নিজস্ব সংবাদদাতা: শনিবার মধ্যরাতে জম্মুতে অবস্থিত ভারতীয় বায়ুসেনার ঘাঁটিতে ড্রোন হামলার ২৪ঘন্টার মধ্যে এক পুলিশ আধিকারিকের বাসভবনে ঢুকে নির্বিচারে গুলি চালালো জঙ্গিরা। ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ওই পুলিশ আধিকারিক এবং তাঁর স্ত্রীর। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন তাঁদের মেয়ে। কাশ্মীর পুলিশ জানিয়েছে নিহত স্পেশাল পুলিশ অফিসারের (SPO) নাম ফয়াজ আহমেদ। তিনি পুলওয়ামায় কর্মরত ছিলেন। প্রাথমিকভাবে অবন্তীপোরার পুলিশ কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক আধিকারিক বলেন, ‘হামলায় উনি মারা গিয়েছেন। তাঁর স্ত্রী এবং মেয়ে আহত হয়েছেন। তাঁদের হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে।’ পরে পুলিশের তরফে জানানো হয়, স্পেশাল পুলিশ অফিসারের স্ত্রীও মারা গিয়েছেন।
নিজেদের টুইটার হ্যান্ডেলে কাশ্মীর জোনের পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, অবন্তীপোরার হরিপরিগামে ফয়াজের বাড়িতে ঢুকে নির্বিচারে গুলি চালায় জঙ্গিরা। সেই সন্ত্রাসবাদী হামলায় ফয়াজ, তাঁর স্ত্রী এবং মেয়ে গুলিবিদ্ধ হন। কিছুক্ষণ পরেই মৃত্যু হয় ফয়াজের। পরে হাসপাতালে মারা যান স্পেশাল পুলিশ অফিসারের স্ত্রী। আপাতত পুরো এলাকা ঘিরে রাখা হয়েছে। চালানো হচ্ছে তল্লাশি। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে নিহত পুলিশ আধিকারিকের নিহত স্ত্রীর নাম রাজা বেগম এবং আহত মেয়ের নাম রাফিয়া। এই হামলার পরিপ্রেক্ষিতে তৎপর করা হয়েছে কাশ্মীর পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর পাশাপাশি সীমান্তরক্ষী বাহিনীকেও।
উল্লেখ্য শনিবার মধ্যরাতে জম্মুতে বায়ুসেনার ঘাঁটিতে ড্রোন হামলা চালায় জঙ্গিরা। আধিকারিকরা জানিয়েছেন, জম্মু বিমানবন্দরের বায়ুসেনার স্টেশনে দুটি বিস্ফোরক-বোঝাই ড্রোন আছড়ে পড়ে। পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে দুটি বিস্ফোরণ হয়। যা ভিভিআইপি এবং সশস্ত্র বাহিনীর কৌশলগত অভিযানের জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে। জোড়া বিস্ফোরণে আহত হন দু’জন বায়ুসেনা আধিকারিক। পরে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের ডিজি দিলবাগ সিং জানান, জঙ্গি হামলা চালানো হয়েছিল বায়ুসেনার স্টেশনে। তিনি বলেন, ‘আমরা অপর একটি ঘটনায় এক জঙ্গির কাছ থেকে পাঁচ থেকে ছয় কেজি বিস্ফোরক উদ্ধার করেছি। সেই সব বিস্ফোরক ভারতে আনার নেপথ্যে ছিল লস্কর (লস্কর-ই-তইবা)। এই বিস্ফোরক কোনও জনবহুল এলাকায় রেখে আসার পরিকল্পনা ছিল। এই বিস্ফোরক উদ্ধার করার ফলে অনেক বড় হামলা আটকানো গিয়েছে। এই ঘটনায় আরও সন্দেহভাজনদের শীঘ্রই আটক করা হবে। কেন্দ্রীয় সংস্থার সঙ্গে হাত মিলিয়ে বায়ুসেনা ঘাঁটির বিস্ফোরণের ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে।’
এদিকে মাত্র ৫দিনের ব্যবধানে জঙ্গিদের আক্রমনে এটি দ্বিতীয় পুলিশ আধিকারিকের মৃত্যুর ঘটনা। ২২শে জুন শ্রীনগরের বাইরের দিকে মৃত্যু হয়েছিল এক পুলিশ আধিকারিকের। পুলিশের তরফে জানানো হয়, নওগামে বাড়ির কাছেই পারভেজ আহমেদ নামে ওই ইন্সপেক্টরকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। তড়িঘড়ি তাঁকে পুরনো শহরের শ্রী মহারাজা হরি সিং হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। সেই ঘটনায় জঙ্গিদের হাত আছে বলেই প্রাথমিকভাবে অনুমান পুলিশের। পরপর পুলিশ অধিকদের ওপর হামলার পাশাপাশি ড্রোন হামলার ঘটনায় চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছে কাশ্মীর উপত্যকায়। শেষ খবর পাওয়া অবধি রাফিয়াকে শ্রীনগর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।