নিজস্ব সংবাদদাতা: ২০০৮ সালের বন্যার এমন ভয়াবহতা দেখেনি কেশপুর! অথচ একে ঠিক বন্যা বলা যাবেনা, বলা হচ্ছে জলমগ্নতা। কোথাও নদী বাঁধ ভাঙেনি কেশপুরের স্রেফ ৩ নদীর উপচে পড়া জলেই হাফ কেশপুর জলমগ্ন হয়ে বসে আছে। প্রায় ৮ ঘন্টার লাগাতার বৃষ্টির সাথে পারাং, কুবাই আর তমাল নদীর জল উপচে পড়ে ভাসছে কেশপুর। কুবাইয়ের জলে যেমন প্লাবিত হয়েছে সমরচক, বাজিতচক, বিকলচক, বসনচক সহ বিস্তীর্ণ অঞ্চল জলমগ্ন। ঠিক তেমনই পারাংয়ের পাড় উপচে জল ভাসিয়েছে পঞ্চমী, খড়িকা, পারুলিয়া প্রভৃতি এলাকা। অন্যদিকে তমালের জলে ভাসছে নেড়াদেউল, মুগবাসান সন্নিহিত এলাকা গুলি। জল যত গড়াচ্ছে ততই বিপদের মুখে নিচু এলাকাগুলি।
কোথাও কোথাও আবার দুটি নদীর মিলিত জল উপচে পড়ে ভাসছে বিস্তীর্ণ এলাকা যেমন গোলাড়, কলাবেড়িয়া সহ নিচের অংশে গ্রামের পর গ্রাম জলবন্দী অবস্থায় পড়ে।মেদিনীপুর থেকে কেশপুর হয়ে চন্দ্রকোনা যাওয়ার রাজ্যসড়ক কেশপুরের অংশে বিপর্যস্ত। পঞ্চমী থেকে বগছড়ি অবধি সড়কের বিভিন্ন অংশের ওপর দিয়ে বইছে প্রবল জলস্রোত। গাড়ি বা অন্য যানবাহন ভেসে যেতে পারে এই আশঙ্কার ফলে এই রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন।
পঞ্চমী এবং বগছড়ি দু’জায়গাতেই পুলিশ বিশেষ পাহারায় রয়েছে যাতে মানুষ না যাতায়াত করে বিশেষ করে যানবাহন নিয়ে। দুপাশ থেকেই বিকল্প পথ বাতলে দিচ্ছে পুলিশ। জানা গেছে রাজ্য সড়কের এই দেড় কিলোমিটারের মধ্যে ৮০০মিটার জায়গার ওপর খরস্রোতে জল নামছে।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে শুক্রবার রাতের দিকে নিচু অংশে বিপদ বাড়তে পারে। বিশেষ করে কয়েকঘন্টা জলের মধ্যে থাকায় মাটির বাড়ি গুলো ভেঙে পড়তে পারে। ইতিমধ্যেই মুগবসান এলাকায় একটি বড় মাটির বাড়ি ভেঙে পড়েছে। যদিও কেশপুর থেকে মৃত্যুর খবর নেই।
প্রশাসনের প্রাথমিক অনুমান সব মিলিয়ে সাত আট হাজার মানুষকে ত্রাণ শিবিরে আনতে হতে পারে। এখুনি ১৫০টি ত্রাণ শিবির খুলে সাড়ে চার হাজার মানুষকে সরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে সাধারণ বন্যাপ্রবন জায়গা নয় কেশপুর তাই ঘাটাল দাসপুর চন্দ্রকোনার মত এখানে নৌকা মজুত থাকেনা ফলে জলমগ্ন মানুষকে সরিয়ে আনতে একটু সমস্যা হচ্ছে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী বা NDRF নেমেছে উদ্ধার কার্যে। এই প্রথম বন্যা ছাড়াই ত্রাণ শিবির খুলতে হচ্ছে কেশপুরে।