Homeএখন খবরঝাড়গ্রামে স্ত্রী ও মা কে মরিয়া কাটারির কোপ ব্যক্তির, নিহত গৃহবধূ, গুরুতর...

ঝাড়গ্রামে স্ত্রী ও মা কে মরিয়া কাটারির কোপ ব্যক্তির, নিহত গৃহবধূ, গুরুতর আহত বৃদ্ধা, অথৈ জলে দুই শিশু

             
নিজস্ব সংবাদদাতা: দশ আর ছ’ বছরের দুটি শিশু হতবাক! বুধবার রাত ১টায় পুলিশ এসে উদ্ধার করেছে মায়ের লাশ, ঠাকুমার হাতে গভীর ক্ষত, নিয়ে যাওয়া হয়েছে হাসপাতালে। বাবাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গোটা ঘর যেটা একটু আগেই রণক্ষেত্র ছিল, যেখানে এখনও চাপ চাপ রক্ত পড়ে ভেসে যাচ্ছে মেঝে সেখানেই প্রায় অনাথ হয়ে যাওয়া দুই শিশু! গার্হস্থ্য হিংসা শৈশবকে কতখানি অসহায় করে তুলতে পারে তার স্বাক্ষী রইল ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুর থানা এলাকার আমড়াশোল গ্রাম। মুহূর্তের হিংসায় মায়ের স্মৃতি চিরকালের জন্য হারিয়ে গেল দুই শিশুর কাছ থেকে আর প্রিয় বাবা হয়ে গেল খুনি!

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
বুধবার রাতে স্বামীর হাতে খুন হওয়া গৃহবধূ পিয়ালী দে। গোপীবল্লভপুর ১ নম্বর ব্লকের সারিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের শুকা আমড়াশোলের ২৯বছরের গৃহবধূ  কাটারির কোপে হত্যা করেছেন স্বামীর দেবব্রত দে । দেবব্রতর ওই কাটারির কোপেই গুরুতর আহত তার মা। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায় , অভিযুক্ত দেবব্রত দীর্ঘদিন ধরে কোন কাজ কর্ম করতেন না। হতাশা থেকে মদে আসক্ত হন। দেবব্রতর বাবা সরকারি চাকুরে ছিলেন, ছেলের মতিগতি দেখে স্ত্রী আর পুত্রবধূর হাতে সামান্য টাকা তুলে দিয়েছিলেন মারা যাওয়ার আগে। তাই দিয়ে সংসার চালাচ্ছিল পিয়ালী তার দশ বছর ও ছয় বছরের দুই ছেলেকে নিয়ে ।

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
হাত টান পড়লেই সেই টাকা চাইত দেবব্রত। শুরু হয়ে যেত মা আর স্ত্রীর সঙ্গে বচসা। বুধবার সন্ধ্যা থেকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সেরকমই বচসা শুরু হয়। রাত বারোটা নাগাদ স্বামী স্ত্রীর বচসা চরম আকার ধারণ করে। সম্ভবত মাঝখানে মদ খেয়েছিল সে।  অভিযোগ রাতে বচসা চলাকালীন হটাৎই কাটারি নিয়ে এসে  পিয়ালী কে পিছন থেকে কোপ মারে দেবব্রত। বউমাকে বাঁচাতে গেলে মাকেও কাটারি দিয়ে আঘাত করে সে।  পিয়ালী কে কাটারি দিয়ে মারার ফলে ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়ে পিয়ালী ।

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
ঘটনার খবর পেয়ে পিয়ালীর বাবা বিনয় কুমার ভোল পিয়ালীর বাড়ি থেকে ৩০ কিলোমিটার দুর ঝাড়খণ্ডের বড়শোল থানার মহিষামুড়া গ্রাম থেকে ছুটে আসেন । পিয়ালীকে উদ্ধার করে গোপীবল্লভপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসা তাকে মৃত ঘোষণা করে । পিয়ালীর বাবা বিনয় কুমার ভোল পিয়ালির স্বামীর বিরুদ্ধে গোপীবল্লভপুর থানায় লিখিত অভিযোগ জানায় । অভিযোগ পেয়ে গোপীবল্লভপুর থানার পুলিশ গিয়ে দেখে গ্রামবাসীরা পিয়ালীর স্বামী দেবব্রত কে বাড়িতে আটকে রেখেছে । সেখান দেবব্রতকে গ্রেফতার করে গোপীবল্লভপুর থানার পুলিশ।

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
যদিও দেবব্রত পরে তার স্ত্রীর অন্য  অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে বলে পুলিশকে জানায়। বলে সেই রাগেই সে এটা করেছে। কিন্তু এই তত্ত্ব প্রতিবেশিরা মানেনি। পিয়ালীকে তারা সৎ চরিত্র ও সাধারন গৃহবধূ বলেই জানিয়েছেন। প্রতিবেশিরা জানিয়েছেন, এর আগেও এই টাকা পয়সার দাবিতে পিয়ালীকে মারধর করেছে দেবব্রত। সেই কারনে পিয়ালী বাপের বাড়ি চলে যায়। পঞ্চায়েত ডেকে মীমাংসা হয়। সরস্বতী পুজোর সময় দেবব্রত নিজে গিয়ে তাকে নিয়ে আসে।

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
পুলিশ যদিও তার নিজের মত করে তদন্ত চালাচ্ছে। দেবব্রতের  বিরুদ্ধে ৪৯৮ ধারায় বধূ নির্যাতন,  ৩২৬ ধারায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত, ৩৯৭ ধারায় খুনের চেষ্টা ও ৩০২ ধারায় খুনের মামলা রুজু করেছে। অভিযুক্তকে আদালতে পেশ করে ১০ দিনের জন্য নিজেদের নিয়েছে পুলিশ। আর এসবের মধ্যে নিজদের অস্তিত্ব হারিয়ে যেন নির্বাক হয়ে গেছে শিশু দুটি।

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
তবে শুধুই প্রতিবেশিরা নয় গ্রামবাসীরাও জানিয়েছেন এই গার্হস্থ্য হিংসা বেড়ে যাওয়ার মূলে রয়েছে চোলাই আর মদের প্রতি আসক্তি। ব্যঙের ছাতার মত গজিয়ে উঠছে চোলাইয়ের ঠেক। পারিবারিক অশান্তি, উপার্জনের সমস্ত টাকা ধ্বংস হয়ে যাওয়া আর পরিশেষে গার্হস্থ্য যেন মুষল পর্ব ডেকে এনেছে গ্রামীন জীবনে। 

RELATED ARTICLES

Most Popular