নিজস্ব সংবাদদাতা: তৃতীয় দফাতেও খালি হলনা হোস্টেল ফলে যথেষ্টই বিড়ম্বনায় IIT খড়গপুর কর্তৃপক্ষ। ২৩শে আগষ্টের মধ্যে বাকি পড়ুয়াদের হোস্টেল খালি করে দিতে অনুরোধ করা হয়েছিল। ছাত্রদের পই পই করে বুঝিয়েছেন অধ্যাপক ওয়ার্ডেনরা। অনেক কষ্টে জনা তিরিশেক পড়ুয়াকে ঘর মুখো করানো গেছে কিন্তু এখনও রয়ে গেছেন দুশোরও কিছু বেশি পড়ুয়া, দূর ভিন রাজ্যের এই পড়ুয়ারা হোস্টেল ছাড়তেই চাইছেনা। কী ভাবে এঁদের বাড়ি ফেরানো যায় সেই চেষ্টাই করে চলেছেন আইআইটি কর্তৃপক্ষ।
ইতিমধ্যেই তিন পড়ুয়া সহ চারজন করোনা আক্রান্ত হয়ে গেছেন IIT ক্যাম্পাসে। আক্রান্তদের মধ্যে একজন স্বাস্থ্যকর্মী। সংক্রমন যাতে আরও না ছড়িয়ে পড়ে তাই প্রথম ছাত্রের সংক্রমন ধরার পরেই আইআইটি একটি সার্কুলার জারি করে ২৩তারিখের মধ্যে বাকিদের হোস্টেল ছেড়ে দিতে বলেছিল কিন্তু কেউই হোস্টেল ছাড়েননি আর ২৩তারিখেই বাকি তিনজনের আক্রান্ত হওয়ার খবর আসে। আগের পড়ুয়ার উপসর্গ থাকায় তাঁকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু পরের তিনজন যেহেতু উপসর্গহীন তাই তাঁদের বি.সি.রায় হলের আইসোলেশনেই রাখা হয়েছে। ২৪তারিখ রাত আড়াইটা নাগাদ আক্রান্ত দুই পড়ুয়াকে হোস্টেল থেকে তুলে এনে হাসপাতালের আইসোলেশনে নিয়ে আসা হয়।
২৫ তারিখ ফের কয়েকজনের নমুনা সংগ্ৰহ করছে আইআইটি। এই দুই পড়ুয়াকে যে চালক হোস্টেল থেকে এনেছিলেন, ওই সময়ে যে দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকর্মীরা তাঁদের পরিচর্যায় ছিলেন এরকম কয়েকজনের নমুনা সংগ্ৰহ করে পাঠানো হবে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের ভাইরোলজি ল্যাবে। প্রথম ছাত্রটি আক্রান্ত হওয়ার পর ২১তারিখ ৬জনের নমুনা পাঠিয়েছিল IIT যার মধ্যে পরের তিনজনের পজিটিভ আসে। অর্থাৎ সংগৃহিত নমুনার ৫০% আক্রান্ত, ফলে উদ্বেগ রয়েছে।
লকডাউন ঘোষনার আগেই IIT পড়ুয়াদের হোস্টেল ছাড়ার অপশন দিয়েছিল। সেই সময় ১৪হাজারের ৯হাজার পড়ুয়াই বাড়ি চলে যায়। পরের দফায় জুন মাসে ফের আইআইটি বাকি সব্বাইকে হোস্টেল ছাড়তে বলে। এবার বাধ্যতামূলক হোস্টেল ছাড়ার কথাই বলেছিল কিন্ত তা স্বত্ত্বেও বিভিন্ন অজুহাতে ২৫০জন মত থেকে যায়। আইআইটি তাঁদের একটি হোস্টেলে তুলে এনে রাখে। প্রাইভেট মেস চালু করা হয়। শোনা যায় তার মধ্যেই আবার কয়েকজন আলাদা করে রান্না করে খেতেন। এঁদের মধ্যেই তিন পড়ুয়া আক্রান্ত হন। আর স্বাস্থ্য কর্মী কিভাবে আক্রান্ত হন তা নিয়ে দুটি ভিন্ন মত রয়েছে। কেউ বলছেন প্রথম আক্রান্তের সোয়াব সংগ্ৰহ করতে গিয়েই আক্রান্ত হন আবার কারও মতে বাঁকুড়ার বাড়ি থেকেই সংক্রমন নিয়ে এসেছিলেন তিনি।
প্রথম আক্রান্তের পরেই IIT মরিয়া হয়ে নোটিশ দেয় ২৩ তারিখেই হোস্টেল ছাড়তে হবে বাকিদের। কিন্তু ২৩তারিখ পেরিয়ে গেছে ৪৮ ঘন্টা আগেই, হোস্টেল ছেড়েছেন হাতে গোনা কয়েকজন। তাও বাবা বাছা করে বোঝানোর পর। বাকিদের যুক্তি হয় প্লেনের টিকিট মিলছেনা নয় ট্রেনের। কেউ আবার যুক্তি দেখাচ্ছেন, এখান থেকে গেলে যদি তাঁদের পরিবার আক্রান্ত হয়ে পড়ে তখন কী হবে?
এখন IIT কর্তৃপক্ষ পড়েছেন বিড়ম্বনায়। খোদ কর্তৃপক্ষই এখন এজেন্ট ধরে পড়ুয়াদের টিকিট জোগাড়ের চেষ্টা করছেন। হোস্টেল খালি করার পর পুরো জায়গা স্যানিটাইজ করাতে হবে তাঁদের।