ভবানী গিরি : এক মা মনসা তায় ধুনোর গন্ধ! ইঞ্জেকশন নিতেই ভয় পায় যে রোগী তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে অপারেশন থিয়েটারে। আর ওটির ছুরি কাঁচি থেকে ভিরমি খাওয়ার যোগাড়। শেষ মেশ সবার নজর এড়িয়ে পাঁচতলার সার্সি বেয়ে পালানোর চেষ্টা। কিন্তু কিছুটা নেমেই আর কুল কিনারা না পেয়ে ঝুলেই রইলেন ঘন্টা খানেক।
সোমবার ঝাড়গ্রাম শহরের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের এই কাণ্ডে রীতিমত হইচই পড়ে যায় সারা শহরে। হাসপাতালের পাঁচতলা বিল্ডিংয়ের সার্সি লাগোয়া পাইপলাইনে ঝুলতে থাকা ব্যক্তিকে প্রথমে দেখতে পান হাসপাতালের নিরাপত্তাকর্মীরা। এরপর হাসপাতালের তরফে তড়িঘড়ি দমকল বাহিনীকে খবর দেওয়া হলে দমকলকর্মীরা এসে রোগীকে দড়ি বেঁধে নিচে নামায়। দমকল বাহিনী।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তির নাম সুদর্শন দণ্ডপাট। তিনি জামবনি ব্লক এর চিল্কিগড় এলাকার বাসিন্দা। জানা গেছে গাছে থেকে পড়ে গিয়ে তার ডানহাতের হাড়ে ফাটল ধরে। রবিবার তাকে ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভরতি করা হয়। সোমবারই তার ডানহাত প্লাস্টারের জন্য তাকে পাঁচ তলায় ওটি তে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকেই কোনোভাবে সে ফাঁক বুঝে ওটি থেকে বেরিয়ে হাসপাতালে ছাদে উঠে যায় । সেখান থেকেই হাসপাতালের সার্সি লাগোয়া পাইপলাইনের গার্ড দেওয়া কাঠের পাটা ধরে নীচে নামার চেষ্টা করে। এরপর বিষয়টি হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষীদের চোখে পড়ায় দ্রুত তাকে আটকানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ততক্ষণে ওই ব্যক্তি অনেকটাই নিচে নেমে গিয়েছে।
ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে ঘটনাস্থলে দমকল বিভাগের কর্মীদের ডাকা হলে তারা রোগীকে দড়ি দিয়ে বেঁধে নিচে নামায়। এবিষয়ে রোগী পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান সুদর্শন মানসিকভাবে ঠিকই আছে। তবে কেন আচমকা পাঁচতলার পাইপ বেয়ে নীচে নামতে গেলেন সুদর্শন, এবিষয়ে সুদর্শনকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি জানান, ছোটোবেলা থেকেই তার ইঞ্জেকশনে ভয় রয়েছে৷ সোমবার ওটিতে যাওয়ার আগে সে জানতে পারে যে তাকে ইঞ্জেকশন দেওয়া হবে। একথা জানতে পেরেই সে পালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু পথ না পেয়ে অবশেষে পাঁচতলার পাইপ বেয়ে নিচে নামতে শুরু করে।
এবিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, ওই ব্যক্তিকে দমকল বাহিনী নামানোর পর পুনরায় ওটি তে নিয়ে গিয়ে প্লাস্টার করে বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার হয়। এই ঘটনার পরে ঝাড়গ্রাম সুপার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে নিরাপত্তারক্ষীদের কড়াকড়ি ভাবে নজর দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।