নিউজ ডেস্ক: ফের নারী শক্তির উন্মেষ ঘটলো জলপাইগুড়িতে। এবার করোনা আক্রান্ত পরিবারের এক বৃদ্ধার মৃতদেহ সৎকারে এগিয়ে এলেন এক নার্সিং ছাত্রী। এতদিন মানুষের বাড়ি গিয়ে অক্সিজেন পরিষেবা দিচ্ছিলেন, এবার কোভিড আক্রান্ত পরিবারের একটি মৃতদেহ সৎকারের কাজেও এগিয়ে এলেন ওই নার্সিং ছাত্রী। জলপাইগুড়ির দিশারি নার্সিং ট্রেনিং সেন্টারের কর্ণধারের উদ্যোগে মৃতদেহ সৎকারের কাজ সম্পন্ন হয় সোমবার।
জলপাইগুড়ির শিরিষতলা এলাকার সরকার পরিবারের দুই সদস্য বাদে সবাই করোনায় আক্রান্ত। এই অবস্থায় চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বাড়ির বয়স্ক সদস্যা সতী সরকার ৮৮ ( মা)- কে ঐ পাড়াতেই তার মেয়ের বাড়িতে থাকার ব্যবস্থা করা হয়। যদিও রবিবার রাতে মৃত্যু হয় তাঁর। এই অবস্থায় মৃতদেহ সৎকারের কাজে এগিয়ে আসার মত কেউ ছিল না। পরিবারের মাত্র দুজন লোক কিভাবে দেহ সৎকার করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না।
বিষয়টি জানতে পেরে তাদের ডাকে সারা দিয়ে সোমবার সকালে এগিয়ে আসেন শান্তনু শর্মা ও তাঁর নার্সিং সেন্টারের ছাত্রী সুস্মিতা সরকার ও ছাত্র রাহুল সিং দর্জি। শববাহী গাড়িতে বৃদ্ধার মৃতদেহ নিয়ে তারা চলে যান জলপাইগুড়ির মাসকালাইবাড়ি মহাশ্মশানে। সেখানেই বৃদ্ধা সতীদেবীর শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন তারা।
জলপাইগুড়ি শহরের পান্ডাপাড়া রোড সংলগ্ন টিউমল কলোনীতে রয়েছে দিশারি নার্সিং ট্রেনিং সেন্টার।
করোনা পরিস্থিতিতে বর্তমানে বন্ধ রয়েছে এই সেন্টার। তবে থেমে নেই মানুষকে পরিষেবা দেওয়ার কাজ। কর্ণধার ও ছাত্রছাত্রীরা মিলে করোনা আক্রান্তদের দিনরাত পরিষেবা দিচ্ছেন। বাড়িতে কোলের শিশুকে রেখে দিবারাত্রি বিনামূল্যে অক্সিজেন পরিষেবা দিচ্ছেন এই স্কুলের প্রিন্সিপাল শান্তনু শর্মা ও তার স্ত্রী অনুস্মিতা শর্মা। এবারে তারা মৃতদেহ সৎকারেও এগিয়ে এলেন। তাদের এই উদ্যোগকে কুর্নিশ জানিয়েছেন শহরবাসী। তাদের এই কাজ থেকে শিক্ষা নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর শপথও নিয়েছেন শহরের অনেকেই।