অশ্লেষা চৌধুরী:টান টান উত্তেজনায় ঝাড়গ্রামে নাড্ডা। কপ্টারে চড়ে এদিন দুপুর ৩টা নাগাদ লালগড়ের সজীব সঙ্ঘ ময়দানের হেলিপ্যাডে নামবেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। পাশের মাঠে তাঁর জনসভা করার কথা রয়েছে। এরপর লালগড় থেকে কাঁসাই নদীর আমকলা ব্রিজ ধরে পা রাখবেন ঝাড়গ্রাম শহরে। ঝাড়গ্রাম শহরে পৌঁছে সিধো-কানহুর মূর্তিতে মালা দেবেন জে পি নাড্ডা। স্থানীয় আদিবাসীদের সঙ্গে কথা বলবেন তিনি। এরপর খড়গপুরে রাত্রিবাস।
ঝাড়গ্রাম সাংসদ কুনার হেমব্রম জানিয়েছেন, পরের দিন অর্থাৎ বুধবার ঝাড়গ্রাম থেকেই পরিবর্তন যাত্রা শুরু করে গিধণী ফেকো ঘাট হয়ে এগিয়ে যাবেন তিনি। রাত্রিবাস করবেন গোপীবল্লভপুরে। পরশু গোপী বল্লভপুর থেকে চাঁদা ভিলা হয়ে খড়িকামাথানি নয়াগ্রাম। নয়াগ্রাম পেরিয়ে জঙ্গলকন্যা সেতু পেরিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কেশিয়াড়িতে প্রবেশ করবেন নাড্ডা।
নাড্ডার সফর ঘরে একদিকে যেমন কড়া নিরাপত্তার চাদরে মোড়া হয়েছে চতুর্দিক, তেমনই কিছু অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটতে দেখা যাচ্ছে। যেমন, ঝাড়গ্রামের মধুবনে শুভেন্দু অধিকারীর কুশ পুত্তলিকা পোড়ানো হয়েছে মঙ্গলবার রাতে, যাকে কিনা এই এলাকার দায়িত্ব দেওয়া হয়।
এর তিন দিন আগেই ঝাড়গ্রামে বড়সড় ভাঙন ধরে গেরুয়া শিবিরে। শনিবার বিকেলে গেরুয়া শিবির পরিচালিত ছত্রী গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করে নেয় শাসক শিবির। পঞ্চায়েত নির্বাচনে ছত্রী গ্রাম পঞ্চায়েতে ৮টি আসনে বিজেপির ৬ জন এবং তৃণমূলের ২ জন জয়ী হন। এদিন বিজেপির প্রধানের বিরুদ্ধে ‘দুর্নীতির’ অভিযোগ তুলে বিজেপির নির্বাচিত দুই মহিলা সহ ৩ জন পঞ্চায়েত সদস্য সুলেখা মাহাতো, লক্ষী খিলারী, অচিন্ত্য মাহাতোরা তৃণমূলে যোগ দেন। যার ফলে ছত্রী গ্রাম পঞ্চায়েতে সংখ্যাগরিষ্ঠ হল তৃণমূল। এই মুহূর্তে তৃণমূল ৫ আর বিজেপি ৩। শুধু পঞ্চায়েত সদস্যই নয় ঘোলাই বুথ সভাপতি গৌতম মাহাতো, বালিভাষা বুথ সভাপতি গগণ মাহাতোরা এদিন তৃণমূলে যোগ দেন।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার রাতে বিশেষ বিমানে ৯টা ৩২ মিনিটে কলকাতা বিমানবন্দরে অবতরণ করেন নাড্ডা। সেখান থেকে সোজা চলে যান নিউটাউনের একটি পাঁচতারা হোটেলে। রাতটা তিনি সেখানেই কাটিয়ে শনিবার সকালে রওনা দেন নদিয়ার উদ্দেশ্যে। সেখান থেকে বিজেপির ‘পরিবর্তন যাত্রা’র সূচনা করেন তিনি। আর আজ ৭২ ঘন্টার ব্যবধানে ফের বঙ্গে নাড্ডা। মঙ্গলবার অনুব্রতের গড়ে বিজেপির রথের চাকা ঘুরবে। তবে, তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল জানিয়েছেন, এটি রাজনৈতিক কর্মসূচি। তাই তৃণমূলের তরফে কোনরকম বাধা দেওয়া হবে না।
এদিন দিল্লি থেকে সরাসরি অন্ডাল বিমানবন্দরে নেমে কপ্টারে চড়ে তারাপীঠে পৌঁছবেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। তারাপীঠ মন্দিরে পুজো দিয়ে চিলার মাঠে জনসভা করবেন তিনি। সেখান থেকেই পরিবর্তন যাত্রার সূচনা হবে। তার আগে গোটা এলাকায় কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে। বীরভূম জেলার ১১টি বিধানসভাজুড়ে পরিক্রমা করবে বিজেপির রথ। পাড়ি দেবে ৩২৮ কিলোমিটার পথ।