নিজস্ব সংবাদদাতা: শনিবার রাতে মেদিনীপুর সরকারি হোম বিদ্যাসাগর বালিকা ভবন থেকে পালিয়ে যাওয়া চার কিশোরীর ২ জন ফিরে এসেছে এবং আরও একজন ফিরছে বলে জানাও গেছে পুলিশ সূত্রে কিন্তু রবিবার সন্ধ্যা অবধি খোঁজ পাওয়া যায়নি এই পলাতক কাহিনীর মূল পরিকল্পক কিশোরীর। যে নাকি ইতিমধ্যেই তিন তিনবার পালানোর হ্যাট্রিক করে বসে রয়েছে। পুলিশ তার খোঁজে তল্লাশি অভিযান জারি রেখেছে। ১৮ বছর পূর্ণ হতে মাত্র কয়েকমাস বাকি রয়েছে ওই কন্যার।
উল্লেখ্য রবিবার সকালে মেদিনীপুর শহর লাগোয়া সরকারি ওই বালিকা হোম কর্তৃপক্ষ আবিষ্কার করেন হোমের মধ্যে অবস্থিত সিসি টিভি ক্যামেরার মুখ ঘুরিয়ে হোমের ভেতর থেকে চার কিশোরী পালিয়ে গেছে। নিজেদের হোমের জানলার রড বাঁকিয়ে রুমের বাইরে বেরিয়ে ওড়নাকে দড়ির মত ব্যবহার করে প্রাচীর টপকে পালায় ওই চারজন।
জানা গেছে পলাতক চার কিশোরীর মধ্যে দুজন পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড় থানা এলাকার ও বাকি দুজনের বাড়ি এই জেলারই ডেবরা এবং খড়গপুর গ্রামীন থানার মাদপুর এলাকার বাসিন্দা। আদালতের নির্দেশেই এঁদের হোমে রাখা হয়েছিল।
পুলিশ সূত্রে খবর এদের মধ্যে দু-জনকে নাবালিকা অবস্থায় বিয়ে দেওয়ার সময় বিয়ের পিঁড়ি থেকে তুলে আনা হয় অন্য দুজনও প্রেমের কারনে বাড়ি থেকে পালিয়েছিল যাদের উদ্ধার করে পুলিশ। এদের প্রত্যেককেই আদালতের নির্দেশে হোমে রাখা হয়েছিল। ঘটনার পরেই হোমের তরফে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ জানানো হলে মেদিনীপুর কোতয়ালি থানার আইসি পার্থসারথী পাল সহ জেলা পুলিশের এক জন ডেপুটি পুলিশ সুপার ও অন্যান্য আধিকারিকরা হোমে গিয়ে সরে জমিনে তদন্তের কাজ সারেন।
পরে পুলিশের তরফে বিভিন্ন জায়গায় খবর পাঠানো হয় এবং শুরু হয় তল্লাশি অভিযান। পুলিশের এই ব্যাপক তল্লাশি ও নজরদারিতে পালানো সম্ভব নয় মনে করেই ডেবরা ও খড়গপুরের ২কিশোরী ফিরে আসে হোমে। খবর পাওয়া গেছে নারায়নগড়ের এক কিশোরীও ফিরতে চায় বলে পুলিশকে জানিয়ে দিয়েছে। রবিবার রাতেই হয়ত পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করবে সে। কিন্তু নারায়নগড়ের এক কিশোরীর এখনও সন্ধান মেলেনি। জানা গেছে বিয়ের জন্য বাড়ি এবং হোম থেকে পালানোর হ্যাট্রিক করেছে সে।
একটি সূত্র মারফৎ জানা গেছে নারায়নগড়ের বাসিন্দা ওই কিশোরী যে কিনা মূলত এই পালানোর পরিকল্পনা তৈরি করেছিল বলেই প্রাথমিক ভাবে মনে করা তাকে হোমে আনা হয়েছিল গত ২৬ মার্চ। নাবালিকা অবস্থায় বাড়ি থেকে পালিয়ে বিয়ে করতে চাওয়ার অপরাধে গ্রেপ্তার হয়েছিল সে। কিন্তু এটাই তার প্রথম ঘটনা নয় ইতিপূর্বে সে আরও একবার এই হোমে কাটিয়ে গেছে। সেবারও বাড়ি থেকে পালিয়ে বিয়ে করতে যাওয়ার অপরাধে ধরা পড়েছিল সে। সেবার বুঝিয়ে তাঁর বাবা-মা’র হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল।
এরপর ফের ১৮ বছর বয়স না হয়া সত্ত্বেও ফের বাড়ি থেকে পালিয়ে বিয়ে করতে যাওয়ায় তাঁকে উদ্ধার করে ২৬শে মার্চ পাঠানো বিদ্যাসাগর বালিকা ভবন হোমে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে ১৮ বছর পূর্ণ হতে মাত্র কয়েক মাস বাকি রয়েছে তার। এরপর তার বিয়ে করার বাধা থাকছেনা তবুও সে বিয়ে করার জন্য এতটাই মরিয়া যে বারবার পালাচ্ছে।