Homeএখন খবরতিন বছরে হারিয়ে যাওয়া দেড় কোটি টাকা মূল্যের ১২০০মোবাইল ফোন ফেরৎ দিয়ে...

তিন বছরে হারিয়ে যাওয়া দেড় কোটি টাকা মূল্যের ১২০০মোবাইল ফোন ফেরৎ দিয়ে রেকর্ড ঝাড়গ্রাম পুলিশের

নিজস্ব সংবাদদাতা: মোবাইল ফোন হারিয়ে কিংবা চুরি হয়ে যাওয়ার পরেও নিশ্চিন্ত ঝাড়গ্রাম জেলার বাসিন্দারা। হয়ত একটু সময় লাগবে কিন্তু মানুষ এটুকু নিশ্চিত যে মোবাইল ফেরৎ পাবেনই। যেমনটা এ বছর জানুয়ারি মাসে নিজের মোবাইল হারিয়ে খুব একটা মুষড়ে পড়েননি স্বরূপ পাত্র। স্বরূপ জানিয়েছে, “জানুয়ারি মাসে মোবাইলটা চুরি গিয়েছিল নাকি পড়ে গিয়েছিল বুঝতে পারিনি। কিছু কেনাকাটার জন্য দোকানে গিয়েছিলাম বাড়ি ফিরে দেখি পকেটে ফোনটা নেই। এরপরই আমি ঝাড়গ্রাম থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করি। তখন আমার একটু কষ্ট হয়েছিল ঠিকই কারন আমাকে আরেকটা ফোন কিনতে হয়েছিল। কিন্তু আমার কোথায় যেন একটা বিশ্বাস ছিল যে ফোনটা ফেরৎ পাবই। কারন এর আগে ফোন হারানো কিংবা চুরি যাওয়া মোবাইল ফোনের মালিকরা তাঁদের ফোন ফেরৎ পেয়েছেন।”

স্বরুপ পাত্রের সেই বিশ্বাস সত্যি বলেই প্রমাণিত হল শুক্রবার, ২রা জুলাই। ফোন হারানোর ৬মাসের মাথায় নিজের হারিয়ে যাওয়া স্মার্ট ফোনটা হাতে নিয়ে চওড়া হাসি হাসলেন। না, স্বরূপ একা নয়। এদিন মোবাইল ফোন ফেরত পেলেন ১৫০জন এবং এই ফোনের মূল্য ১৮লক্ষ টাকা বলে জানালো ঝাড়গ্রাম পুলিশ। শুক্রবার জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যান সরকারের নেতৃত্বে এই মোবাইলগুলো মোবাইল মালিকের হাতে তুলে দেওয়া হয়। ঝাড়গ্রাম পুলিশের সুত্র মারফত জানা গেছে এপর্যন্ত জেলার প্রায় ১২০০ মোবাইল সাফল্যের সাথে উদ্ধার করে গ্রাহকদের হাতে তুলে দিয়েছে ঝাড়গ্ৰাম জেলা পুলিশ। আর উদ্ধার হওয়া এই মোবাইলের মূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা।

তিনবছর আগে ঝাড়গ্রাম পুলিশ এই কর্মসূচি শুরু করেছিল যার নাম দেওয়া হয়েছিল ‘প্রত্যর্পণ।’ উদ্দেশ্য হারিয়ে যাওয়া কিংবা চুরি যাওয়া মোবাইল উদ্ধার করে মোবাইল মালিকদের ফেরৎ দেওয়া। ২০১৯ সাল থেকে প্রতিবছরে কয়েক দফায় এই উদ্ধার হওয়া ফোন ফেরৎ দেওয়া হয়। ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যান সরকার বলেন,জেলায় কারো মোবাইল খোয়া যাওয়ার পর স্থানীয় থানায় যে অভিযোগ জমা পড়ে তার ভিত্তিতে ২০১৯ সালে জেলায় ৫৫০টি,২০২০ সালে ৪৫০ টিরও বেশি মোবাইল আমরা মোবাইল মালিককে ফেরৎ দিতে পেরেছি। আজ ২০২১ সালে এই প্রথম ১৫০ টির বেশি মোবাইল উদ্ধার করে ফেরত দেওয়া হল। সঙ্গে পুলিশ সুপার জানান,এই করোনা পরিস্থিতিতে কর্মসূচিটি করা ঝাড়গ্ৰাম জেলা পুলিশের পাশে খুবই চ্যালেঞ্জের ছিল। কিন্তু সম্পূর্ণ শারীরিক দুরত্ব বিধি রক্ষা করে কর্মসূচি সম্পন্ন হয়েছে।আর যাদের মোবাইলে খোয়া গিয়েছিল তারা ঝাড়গ্ৰাম জেলা পুলিশের সহায়তায় ফিরে পেয়ে খুবই খুশি।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও জানিয়েছেন, “আমরা জেলাবাসীকে আবেদন করব কারও মোবাইল হারিয়ে গেলে অথবা চুরি হলে থানায় গিয়ে অভিযোগ করুন। কারন অভিযোগের সূত্র ধরেই আমাদের অভিযান শুরু হয়। অভিযোগ না হলে এক্ষেত্রে আমরা কিছু করতে পারবনা।” যদিও প্রশ্ন হল কী ভাবে পুলিশ এই কাজটি করতে সক্ষম হয়। সাধারণ একটা সূত্র পুলিশ ব্যবহার করে তাহ’ল ফোনের নিজস্ব আইপি নম্বর বা IMEI নম্বর থেকে হ্যান্ডসেটটির খোঁজ পাওয়া যায়। বড় শহর কিংবা মহানগরে এধরনের ট্র্যাকার ব্যবহার করে পুলিশ। হ্যান্ডসেট চালু থাকলেই ট্র্যাকার একে খুঁজে বের করে। কিন্তু ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশ কী এই ধরনের ট্র্যাকার ব্যবহার করে?

এই প্রশ্নের উত্তর মেলা যায়নি কারন কী পদ্ধতিতে পুলিশ হারিয়ে যাওয়া ফোন উদ্ধার করে তা তাঁরা বলতে রাজি নন। তবে আরও একটি পদ্ধতি যে ঝাড়গ্রাম পুলিশ ব্যবহার করে তা জানা গেছে। সেই পদ্ধতি হল শহরের ছোট ছোট অপরাধী, চোর, নেশাসক্তদের ট্র্যাক করা। কোথায় কোন অপরাধীরা সক্রিয়, কোন পথে মোবাইল পাচার হয়? কারা মোবাইল কেনে ইত্যাদির একটি নিখুঁত আর আপডেটেড তালিকা থাকে পুলিশের কাছে। কোথায় কোন এলাকায় মোবাইলটি খোয়া গেছে জানার পরই সেখান থেকেই অভিযান শুরু হয় পুলিশের।

RELATED ARTICLES

Most Popular