নিজস্ব সংবাদদাতা: একটা নয়, দু-দুটি বিমানবন্দরের থার্মাল স্ক্যানার পেরিয়ে লন্ডন থেকে যুবক কলকাতায় পৌঁছাল তা নিয়ে রীতিমত বিস্ময় তৈরি হয়েছে। মঙ্গলবার এ রাজ্যের প্রথম নোভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। লন্ডন থেকে মুম্বই হয়ে কলকাতায় আসা ১৮ বছরের এক তরুণের দেহে ‘কোভিড-১৯’-এর অস্তিত্ব মিলেছে বলে জানিয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্যদপ্তর । স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ওই তরুণের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট । কিন্তু কিভাবে ওই তরুন বিমানবন্দরের স্ক্যানার এড়ালেন এখন সেটাই প্রশ্নের।
বলা হচ্ছে বিমান বন্দর ও জাহাজ বন্দরগুলিতে বসানো হয়েছে থার্মাল স্ক্যানার। বিদেশ থেকে কেউ আসলে তাকে ওই স্ক্যানারের মধ্যে দিয়েই আসতে হবে । শরীরে অতিরিক্ত তাপমাত্রা ও অস্বস্তি থাকলে তা ধরা পড়বে। সাথে সাথে বন্দরে থাকা স্বাস্থ্য আধিকারিকরা তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবেন। কিন্তু মুম্বাই কিংবা কলকাতা বিমানবন্দরে বিষয়টি ধরা পড়লনা কেন?
রবিবার ভোর ৩টে নাগাদ কলকাতা বিমানবন্দরে নামেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই পড়ুয়া। সপ্তাহখানেক আগে লন্ডনে একটি পার্টিতে গিয়েছিলেন তিনি। পার্টিতে হাজির তাঁর এক বান্ধবীর সম্প্রতি কোভিড-১৯ ধরা পড়েছিল। সে-দিন তাঁর সঙ্গে নেচেছিলেন ওই তরুণ। সূত্রের খবর, অক্সফোর্ড থেকে তরুণের পরিবারকে জানানো হয়, পার্টিতে থাকা এক জনের দেহে করোনা ভাইরাসের প্রমাণ মিলেছে। সেই জন্য ওই তরুণকে তাঁর নমুনা পরীক্ষা করতে বলা হয়।
এর পর সোমবার দুপুরে এম আর বাঙুর হাসপাতালে যান ওই তরুণ। স্বাস্থ্য ভবনের সঙ্গে কথা বলে তৎক্ষণাৎ তাঁকে আইডিতে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক। সেই মতো আইডি-তে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা পৌঁছে যান। আর তাতেই জানা যায় তিনিই কলকাতায় প্রথম করোনা ভাইরাসে আক্রন্ত ৷ সদ্য ইংল্যান্ড থেকে ফেরেন তিনি৷ তাকে ভর্তি করা হয়েছে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে৷ স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর যে তার শরীরে নভেল করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে৷
একটি সূত্রে জানা গেছে বাড়ি ফিরে ওই যুবক হোম কোরেনটাইনেই ছিলেন৷ তারপর অসুস্থ বোধ করায় তার মা তাকে নিয়ে আসেন বেলেঘাটা আইডিতে৷ নাইসেডে তার সোয়াব পরীক্ষায় কোভিড-১৯ পজিটিভ মেলে৷ যুবক রাজ্য সরকারের উচ্চপদস্থ আমলার ছেলে৷
ইতিমধ্যেই তার বাবা ও মাকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে৷ সঙ্গে যেই গাড়ি করে তিনি বাড়ি ফেরেন, সেই চালককেও রাখা হয়েছে পর্যবেক্ষণে৷ তা ছাড়া যে ফ্লাইটে তিনি এসেছেন, তার সহযাত্রীদের খোঁজ চলছে৷ প্রয়োজনে তাদেরও আইসোলেশনে রাখা হতে পারে৷
এখন প্রশ্ন হল, মুম্বই বা কলকাতা বিমানবন্দরের স্ক্রিনিংয়ে তরুণের দেহে করোনার উপস্থিতি ধরা পড়ল না কেন? একটি সুত্র অবশ্য বলছে প্রথম দিকে যেহেতু তাঁর কোনও উপসর্গ ছিলনা তাই থার্মাল স্ক্যানারে ধরা পড়েনি। যদি তাই হয় তবে সেটাও দুশ্চিন্তার, কারন প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা না পড়লে সদ্য আক্রান্ত দেশে ঢুকে পড়তে পারে।
অবশ্য বুধবার মধ্যরাতের পর থেকে ইওরোপ থেকে কাউকেই আর এদেশে ঢুকতে দেওয়া হবেনা বলে ভারত সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।