ভবানী গিরি : রাত পোহালেই রাসপূর্ণিমা। হিন্দু ও বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বীদের কাছে পবিত্রতম দিন। ঝাড়গ্রাম জেলার ওড়িশা সীমান্ত ঘেঁষা জনপদ বৈষ্ণবাচার্য শ্যামানন্দ গোস্বামীর প্রানপ্রিয় শ্রীপাট গোপীবল্লভপুর। আচার্য্য শ্যামানন্দের অনুগ্রহে একদা ওড়িশাভুক্ত গোপীবল্লভপুর প্লাবিত হয়েছিল চৈতন্যধারায়।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
পরবর্তীকালে এই জনপদ বাংলায় চলে এলেও ওড়িশি রীতির সঙ্গে রয়ে গেছে তার নাড়ির যোগ। আর সে কারনে এখানে এমন অনেক আচার ও সংস্কৃতির দেখা মেলে যা বাংলার অন্য অংশে সচরাচর মেলেনা।রাসপূর্ণিমার আগে এমনই এক আচরিত ব্রত হল যা স্থানীয় নামে পঞ্চকব্রত নামে প্রচলিত।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
রাসপূর্ণিমার আগের পাঁচদিন সুবর্ণরেখা নাদির ঘাটে ঘাটে শুরু হয়েছে সেই ব্রতাচার। বৈষ্ণবীয় ভাবধারার উল্লেখযোগ্য এই পীঠস্থান এখানকার ঠাকুরবাড়ির গুপ্ত বৃন্দাবনের ভাবধারা এখনো মেনে চলে।তাই বাংলায় কিছু জনপ্রিয় না হলেও গোপীবল্লভপুর এখনো তার স্বকীয়তা বজায় রেখেছে। যেমন কার্তিক মাসের একটি উল্লেখযোগ্য স্থানীয় উৎসবই বলা যেতে পারে তা হল পঞ্চক ব্রত।
মোহন্ত মহারাজ |
গোপীবল্লভপুর এর সুবর্ণরেখা তীরবর্তী গ্রামের মহিলারা মূলত রাস পূর্ণিমার আগের পাঁচ দিন অর্থাৎ একাদশী থেকে সকালে নদীতে স্নান করে নদীর ধারে এই বিশেষ ব্রত পালন করে।এই পঞ্চক ব্রত প্রায় এলাকার সমস্ত মহিলা পালন করেন। নদী তীরবর্তী ভট্টগোপালপুর,কুড়িচামঠ, জগন্নাথপুর এই সমস্ত গ্রাম গুলিতে গেলে সকালে দেখা যাবে মহিলারা প্রায় সবাই এই ব্রত করতে ব্যস্ত।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
প্রতিটি গ্রামে একাদশী থেকে পূর্নিমা এই পাঁচ দিন রাতে ভাগবৎ পাঠ হয়। ব্রতের নিয়ম সম্পর্কে পুরোহিত ব্রাহ্মন সত্যরঞ্জন ঘোষাল বলেন, ”পুরো কার্তিক মাস এই পঞ্চক ব্রত করার কথা থাকলেও এখানে পাঁচদিন হয়। মহিলারা ভোরে সূর্যোদয়ের আগে স্নান করে অর্ঘ দিয়ে ব্রত পালন করে। তিনি এও জানান এই ব্রতকে বক পঞ্চমী ব্রত ও বলা হয়।”
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
ঠাকুরবাড়ির আচার্য্য , মোহন্ত মহারাজ কৃষ্ণ কেশবানন্দ দেব গোস্বামী বলেন, ”ঠাকুরবাড়ির রীতি অনুযায়ী কার্তিক একাদশী অবধি আগের পাঁচদিন ঠাকুরবাড়িতে পালিত হয় বিষ্ণু পঞ্চক ব্রত । আর একাদশীর পর থেকে সমাজ সাধারন পালন করে বক পঞ্চক ব্রত যা স্থানীয় ভাবে পঞ্চক ব্রত বলা হয়। সমাজ, সন্তান ও শষ্যের মঙ্গল কামনাই এই ব্রতাচারের উদ্দেশ্য।”