিন্তু মত প্রকাশের নামে কেউ কারও ধর্ম বিশ্বাসে আঘাত হানবে এটাও আমরা মানতে পারবনা।’
উদ্যোক্তারা বলেন, ‘যার যার ধর্ম তাঁর নিজের কাছে পবিত্র কারুর অধিকার নেই সেই বিশ্বাসকে নিয়ে খেলা করার। তাছাড়া শুধুমাত্র একজন ব্যক্তিই যদি কারও ধর্ম বিশ্বাসে আঘাত দিয়ে থাকেন সেটা আলাদা প্রসঙ্গ। ধরে নেওয়া যায় সেটা তাঁর বিকৃতি কিন্তু একজন রাষ্ট্রপ্রধানের কথায় যদি সেই বিকৃতির সমর্থন থাকে তখন একটি জনসমাজের কাছে তা বিপদজনক হয়ে দাঁড়ায়। আমরা ফ্রান্সের রাষ্ট্রপতির সেই ভাবনাকেই ধিক্কার জানাচ্ছি।’