ভীষ্মদেব দাশ, নন্দীগ্রামঃ গোষ্ঠী দ্বন্দ্বে ফের আড়াআড়ি ফাটল ধরল নন্দীগ্রামের তৃণমূলে। মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর গড়ে দলীয় নির্দেশ অমান্য করার অভিযোগ উঠল তৃণমূলেরই জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে। নির্দেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তড়িঘড়ি বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূলের কোর কমিটি। ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক জল্পনা শুরু হয়েছে পরিবর্তনের ধাত্রীভূমিতে।
দুর্ণীতির অভিযোগে বহিষ্কৃত প্রধানকে নিয়েই নন্দীগ্রামে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক কোন্দল। সম্প্রতি আমফান দুর্ণীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে পরিবর্তনের আঁতুড়ঘর নন্দীগ্রাম থেকে ২০০জন নেতা-কর্মীকে শোকজ করেছিল তৃণমূল। যারমধ্যে তৃণমূলের ২৫জন হেভিওয়েট নেতা-নেত্রীকেও সাসপেন্ড করেছিল দল। এরপরই শুরু হয়েছিল রাজনৈতিক চাপান উতর। ক্রমশ বাড়ছিল গোষ্ঠী দন্দও। প্রসঙ্গত আমফান দুর্ণীতি কান্ডে নাম জড়িয়ে ছিল নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের ৩নম্বর কেন্দ্যামারী পঞ্চায়েত প্রধান মনসুরা বেগমের। দল মনসুরা বেগমকে শোকজ করার পরে পদত্যাগ করেছিলেন তিনি। পাশাপাশি মনসুরা বেগমের স্বামী তথা জমি আন্দোলনের প্রথম সারির নেতা সেক সাহাবুদ্দিনের নাম জড়িত ছিল দুর্ণীতিকান্ডে। তাই দল শোকজ করেছিল সেক সাহাবুদ্দিনকেও। সেক সাহাবুদ্দিন বলেন, আমাদের মিথ্যে অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে। আমরা দুর্ণীতির সাথে জড়িত নই। দল আমাদের ভরসা করেছ।
নন্দীগ্রাম তৃণমূল নেতৃত্ব প্রধান হিসেবে সাকিনা বেগমকে মনোনীত করেছিলেন। দলের তরফে মঙ্গলবার প্রধান নির্বাচনের নির্ঘন্ট ছিল। ১৪৪ধারা জারি করে কড়া হাতে প্রধান নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত ছিল প্রশাসন। কিন্তু ব্যাক্তিগত সমস্যার কারনে দল মনোনীত প্রার্থী সাকিনা বেগম মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করেন। এরপরই দলের নির্দেশ অমান্য করে উপস্থিত ১৫জন পঞ্চায়েত সদস্যের মৌন সম্মতিতে ফের প্রধান হন দুর্ণীতিতে নাম জড়িত প্রাক্তন প্রধান মনসুরা বেগম।
দলের বিরুদ্ধে গিয়ে মনসুরা বেগমের পুনরায় প্রধান নির্বাচন হওয়ার ঘটনায় ক্ষুব্ধ নন্দীগ্রাম তৃণমূল নেতৃত্ব। যারফলে বুধবারই কোর কমিটির বৈঠক হবে জানিয়েছেন নন্দীগ্রাম বিধানসভার তৃণমূল কোর কমিটির সভাপতি মেঘনাদ পাল। মেঘনাদ বাবু জানান, মনসুরা বেগম দুর্নীতিতে জড়িত থাকার কারনে দল তাকে বহিষ্কার করেছিল। দলের নির্দেশ অমান্য করেই মনসুরা বেগম পুনরায় প্রধান পদের জন্য আজ উপস্থিত ছিলেন। দলের মনোনীত প্রার্থী সাকিনা বেগম মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করায় উপস্থিত সকলের মৌন সম্মতিতে মনসুরা বেগম প্রধান হন। দল মনসুরা বেগমকে প্রধান হিসেবে চায় না। তাই বুধবার কোর কমিটির বৈঠকের পরে দল সিদ্ধান্ত জানাবে।
মনসুরা বেগম জানান, আমি নির্দোষ তাই দল আমাকে সমর্থন করেছে। সদস্যদের সমর্থনে আমি প্রধান হয়েছি। দলের তরফে শোকজ তুলে নেওয়া হয়েছে।
দলের নির্দেশ মানা হয়নি! নন্দীগ্রামে দুর্ণীতিতে নাম থাকা শোকজ প্রধান পুনরায় প্রধান পদে বসল, বুধবার দলীয় বৈঠক
RELATED ARTICLES