নিজস্ব সংবাদদাতা: পুলিশের হস্তক্ষেপেও সমাধান সূত্র মিললনা। ফলে বহাল থাকল বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া IIT-Kharagpur ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে দোকানদারদের ঘোষিত ২১ দিন ব্যাপী ধর্মঘট। বুধবার ক্যাম্পাসে প্রবেশের মুখে IIT নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে নিগৃহীত হন দোকানের মালিক তথা ব্যবসায়ী সমিতির নেতা পূর্ণেন্দু পানিগ্রাহী। এমনিতেই বিভিন্ন কারনে IIT কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুসছিলেন ক্ষতিগ্রস্ত দোকানদাররা।
![](http://thekharagpurpost.in/wp-content/uploads/2020/10/IMG-20201001-WA0008-300x225.jpg)
বুধবারের ঘটনা সেই ক্ষোভে ঘি ঢালে। এরপরই বৃহস্পতিবার থেকে ২১ দিনের জন্য ক্যাম্পাসের ভেতরে সমস্ত দোকান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। সিদ্ধান্ত মতই বৃহস্পতিবার ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে ৩০০টি দোকান বন্ধ রাখেন তাঁরা। পাশাপাশি ক্যাম্পাসের প্রবেশ মুখে মূল ফটকের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি নিয়েছিলেন তাঁরা। আর সেই কর্মসূচি চলাকালীন অনলাইনে অর্ডার আসা বিভিন্ন দ্রব্য প্রবেশে বাধা দেন তাঁরা। এদিকে গত কয়েকদিন ধরে চলা এই বিক্ষোভ ও সংঘাতের পরিবেশ কাটিয়ে তোলার জন্য উদ্যোগ নেয় খড়গপুর পুলিশ। বৃহস্পতিবার আন্দোলনকারীদের খড়গপুর টাউন থানায় আহ্বান জানানো হয় পুলিশের তরফে। কিন্তু তাতেও কোনও মীমাংসা সূত্র বের হয়নি বলেই জানা গেছে।
IIT ক্যাম্পাসের মধ্যে থাকা দোকানদারের দাবি আনলক ৪ পর্বে কেন্দ্র সরকারের গাইড লাইন মেনে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে থাকা দোকানদারদের স্বাভাবিক ব্যবসা করতে দিতে হবে। উল্লেখ্য এই মুহূর্তে IIT ক্যাম্পাসে বেলা ২টার বেশি দোকান খোলা নিষেধ রয়েছে। দোকানদারদের বক্তব্য দু’বেলা দোকান না খোলার জন্য তাঁরা লোকসান করছেন। তাঁদের আরও দাবি ক্যাম্পাসে প্রবেশের চারটি গেটই খুলতে হবে। কারন মাত্র একটি গেট খুলে রাখার জন্য মানুষজনকে দু’পিঠে ৬ কিলোমিটার অবধি ঘুরপথে যাতায়ত করতে হচ্ছে। IIT কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে বাড়তি করোনা সংক্রমনের কারণেই এই ব্যবস্থা নিতে হচ্ছে তাঁদের। বৃহস্পতিবার পুলিশের পক্ষ থেকে আলোচনায় বলা হয় দু’বেলা দোকান খোলার ব্যাপারে তাঁরা IIT কর্তৃপক্ষকে রাজি করবেন কিন্তু গেট একটি খোলা থাকবে।
![](http://thekharagpurpost.in/wp-content/uploads/2020/10/IMG-20201001-WA0005-300x225.jpg)
দোকানদাররা এই প্রস্তাবে রাজি হননি। তাঁরা পরিষ্কার জানিয়ে দেন দীর্ঘ লক ডাউন পেরিয়ে এসে নতুন করে IIT কর্তৃপক্ষের শিকার তাঁরা। এই লোকসান তাঁরা আর বহন করতে পারছেননা ফলে IIT সমস্ত গেট খুলে না দিলে আর দুবেলার দোকান না চলতে দিলে এই ধর্মঘট চলবে।পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয় দোকানদারদের আন্দোলনে পুলিশ হস্তক্ষেপ করবেনা কিন্তু আন্দোলনকারীরা যেন IIT ক্যাম্পাসের মুখে অবরোধ না করে।
এদিকে বন্ধের প্রথম দিনেই সঙ্কট শুরু হয়েছে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে। ভেতরে অন্ততঃ ১৫০০ পরিবার রয়েছে। দোকান বন্ধ থাকায় অনেককেই বাইরের বাজার থেকে বাজার করতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু এই পথও আটকানোর পথে হাঁটতে পারে আন্দোলনকারীরা এমন ইঙ্গিত মিলেছে। বৃহস্পতিবার অনলাইনে আসা ডেলিভারি বয়দের আন্দোলনকারীরা অনুরোধ করেছেন ক্যাম্পাসের ভেতরে তাঁরা যেন প্রবেশ না করেন। ফাস্টফুড বা প্রক্রিয়াজাত খাদ্য প্রবেশে বাধা দেওয়ার মত ঘটনাও ঘটেছে।
আন্দোলনকারীদের দাবি নিজের মর্জি মত একটি প্রতিষ্ঠানকে কর্তৃপক্ষ রেস্টুরেন্টে চালাতে, ব্যবসা করতে দিচ্ছে প্ৰয়োজনে সেই সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হবে। সব মিলিয়ে চূড়ান্ত সংঘাতের মুখে আন্দোলনকারীরা।
আন্দোলনকারীদের পক্ষে পূর্ণেন্দু পানিগ্রাহী জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই দোকানদারদের উচ্ছেদের হুমকি দিচ্ছে IIT কর্তৃপক্ষ। যদিও কোনভাবেই আমরা এই হুমকির কাছে মাথানত করবনা আমরা। আমাদের ভাতে মারার চক্রান্ত হচ্ছে। এমনিতেই ব্যাবসা শেষ করে দিয়েছে IIT কর্তৃপক্ষ ফলে নতুন করে উচ্ছেদের ভয় পাইনা আমরা। যদিও পুরো বিষয়টি নিয়ে IIT তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।