ওয়েব ডেস্ক: জ্বর হয়েছে! শুধু এইটুকু শুনেই করোনায় আক্রান্ত ভেবে এক বৃদ্ধাকে চারতলা থেকে একেবারে সটাং নীচে নামিয়ে দিলেন আবাসিকরা। এদিকে বৃদ্ধার গায়ে ধুম জ্বর, তবে করোনা উপসর্গ নেই। তবুও ক্রমাগত চলছে আবাসনের প্রতিবেশীদের চোখ রাঙানি। রবিবার ভোরে এমনই ঘটনার সাক্ষী থাকলো উত্তরপাড়ার শিবতলা স্ট্রিট।
গায়ে জ্বর নিয়ে প্রায় ৫ ঘন্টা রাস্তাতেই বসে ছিলেন ওই বৃদ্ধা। সাত সকালে এমন দৃশ্য দেখলেন সকলেই কিন্তু একটি মানুষও এগিয়ে এলেন না। পরে অবশ্য তৃণমূল বিধায়ক সুব্রত মুখোপাধ্যায় ঘটনাটি জানতে পারেন। খবর দেওয়া হয় উত্তরপাড়া থানায়। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যান বিদায়ী বিধায়ক সুব্রত মুখোপাধ্যায়। এরপর পুলিশের সহযোগিতায় ওই বৃদ্ধাকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করিয়ে ফের তাঁর আবাসনেই পৌঁছে দিয়ে যান খোদ পুলিশ।
জানা গিয়েছে, বছর সত্তরের ওই বৃদ্ধা উওরপাড়ার শিবতলা স্টিটের চারতলার আবাসনে একাই থাকতেন। যেহেতু তিনি একাই থাকেন, সে কারণে স্বাভাবিকভাবেই তাঁর সমস্ত কাজ নিজেকেই করতে হতো৷ শুক্রবার বৃষ্টিতে ভেজায় এদিন সন্ধ্যাতেই জ্বর আসে ওই বৃদ্ধার। এইভাবেই কেটে যায় শনিবার। এদিকে ওই বৃদ্ধা যে জ্বরে আক্রান্ত তা কোনোভাবে আবাসিকদের মধ্যে জানাজানি হয়ে যায়।
এরপরই রবিবার তাঁর প্রতি সামান্য সহানুভূতি তো দূরের কথা বরং করোনা আক্রান্ত সন্দেহে রীতিমতো টেনে হিঁচড়ে বৃদ্ধাকে আবাসনের নীচে বের করে দেওয়া হয়। তারপর অসহায়ের মতো বৃদ্ধা শুধু সকলের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন,কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেনি। এক সময় বৃদ্ধা ভেবেই নিয়েছিলেন খোলা আকাশের নিচেই হয়তো তাঁর মৃত্যু লেখা আছে। এদিকে প্রায় ৬ ঘন্টা পর পাড়া প্রতিবেশীদের সাহায্যে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন স্থানীয় বিদায়ী বিধায়ক সুব্রত মুখোপাধ্যায়। এরপর তাঁর তত্ত্বাবধানে খবর যায় উত্তরপাড়া থানায়৷ পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে সুব্রতবাবু নিজের উদ্যোগে অ্যাম্বুল্যান্স পাঠান।
ততক্ষণে বৃদ্ধার শারীরিক অবস্থা ক্রমশ হচ্ছেন। এরপর পুলিশ ওই বৃদ্ধাকে উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে সেখানে সমস্ত ধরণের পরীক্ষার পর চিকিৎসকরা জানান, উনি করোনা আক্রান্ত নন। সামান্য ইনফ্লুয়েঞ্জা জ্বর হয়েছে। এরপর পুলিশই নিজের দায়িত্বে ওই বৃদ্ধাকে তাঁর আবাসনে পৌঁছে দিয়ে যায়। এমনকি অসুবিধা হলে ফোন করার কথাও বলেন৷ পুলিশ ও বিধায়ক সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের সহযোগিতায় আপাতত শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ ওই বৃদ্ধা।