Homeএখন খবরপিংলার ২৫৪বছরের পরিবারিক কালীপুজোয় ফের একান্নবর্তী ২৫ শরিক

পিংলার ২৫৪বছরের পরিবারিক কালীপুজোয় ফের একান্নবর্তী ২৫ শরিক

চিন্ময় তেওয়ারী: সারাবছর এই দিনটার দিকেই তাকিয়ে থাকেন পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলা থানার পশ্চিম ডাংরা গ্রামের ঘোষ পরিবারের ২৫টি শরিক। এদের কেউ থাকেন মেদিনীপুর শহরে, কেউ কলকাতা, তারকেশ্বর মায় নাগপুরেও। ঘোষ পরিবারের সেই ২৫টি শরিকের ঘরে ফেরা শুরু হয়েছে।  কেউ এসে গেছেন কেউবা আবার ট্রেন ধরেছেন ভিন রাজ্য থেকে, আজ রাতের মধ্যে গ্রামে ফেরা চাই।
 পশ্চিম ডাংরা গ্রামের এই ২৫৪ বছরের কালীপুজো শুরু হয়েছিল ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দে। এমনটাই দাবি ঘোষ পরিবারের। শুরু করেছিলেন পিংলার জমিদার দানি চন্দ্রশেখর ঘোষ।

চন্দ্রশেখরের বর্তমান ষষ্ট পুরুষ ৮০বছর বয়সী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ জানিয়েছেন, ‘জনশ্রুতি অনুযায়ী স্বপ্নাদেশ পেয়েই চন্দ্রশেখর স্বয়ং বর্তমান ঝাড়খণ্ডের ধলভূমগড় থেকে মায়ের মূর্তি মাথায় করে রওনা দেন। উদ্দেশ্য পিংলার ভদ্রাসনে মাকে প্রতিষ্ঠা করা। রাস্তায় ক্লান্ত হয়ে পড়লে মা বলেন, আমাকে বইতে হবেনা। তবে হাঁটার সময় তুই  পিছন ফিরে দেখতে পারবিনা।  যেখানে তুই আমাকে দেখার জন্য পিছনে ফিরবি, সেখানেই আমাকে প্রতিষ্ঠিত হব।

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
প্রত্যুত্তরে জমিদার  মাকে বলেন মা তুমি যে আমার পিছনে আসছো তা আমি জানবো কি করে, তখন মা বলেন যে আমার পায়ের নুপুরের শব্দ পাবি তাতেই বুঝবি যে আমি তোর পিছনে পিছনে আসছি, এইরকম অবস্থায় জমিদার  দানি চন্দ্রশেখর বাবু তার মাথায় করে মাকে নিয়ে আসছে ঠিক পশ্চিম ডাংরা রাজবল্লভ শ্মশানের কাছে বর্তমান যা মন্ডলবাড় বাস স্টপেজ তারই কাছে রাস্তায় কাদা থাকায়  মায়ের পায়ের নুপুরের শব্দ হয়নি। নূপুরের শব্দ না পেয়ে দানি  চন্দ্রশেখর পিছন ফিরে দেখতেই সঙ্গে সঙ্গে মা বলেন থাক,  এখানেই তুই আমার প্রতিষ্ঠা কর।  সেই থেকেই এখানে রাজবল্লভ মা কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা স্থাপিত করেন চন্দ্রশেখর বাবু। বংশ পরাক্রমে এখানেই হয়ে আসছে মায়ের পুজো।”

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
পরিবারের সপ্তম পুরষ নীলাদ্রি ঘোষ মেদিনীপুর শহরে থাকেন। পুজো উপলক্ষ্যে সপরিবারে দেশের বাড়িতে এসেছেন কটা দিন আগেই। পুজোর প্রস্ততি, যাঁরা আরও দুর থেকে আসছেন তাঁদের থাকার ব্যবস্থা ইত্যাদি করতে হচ্ছে তাঁকেই। নীলাদ্রি জানালেন, ”মায়ের এই আরাধনা, অতিথি বন্ধু বান্ধব নিমন্ত্রিত ইত্যাদি যাবতীয় খরচ মায়ের নিজস্ব সম্পদ থেকেই হয়। মায়ের নামে ৭৫বিঘা দেবোত্তর জমি থেকেই সব ব্যয় হয়।”

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
পুজোর এই কটাদিন বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা শরিকদের সাথে কখনও সখনো এসে পড়েন তাঁদের নিজস্ব আত্মীয় বন্ধু বান্ধব। সব মিলিযে পাত পড়বে ৫০থেকে ৬০টি। এক সাথেই রান্না আর চার বেলা পংক্তিভোজ।
পুজোর আনন্দ অবশ্য ঘোষ পরিবারের একার নয়। পশ্চিম ডাংরার পুরো গ্রামই মেতে ওঠে এই পুজোয়। আসেন আশেপাশের গ্রামের মানুষরাও। পরিবারের পুজো একটা দিন তাই সর্বজনীন হয়ে ওঠে।

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
মায়ের সম্পত্তি থেকেই ২০১০ সালে এই মন্দিরটির নতুন করে সংস্কার করা হয়। পুজোর এই বিশেষ তিথি ছাড়াও নিত্য পুজো হয়ে থাকে আর প্রতি অমাবস্যায় বিশেষ আরাধনা। সময় গড়িয়ে গেছে অনেকটাই। পেশা আর উন্নততর জীবনের সন্ধানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে সবাই। শুধু এই কটা দিন ফের নতুন করে ফেরা, ফের একান্নবর্তী হয়ে যাওয়া দানি চন্দ্রশেখর ঘোষের বংশধরদের।
 পিংলার যাবতীয় সংবাদ পাঠান এই নম্বরে 9474571426

RELATED ARTICLES

Most Popular