নিজস্ব সংবাদদাতা: ৫ বছর ধরে বিধায়ক ছিলেন কেশিয়াড়ী বিধানসভা কেন্দ্র থেকে। তাঁকেই এবার প্রার্থী করেছে দল কিন্তু সেই পরেশ মুর্মুকেই ‘তোলাবাজ, দুর্নীতিবাজ, বহিরাগত’ বলে তাঁকে ৪০ হাজার ভোটে হারানোর জন্য রাস্তায় নামলেন তৃনমূল রাজ্য কমিটির মহিলা সদস্যা কল্পনা শীট।
মমতা ব্যানার্জী প্রার্থী তালিকা ঘোষনার মাত্র ২ঘন্টার মধ্যেই বিক্ষোভের আগুন জ্বলে উঠল পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশিয়াড়ী বিধানসভা কেন্দ্রে। ওই মহিলা নেত্রীর নেতৃত্বে কেশিয়াড়ী মফস্বলে মিছিল করে আওয়াজ উঠল, ‘ দুর্নীতিবাজ পরেশ মুর্মু কেশিয়াড়ী থেকে দূর হটো।’ আওয়াজ উঠল, ‘পরেশ মুর্মু হটাও, কেশিয়াড়ী বাঁচাও।’
দলনেত্রী প্রার্থী তালিকা ঘোষনার পর যখন জেলায় জেলায় প্রতীক আর প্রার্থীর নাম দিয়ে দেওয়াল লেখা শুরু হয়ে গেছে তখন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কেশিয়াড়ীর এই ঘটনা রীতিমত অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে দলকে। রাজ্য তৃনমূল যুব কংগ্রেসের সম্পাদিকা প্রার্থী তালিকা ঘোষনার পরই তৃনমূলের ব্লক সহ সভাপতি পবিত্র শীট, ব্লকের যুব সভাপতি সঞ্জয় গোস্বামী সহ কেশিয়াড়ী ব্লকের ৯ টি অঞ্চলের যুব সভাপতিরা জানিয়ে দেন তাঁরা পরেশ মুর্মুকে কিছুতেই মেনে নেবেন না শুধু তাই নয়, এঁরা সবাই মিলে আজ থেকেই তৃনমূল ছেড়ে দিলেন।
কল্পনা শীট অভিযোগ করেছেন, ‘যখন সারা কেশিয়াড়ী জুড়ে ওই তোলাবাজ, দুর্নীতিগ্রস্থ মানুষটির বিরুদ্ধে মানুষ সোচ্চার, যখন উনি বেকার যুবকদের চাকরি দেওয়ার নাম করে লক্ষ লক্ষ টাকা তুলেছেন তখন তাঁকেই দল প্রার্থী করে কোন হিসাবে। আমরা বারবার দলের কাছে আবেদন জানিয়েছিলাম ওকে প্রার্থী না করার জন্য। বলেছিলাম, কোনও বহিরাগত নয় কেশিয়াড়ীর যে কোনও ভূমিপুত্রকে প্রার্থী করা হোক। দল আমাদের কথা শোনেনি তাই দলে থাকার প্রয়োজন মনে করছিনা। আমরা শপথ নিলাম ১৩৯টা বুথে ৪০ হাজার ভোটে ওই তোলাবাজকে হারাবো।’
এরপরেই কল্পনা শীটের নেতৃত্বে শ্লোগান সাউটিং শুরু হয়। আওয়াজ ওঠে, তোলাবাজ পরেশ মুর্মু কেশিয়াড়ী থেকে দূর হটো, পরেশ মুর্মুকে মানছিনা, মানবনা। ঘটনার আকস্মিকতায় হকচকিয়ে গেছেন কেশিয়াড়ী ব্লক এবং পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা নেতৃত্ব। কল্পনা এবং পবিত্রর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন তাঁরা কিন্তু ক্ষুব্ধ কল্পনা বা পবিত্র ফোন ধরেননি বলেই জানা গিয়েছে। কেশিয়াড়ী ব্লকের তৃনমূল সভাপতি অশোক রাউৎ বলেছেন, ‘আমার জানা নেই এরকম বিক্ষোভ হয়েছে বা কেউ দল ছাড়ছেন বলে।” ঘটনায় উত্তেজনায় ফুটছে সমগ্র কেশিয়াড়ী।