নিজস্ব সংবাদাতাদ: বেধড়ক মারা হল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটাল মহকুমার এক সাংবাদিককে। শনিবার রাত ১০টা নাগাদ ঘাটালের মনসুখা চাতালের কাছে পথ আটকে ওই সাংবাদিককে এলোপাথাড়ি পেটানো হয় বলে জানা গেছে। এমনটাই দাবি করেছে ঘাটাল মহকুমার একটি জনপ্রিয় পোর্টালের পক্ষ থেকে। স্থানীয় সংবাদ নামের ওই নিউজ পোর্টাল দাবি করেছে কোনও রকমে দুস্কৃতিদের হাত থেকে বেঁচে ফিরেছেন ওই সাংবাদিক। আক্রান্ত সাংবাদিক কুমারেশ চানক জানিয়েছেন, দুষ্কৃতিদের চিনতে পেরেছেন তিনি, তারা প্রত্যেকেই ঘাটালের সদ্য পরাজিত বিধায়ক তথা তৃনমূল নেতা শঙ্কর দোলাইয়ের ঘনিষ্ঠ। যদিও শঙ্করবাবু দাবি করেছেন দুস্কৃতিদের তিনি চেনেননা।
ওই নিউজ পোর্টালের বয়ান অনুযায়ী, “ঘাটালের প্রাক্তন বিধায়ক তথা তৃণমূল নেতা শঙ্কর দোলইয়ের বিরুদ্ধে খবর করার জন্য আমাদের ‘স্থানীয় সংবাদ’-এর সাংবাদিক কুমারেশ চানককে আজ ১২ জুন রাত ১০ টা নাগাদ বেধড়ক পেটানো হল। কুমারেশবাবু কোনও রকমে প্রাণে বেঁচেছেন। বিষয়টি ঘাটাল মহকুমা পুলিশ আধিকারিক অগ্নিশ্বর চৌধুরীকে ফোনে জানানো হয়েছে। ঘাটালের সাংসদ প্রতিনিধি রামপদ মান্না এবন ঘাটাল ব্লক তৃণমূল সভাপতি দিলীপ মাজিকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। দিলীপবাবু এবং রামপদবাবু দুজনেই এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন।”
কুমারেশবাবু বাবু তাঁর বয়ানে বলেন, শনিবার আমি বাইরের কাজ সেরে বাড়ি ফিরছিলাম, সেই সময় মনশুকা চাতালের কাছে কয়েক জন দুষ্কৃতী তারা এলাকায় শঙ্করবাবুর অনুগামী হিসেবে পরিচিত। তারা আমাকে আটকে বেধড়ক মারতে শুরু করে। মারতে মারতে বলে, তোদের স্থানীয় সংবাদ কেন শঙ্কর দোলইয়ের বিরুদ্ধে খবর করে? তোকে আজই শেষ করে দেওয়া হবে।” অন্যদিকে শঙ্করবাবু এই ঘটনার নিন্দা করেছেন। তিনি বলেন, আমি ঘটনাটি সম্বন্ধে কিছুই জানি না। এই ঘটনার সঙ্গে যদি কেউ যুক্ত থাকে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা করা হবে।
উল্লেখ্য কয়েকদিন আগেই ঘাটাল পঞ্চায়েত সমিতির অন্তর্গত অন্তর্গত মনসুখা-২ গ্রামপঞ্চায়েতের প্রধান পুতুল পাত্র বিডিওর কাছে জমা দেওয়া পদত্যাগ পত্রে বলেছিলেন, শারীরিক এবং মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে রয়েছেন তিনি। তাই পদত্যাগ করতে চান তিনি। যদিও বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় হওয়ায় পুতুলকে শেষ অবধি সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে আসতে বলা হয়। পুতুল বিডিওর কাছে শুনানির জন্য হাজির হননি ফলে পদত্যাগ গৃহীত হয়নি।
পুতুলের অভিযোগের নিশানায় ছিলেন ঘাটাল ব্লক তৃনমূলের শীর্ষ নেতা ও ঘাটালের পরাজিত বিধায়ক শঙ্কর দোলাই। পুতুল তাঁর অভিযোগে দলীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছিলেন, তাঁকে কুৎসিত প্রস্তাব ও নোংরা ম্যাসেজ করার পাশাপাশি তাঁর পঞ্চায়েত এলাকায় বিধানসভায় বিজেপি জিতেছে এমন সব এলাকায় উন্নয়নের কাজ করা যাবেনা। উল্লেখ্য বিজেপির কাছে তৃনমূল পশ্চিম মেদিনীপুরে যে দুটি আসন হারিয়েছে তার একটি খড়গপুর সদর অন্যটি ঘাটাল। পুতুল নেতার অন্যায় আবদার না মানায় তাঁর ওপর প্রাণঘাতী হামলার চেষ্টাও হয়। এই খবর হয়েছিল সমস্ত সংবাদমাধ্যমে যারমধ্যে এই নিউজ পোর্টালটিও ছিল। পোর্টালের দাবি এই খবর করার জন্যই হামলা হয়েছে তাদের সাংবাদিকের ওপর।